এফএনএস: ফরিদপুরে ট্রেন ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফরিদপুর সদরের গেরদা এলাকায় রাজবাড়ী—ভাঙ্গা রেল সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে তিনজন ঘটনাস্থলে মারা যান। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বাকি দুই জন প্রাণ হারান। ওই মাইক্রোবাসে চালকসহ মোট ৯ জন ছিলেন বলে জানা গেছে। গেরদা থেকে একটি সড়ক রেল পথ অতিক্রম করে মুন্সিবাজার এলাকায় মিলেছে। ওই সড়কে একটি রেল ক্রসিং আছে। কিন্তু এটি অনুমোদিত কোনও রেল ক্রসিং নয় বলে রেল বিভাগের কোনও তত্ত্বাবধায়ন নেই। এলাকাবাসী জানান, মধুমতী এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি খুলনা থেকে ফরিদপুর হয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। অপরদিকে ওই মাইক্রোবাসটি গেরদা থেকে মুন্সিবাজারের দিক আসছিল। এ সময় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, দুপুর ১২টা ২৮ মিনিটে খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করেন। ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাইক্রোবাসটি নিচের খাদে পড়ে গিয়েছিল। সেটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ভেতরে কিংবা এর নিচে চাপা পড়া অবস্থায় কোনও লাশ পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, ঘটনাস্থলে এসে তারা জানতে পেরেছেন আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছ। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দুই জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তার দুই জনই নারী। বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাইক্রোবাসের চালকও রয়েছেন। নিহতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জের ভূঁইয়াপাড়ার সায়েম (৪০), সাদিয়া জহির (৪৫), রানা শরিফ ভূঁইয়া (৬৭) ও রাইয়ান (১১)। আরেকজনের নাম—পরিচয় পাওয়া যায়নি। ফরিদপুর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার তাকদির হোসেন বলেন, গেরদায় রেল বিভাগের অনুমোদিত কোনও ক্রসিং নেই। তবে দুর্ঘটনার খবর তিনি শুনেছেন এবং এ বিষয়ে খেঁাজ নিচ্ছেন। এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, নিহত সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক নিহতের জন্য লাশ বাড়িতে নেওয়া এবং দাফন কাফনের জন্য আর্থিক সহায়তা করবো। এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই রেল ক্রসিংয়ে কোনও লাইন ম্যান না থাকায় মাঝেমধ্যে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এমনকি ইতিপূর্বে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আমরা দ্রুত রেল বিভাগের কাছে এই ক্রসিংয়ের জন্য লাইনম্যান চাই।