এফএনএস: এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চিনি, ডাল, তেল ও পেঁয়াজ বিক্রির কথা থাকলেও জোগান না থাকায় বিক্রি হচ্ছে না পেঁয়াজ। নিম্ন আয়ের ক্রেতারা এ পণ্যগুলোর সঙ্গে আটা, চাল দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে টিসিবি কার্ডের অনিয়ম, ত্র“টি যাচাইয়ে সারাদেশে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল সংলগ্ন কাউন্সিলর কার্যালয়ে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। প্রতি কার্ডধারী ১ কেজি চিনি, ২ কেজি মসুর ডাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করতে পারছেন। নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের মধ্যে ২ কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি করা কথা থাকলেও জোগান না থাকায় তা বিক্রি শুরু হয়নি। প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, মসুর ডাল ৬৫, সয়াবিন তেল ১১০ এবং পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২০ টাকায় কিনতে পারবেন। তবে প্রথম দিনে পেঁয়াজ বাদে ৪০৫ টাকার পণ্য কিনতে পারছেন। সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, কিউআর কোডযুক্ত (কুইক রেসপন্স কোড) কার্ড ব্যবহার করে পণ্য কিনতে পারছেন ক্রেতারা। সারাদেশে আজ (গতকাল সোমবার) শুরু হলো, আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিতরণ কার্যক্রম সমাপ্ত হবে। প্রতি মাসেই ১ কোটি পরিবারকে এ সুবিধা দেওয়া হবে। টিসিবির কার্ড দেখিয়ে পরিবারগুলো খাদ্য অধিদপ্তরের ওএমএসের (ওপেন মার্কেট সেল) চাল সংগ্রহ করছেন। মাসের মাঝখানে পণ্যের পরিমাণ বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্য সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারি ক্রয় নীতিমালা অর্থাৎ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর) মেনে সংগ্রহ করছি। একটি পরিবারকে দুই লিটার তেল দিচ্ছি। কার্ড বিতরণে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় অংশ ঢাকার বাইরে আছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়ার্ডের যে মেম্বার (ইউপি সদস্য) আছেন তিনি একটা তালিকা করেন। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটা যাচাই বাছাই কমিটি আছে। সেখানে একজন সরকারি কর্মকর্তা দেখছেন। তারপর সেই তালিকা আসছে উপজেলায়, সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান যাচাই বাছাই করেন। কোথাও কোনো ভুল হলে আমরা রিপ্লেস করতে পারি। এখনো কোথাও এ অভিযোগ নেই যে ধনিরা এ কার্ড পাচ্ছে। এ রকম দেখবেন না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে উপসচিব পর্যায়ের ৪০ জন কর্মকর্তাকে ৬৪ জেলায় পাঠিয়েছি। তারা কিছু স্যাম্পল কালেকশন করবে। সেটার মাধ্যমে যাচাইয়ের একটা ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। যে বাছাইগুলো হয়েছে কত পার্সেন্ট ত্র“টি হয়েছে, আদৌ আছে কিনা সেটা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। কোনো অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। পণ্য কিনতে আসা গৃহিণী ফারজানা বলেন, সকালে ৮ টায় লাইনে দাঁড়িয়ে তিন ঘণ্টা পর পণ্য পেলাম। বাঙালির প্রধান খাবার ভাত, রুটি। চাল, আটা টিসিবির লাইনে দিলে ভালো হতো। চাকরিজীবী আবদুল মালেক বলেন, মাসের প্রথমে যদি পণ্যগুলো দিতো তাহলে খুব ভালো হতো। চালের জন্য আবার আরেক জায়গায় লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এক লাইনে দিলে মানুষের ভোগান্তি কমতো।