দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ঃ বাংলাদেশ অতি পরিচিত নাম নারিকেল। দেশের আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় নারিকেলের গুরুত্ব দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। ডাবের পরবর্তি ধাপ নারিকেল। দেশে বর্তমান সময়ে নারিকেল এবং উভয়েই ব্যাপক চাহিদা। দেশের উপকুলীয় এলাকা নারিকেল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী, আমাদের দেশের পটুয়াখালী, বরগুনা, খোলা, বরিশাল, সিলেট এবং চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যাপক ভাবে নারিকেল চাষ হয়ে আসছে। ব্যাপক সূর্যতাপ, উষ্ণতা লবনাক্ততা এবং আদ্যতার কারন হেতু নারিকেল জন্মানোর পথকে উন্মুক্ত করেছে। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে সাক্ষীরার উপকুলীয় এলাকা লবনাক্ত আর উষ্ণতাকে সঙ্গী করে নারিকেল চাষের ব্যাপ্তি ঘটেছে। সময়ের ব্যবধানে বাস্তবতার নিরিখে নারিকেল আমাদের দেশের কার্যকরী ফসল হিসেবে নিজেকে নাম লিখিয়েছে। সমুদ্রউপকূল নারিকেল চাষের বিশেষ উপযোগী। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিনে বঙ্গোপসাগর আর বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকুলে গাবুরা। বাংলাদেশ দ্বীপ ইউনিয়ন খ্যাত গাবুরা রক্ষায় সরকার মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বারবার প্রকৃতির হিংস্র ছোবলে ক্ষত বিক্ষত হয়ে চলেছে দ্বীপ জেলা গাবুরা সহ সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় এলাকা। উপকুলীয় বাসি নিজেদেরকে প্রকৃতির নিষ্ঠুরতা হতে রক্ষা পেতে ভেড়ি বাঁধ (মেঘা প্রকল্প) কে আর্শীবাদ হিসেবে দেখছে। সময় এসেছে মেঘা প্রকল্পকে টেকসই, সৌন্দর্যবৃদ্ধি করন এবং সেই সাথে ভেড়ি বাঁধ এ নারিকেল গাছ রোপন, লবনাক্ত সহনীয় এবং লবনাক্ততাই উপাদান নারিকেল চাষের বিধায় দীর্ঘ ভেড়ি বাঁধের উপর দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে নারিকেল বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আসার সম্ভাবনা বিদ্যমান। নারিকেল গাছ কেবল অর্থনীতির গুরুত্ব বহন করবে তা নয় হাজার কোটি টাকা ব্যয় নির্মিত ভেড়িবাঁধ সুরক্ষিত থাকবে। এবং উপকুলীয় এলাকা যেমন সৌন্দর্যের ছায়াতলে থাকবে অনুরুপ সুরক্ষিত থাকবে। বিভিন্ন প্রজাতির নারিকেল গাছ রোপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উপার্জন ত্বরান্বীত হতে পারে। নারিকেলের বর্তমান সময়ে অর্থনৈুিতক গুরুত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। একে ঔষধী ফল ও বলা হয়। ডাবের গুনগানের কথা লিখে শেষ করা যায় না। রোগীর পথ্য হিসেবে ডাবের ব্যবহার বহুপূর্ব থেকে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিটি ডাব একশত টাকার উর্ধে বিক্রি হচ্ছে। মহামারী করোনা এবং ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ডাবের পানি অতি উপকারী। জ্বর, আমাশা, কাশি সহ বিভিন্ন ধরনের পেটের পিড়া উপশমে ডাবের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। নারিকেল অত্যন্ত সুস্বাধু এই নারিকেল দিয়ে পিঠা পায়েশ, মোরব্বা সহ হরেক ধরনের মিস্টান্ন খাবার তৈরীর জুড়ি নেই। এক কথায় নারিকেলের গুনাগুন এবং প্রয়োজনীয়তার শেষ নেই। নারিকেল তেল অতি পরিচিত এবং উপকারী। তেলের ব্যহারের শেষ নেই। নারিকেল তেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দরনের ঔষধ বিশেষ করে কবিরাজী চিকিৎসা হয়। নারিকেলের খইল মাছ চাষের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনে সহায়ক। নারিকেলের পাতা ও কম প্রয়োজনীয় নয়। নারিকেলের পাতা দিয়ে বিছানা, চেটাই, দস্তরখানা তৈরীর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শিল্প কর্ম ও তৈরী হয়। বাসা বাড়ীতে ব্যবহৃত ঝাড়ু নারিকেল পাতারই অংশ বিশেষ দিয়ে তৈরী হয়। ঘর বাড়ী বানানোর ক্ষেত্রে নারিকেল গাছের গুড়ির বিকল্প নেই। সর্বাপেক্ষা নারিকেল গাছ পরিবেশ বান্ধব এবং জনজীবন স্বস্তির প্রতিক। উপকুলীয় মেঘা প্রকল্পের ভেঁড়িবাঘের পাশাপাশি দেশের দক্ষিনাঞ্চলের সমুদয় ভেড়িবাঁধে নারিকেল গাছ রোপন করলে সামগ্রীক উপকুলীয় জনপদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্র বির্নিমান হবে এমন মনে করেন সচেতন মহল। সাতক্ষীরার কালিন্দী, ইছামতি, সহ সকল নদী সংলগ্ন ভেড়ি বাঁধ ও উপকুলীয় এলাকা নারিকেল চাষের উর্বর ক্ষেত্র হতে পারে। এই চাষে খরচ কম এবং পরিচর্যাতেও সময় ক্ষেপন হয় না। মুখের খবর সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকাতে সাম্প্রতিক বছর গুলোতে বানিজ্যিক ভিত্তিতে নারিকেল চাষ হচ্ছে, চাষীরাি লাভবান হচ্ছে। পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ নারিকেল চাষের প্রতি চাষীরা অধিকতর আগ্রহী হচ্ছে দিনে দিনে।