এফএনএস স্পোর্টস: পাক্কা ৯ বছর দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ডটি নিজের করে রেখেছিলেন ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইল। ক্যানবেরাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৪ সালে ১৩৮ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করে ভারতীয় ব্যাটার বীরেন্দর শেবাগকে হটিয়েই রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছিলেন। এর পরে আরও অনেক ডাবল সেঞ্চুরি হলেও কেউ ক্রিস গেইলের ধারে কাছে যেতে পারেনি। শনিবার সেই গেলকেই পেছনে ফেললেন ভারতের ইশান কিশান। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে ১২ বল আগেই গেইলকে হটিয়ে সিংহাসনে বসেছেন তিনি। রোহিত শর্মার ইনজুরিতে শেষ ওয়ানডেতে খেলতে নেমেছেন ইশান। সেই সুযোগটি কি দারুণভাবেই না কাজে লাগিয়েছেন। ১২৬ বলে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে জায়গা করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। ইশান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দিলিতে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন। প্রত্যাশায় ছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে সুযোগ পাবেন। কিন্তু মিরপুরে প্রথম দুটি ম্যাচে সুযোগ-ই পাননি। অবশেষে চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করলেন। মোস্তাফিজের লেন্থ বলে সিঙ্গেল নিয়েই ড্রেসিংরুমের দিকে ছুটলেন ইশান। মুষ্টিবদ্ধ হাতে বাতাসে ঘুষি মেরে নিজের কীর্তিটা উদযাপন করেছেন। তার এই কীর্তির দিনে পাশে ছিলেন আরেক ব্যাটিং জিনিয়াস বিরাট কোহলিও। ইশানের এমন অর্জনে কোহলিরও যেন আনন্দের সীমা ছিল না। গতকালের এই ম্যাচের আগে ৯টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল ইশানের। আগের ৮ ইনিংসে তিন হাফসেঞ্চুরিতে রান ২৬৭, সর্বোচ্চ ৯৩। এই ইশানই সাগরিকায় ঝড় তুলেছেন। আগের ৯ ম্যাচে সেঞ্চুরিবিহীন ইশান প্রথম সেঞ্চুরি করেই রেকর্ডবুকে জায়গা করেছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়ার ইতিহাস নেই আর। ইশান এখানেই থেমে থাকেননি, দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরিতে ক্রিস গেইলের সঙ্গে স্বদেশী শেবাগ, শচীন, রোহিত শর্মাদেরও পেছনে ফেলেছেন। ১২৬ বলে ২৪ চার ও ৯ ছক্কায় ইশান ক্রিস গেইলের সিংহাসনও দখল করেছেন। চট্টগ্রামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে ইশান ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের বোলিং। বোলারদের নখদন্তহীন বোলিংয়ের সুযোগও নিয়েছেন মাত্র দশম ম্যাচ খেলা এই ক্রিকেটার। পিঠের ইনজুরি থেকে ফিরে মাঠে নামা তাসকিনকে নিয়ে ছেলে খেলায় মেতে উঠেন। মোস্তাফিজ, সাকিব, মিরাজও ইশানের ব্যাটের ছোবল থেকে বাঁচতে পারেননি। অবশেষে ১৩১ বলে ২১০ রান করে ৩৯তম ওভারে তাসকিনের বলে থেমেছেন। তার আগে অবশ্য দ্বিতীয় উইকেট বাংলাদেশের বিপক্ষে রেকর্ড জুটি গড়েছেন বিরাট ও ইশান। ১৯০ বলে ২৯০ রানের এই জুটি বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোনো দলের সর্বোচ্চ। ওয়ানডে ইতিহাসে সবার আগে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৪৭ বলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন। এক বছর পর ১৪০ বলে শচীনকে টপকে এই রেকর্ডের মালিক হন বীরেন্দর শেবাগও। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বেঙ্গালুরুতে রোহিত শর্মা ১৫৬ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। ২০১৪ সালে ক্রিস গেইল ভাঙেন শেবাগের রেকর্ড। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৩৮ বলে ডাবল সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন। একই বছরের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যান রোহিত শর্মাও। লঙ্কানদের বিপক্ষে ১৫১ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। তার পর ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়েলিংটনে কিউই ব্যাটার মার্টিন গাপটিল ১৫৩ বলে নিউজিল্যান্ডের হয়ে একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছেন। ২০১৭ সালে মোহালিতে ১৫১ বলে নিজের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি পান রোহিত, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। ২০১৮ সালে সর্বশেষ ডাবল সেঞ্চুরি পান পাকিস্তানের ফখর জামান। বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৪৮ বলে এই কীর্তি গড়েন তিনি।