দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলা থেমে নেই একাধিক পুরো গাজা উপত্যকায় চলছে নিরীহ ফিলিনিস্তীনিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ অন্যদিকে চলছে গণগ্রেফতার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে পুরো গাজা উপত্যকা বর্তমান সময়ে মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছে। দখলদার ইসরাইল বাহিনী একদিকে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায়যুদ্ধ বিরতির আলোচনায় থাকলেও বিরামহীন হামলা আর হত্যাকান্ড কোন অবস্থাতেই বন্ধ করছে না। গতকালও উত্তর, মধ্য ও পশ্চিম গাজায় দখলদার বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক ভাবে বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। গত কয়েকদিন পূবে হামাস যোদ্ধাদের হামলায় তিন ইসরাইলের সেনার নিহত হওয়ার পর থেকে দখলদার বাহিনীর সদস্যরা পশ্চিমগাজায়য় ব্যাপক ভিত্তিক বিমান হামলা পরিচালনা শুরু করে ইতিহাসের চরম অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে বিরাজ করছে খান ইউনিসের সর্বত্র। গত কয়েকদিন যাবৎ খান ইউনিসের একাধিক মসজিদে হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। ধ্বংস হওয়া মসজিদ গুলোর ধ্বংস স্তুপের মধ্যেই অসহায় নিরীহ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিরা নামাজ আদায় করছে। যখন ইউনিসের অত্যাধুনিক হাসপাতাল হিসেবে খ্যাত আল আকসা হাসপাতালে পক্ষকাল ব্যাপী দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি হামাস সন্দেহে সাধারন রোগীদেরকে গ্রেফতার করছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে হাসপাতালটিতে অতি ক্ষুদ্র পরিসরে চিকিৎসা সেবা ব্যবহৃত হচ্ছে। সপ্তাহব্যাপী আল আকসা হাসপাতাল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় যে কারনে কোন অবস্থাতেই জরুরী চিকিৎসা সেবা দিতে পারচে না। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে দখলদার বাহিনী গাজার বিশটির বেশী হাসপাতাল সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস করেছে। কোন কোন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার বাইরে অন্য কোন চিকিৎসা সেবা চলছে না। প্রথাগত এবং ঐতিহ্যগত ভাবে গাজা অনেক আগ থেকেই চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেকঅনেক বেশী উচ্চতায় অথচ বর্তমান সময়ে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর নির্মমতায় চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। গাজার তুরস্ক ফিলিস্তিন মৈত্রী হাসপাতালটি বর্তমান সময়ে কেবল মাত্র ইতিহাসের নিরব স্বাক্ষী হিসেবে বির্বন স্মৃতি বহন করে বলেছে। গতকাল ইসরাইলি বাহিনী মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালিয়েছে ফিলিস্তিনীদের উপর। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশ চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী তাদের ট্রাঙ্কের চাকায় একাধিক ফিলিস্তিনিকে পিসে হত্যা করেছে। খান ইউনিসের তৈয়ব টাওয়ার এলাকায় ফিলিস্তিনিরা অবস্থান করছিলো এমন সময়ে ইসরাইলির বর্বর বাহিনীর সদস্যরা উক্ত তৈয়বটাওয়ার এলাকাতে অবস্থান করা ফিলিস্তিনিদের উপর ট্রাংঙ্ক চালিয়ে দিলে অন্তত তিন জনের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্য একটি খবরে বলা হয়েছে ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা তৈয়ব টাওয়ার এলাকায় গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে গ্রেফতারকৃতদের মধ্য থেকে একজনকে তাদের ট্রাংঙ্ক এর তলয় পিষে হত্যা করে। এদিকে গাজার শিশুরা বর্তমান সময়গুলোতে চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ হতে বলা হয়েছে গাজার শিশুদেরকে এই মুহুর্তে সুচিকিৎসার আওতায় আনা না হলে আগামী দিন গুলোতে গাজার শিশুদের অস্তিত্ব গুমকির মুখে পড়বে এই সাথে গাজার আগামী প্রজন্মকে নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে নেবে। ফিলিস্তিনি সরকারের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গতকাল আন্তর্জাতিক পুনরায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছে ফিলিস্তিনিরা চরম অসহায়ত্বের কবলে তাদের কে মহান আল্লাহ হেফাজত করবেন কিন্তুবিশ্ব নেতৃতদ্ব কোন অবস্থাতেই দখলদার ইসরাইলি বাহিনীকে প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। এদিকে উত্তর গাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুদের একটি বড় অংশ অনাহারে মারা যাচ্ছে এমন তথ্য দিয়ে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে প্রায় পাঁচমাসে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ত্রিশ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনীর মুল লক্ষবস্তু আমাদের নারী ও শিশুরা অন্তত তের হাজার নারী ও শিশুকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইলিবাহিনী। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের পরিবেশিত খবরে বলা হয়েছে গাজার ধ্বংস স্তুপের মাঝে পড়ে আছে ফিলিস্তিনিদের লাশ। প্রায় প্রতিটি সড়কে লাশ পঁচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পশ্চিমামিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে গম রবিবার কায়রোতে অনুষ্ঠিত হামাস ইসরাইল যুদ্ধবিরতির বিষয়টি কোন ধরনের সিদ্ধান্ত ব্যতিত শেষ হয়েছে। মধ্যস্থ্যতাকারী মিশরের পক্ষ হতে বলা হয়েছে হামাসের প্রস্তাবে ইসরাইলি রাজিনা হওয়ায় বৈঠকটি সিদ্ধান্ত ব্যতিত শেষ হয়েছে। অবশ্য হামাসের পক্ষ হতেবলা হয়েছে কোন অবস্থাতেই ইসরাইলি যুদ্ধ বিরতি চাইছে না। অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দঢ়ভাবে জানিয়েছে আগামী রমজান শুরুর আগেই যুদ্ধ বিরতি কার্যকর করা হবে। এদিকে গতকাল দখলদার ইসরাইলি বাহিনী খান ইউনিসের আল আকসা হাসপাতালের পাশাপাশি উত্তরগাজার আল আওদাসকামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে চিকিৎসকরা প্রাণ ভয়ে হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছে। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কামে ব্রিগেড গতকাল জানিয়েছে ইসরাইল নয় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এবং ফিলিস্তিনিদের কে হত্যা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ইয়েমেন এর জলসীমায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বিদেশী জাহাজ গুলোকে শর্ত আরোপ করেছে হুতি যোদ্ধারা। গাজার রামাল্লাতেও গতকাল দখলদার ইসরাইলি বাহিনী বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামলা অব্যাহত আছে।