এফএনএস বিদেশ : বিশ্বজুড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৫ সালের বার্ষিক তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস থেকে শুরু করে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মতো ব্যক্তিত্বরা স্থান পেয়েছেন। তবে এবারের সংস্করণে কোনো ভারতীয় নাগরিকের নাম না থাকায় বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। খবর এনডিটিভির। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত টাইম ম্যাগাজিনের এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি দেখা যায়। গত বছর ২০২৪ সালে বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট ও অলিম্পিক পদকজয়ী কুস্তিগির সাক্ষী মালিক এই তালিকায় ছিলেন। টাইম ম্যাগাজিন ‘নেতৃত্বশীল ব্যক্তিত্ব (লিডারস), আইকনস ও টাইটানসসহ বিভিন্ন বিভাগে এই তালিকা প্রকাশ করে। তবে এবারের সংস্করণে ‘লিডারস’ বিভাগে ব্যতিক্রম হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক রেশমা কেওয়ালরামানি নিজের স্থান করে নিয়েছেন। ভার্টেক্স ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেশমা কেওয়ালরামানি ১১ বছর বয়সে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন। পরবর্তীতে তিনি দেশটির একটি বৃহৎ পাবলিক বায়োটেকনোলজি কোম্পানির প্রথম নারী সিইও হিসেবে ইতিহাস গড়েন। টাইম ম্যাগাজিনের জন্য রেশমা কেওয়ালরামানির মুখবন্ধ লিখেছেন জেসন কেলি। তিনি রেশমার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ও ওষুধ অনুমোদন প্রক্রিয়ায় তার দক্ষ নেতৃত্বের ভ‚য়সী প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে, টাইম ম্যাগাজিনে অধ্যাপক ইউনূসকে নিয়ে মুখবন্ধটি লেখেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন। মুখবন্ধে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গতবছর স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রীর পতন হলে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন এক সুপরিচিত নেতা শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে আরও বলা হয়, অনেক বছর আগেই গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে ক্ষমতায়নের পথ দেখিয়েছিলেন ড. ইউনূস। তার এই উদ্যোগের সুফল পেয়েছে লাখো মানুষ, যাদের ৯৭ শতাংশ নারী। (গ্রামীণ ব্যাংকের কারণে) তারা নিজ উদ্যোগে ব্যবসা শুরু করেছে, পরিবারের ভরণপোষণ করেছে, নিজেদের মর্যাদা ফিরে পেয়েছেন। হিলারি ক্লিনটন আরও লেখেন, ‘ইউনূসের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় আরকানসাসে। তখন এই অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ছিলেন বিল ক্লিনটন। আমরা যুক্তরাষ্ট্রেও একই ধরনের (ক্ষুদ্রঋণ) কর্মসূচি চালু করতে তার সহায়তা চেয়েছিলাম। এরপর আমি বিশ্বের অনেক জায়গায় গিয়েছি। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে তার কাজের অসাধারণ প্রভাব নিজ চোখে দেখেছি।’ সাবেক এই মার্কিন নেত্রী আরও বলেন, ‘তার (ড. ইউনূস) কারণে মানুষের জীবন বদলেছে, সমাজে উন্নয়ন এসেছে, মানুষ আশা দেখার সুযোগ পেয়েছে। এখন তিনি আবার মাতৃভ‚মির আহŸানে সাড়া দিয়েছেন। নিপীড়নের ছায়া থেকে বের হয়ে আসার এই সংকটময় সময়ে তিনি দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নেতৃত্বে মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি জবাবদিহি চাইছেন, ন্যায়ভিত্তিক ও মুক্ত সমাজের ভিত গড়ে তুলছেন।’ ১০০ প্রভাবশালীদের এ তালিকায় অন্যান্যদের মধ্যে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাম্প প্রশাসনের সদস্য ইলন মাস্ক, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাম, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা।