বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্পের হুমকিতে কানাডায় দেশপ্রেমের ঢেউ, জয় পেল লিবারেলরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

এফএনএস আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডার জাতীয় রাজনীতিতে এক নাটকীয় মোড় নিয়েছে এবারের সাধারণ নির্বাচন। টানা চতুর্থবারের মতো দেশটির ক্ষমতায় ফিরেছে লিবারেল পার্টি। তবে তাদের এই জয় শুধু একটি দলের নয়, বরং এটি কানাডার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক ধরনের প্রতিক্রিয়াও বটেÑবিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও শুল্ক হুমকির প্রেক্ষাপটে।
সর্বশেষ পাওয়া ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ৩৪৩ আসনের পার্লামেন্টে লিবারেল পার্টি পেয়েছে ১৬৭টি আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে প্রয়োজন ১৭২টি আসন, অর্থাৎ মাত্র ৫টি আসন কম। অন্যদিকে, প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১৪৫টি আসন। এই পরিস্থিতিতে সরকার গঠনে লিবারেলদের হয়তো ছোট দলগুলোর সমর্থনের প্রয়োজন হতে পারে। কানাডার ইতিহাস বলছে, এমন সংখ্যালঘু সরকারগুলো সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় না, যার স্থায়িত্ব গড়ে দুই থেকে আড়াই বছর।
সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান এবং রাজনীতিতে নবাগত মার্ক কার্নি এই নির্বাচনে লিবারেল পার্টির হাল ধরেন। গত মাসেই জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হন। এর আগে তিনি কানাডা ও যুক্তরাজ্যÑউভয় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থনৈতিক প্রজ্ঞা ও শান্ত নেতৃত্বের কারণে তিনি দ্রæতই দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেন।
নির্বাচনের আগ মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কানাডার তৈরি গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য করার মতো স্পর্শকাতর মন্তব্য করেন। এতে কানাডার রাজনীতিতে একটি দেশাত্মবোধক আবহ তৈরি হয়, যার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন কার্নি। নিজের প্রচারে তিনি ওয়াশিংটনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে কানাডার অর্থনৈতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার অঙ্গীকার করেন।
ভোটের আগের দিন ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভ্যাঙ্কুভারে জনসমাগমে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় ১১ জন নিহত হন। এই ঘটনায় উভয় প্রধান প্রার্থী সাময়িকভাবে তাদের প্রচার স্থগিত করেন। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করলেও শেষ পর্যন্ত ভোটদানে নিরুৎসাহ দেখা যায়নি। বরং এই ঘটনার পর নিরাপত্তা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব আরও বেশি করে উঠে আসে।
বিভিন্ন জরিপে লিবারেলদের সামান্য এগিয়ে থাকা দেখা গেলেও বাস্তবে তাদের এই পুনর্র্নিবাচন অনেক বড় বার্তা দিয়েছে। জনগণ ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি, অঙ্গরাজ্য বানানোর বক্তব্য এবং দেশের অর্থনীতির ওপর বাইরের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
নির্বাচনের পর এখনও কার্নি বা কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভ্রে’র পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এটা পরিষ্কার, এই ফলাফল শুধুমাত্র একটি দলের জয় নয়Ñএটি কানাডিয়ানদের স্বাধীনতা ও আত্মপরিচয়ের প্রতি অঙ্গীকারের জোরালো প্রকাশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com