মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেবহাটায় তারুণ্যের উৎসব উদ্বোধন সাতক্ষীরায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুনামেন্টের আলো ছড়ানো উদ্বোধন \ প্রথম খেলায় হাসলো দেবহাটা বালিকা দল দেবহাটায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী নিশি গ্রেফতার ডুমুরিয়ায় তারুণ্য উৎসবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা অনুষ্ঠিত ডুমুরিয়ায় তারুণ্যের উৎসব’২৫ উদযাপিত সাতক্ষীরায় পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট উদ্বোধন লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে মৃত্যু ২৪ সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক মিজানুর আশাশুনি পানিতে ডুবে বৃদ্ধের মৃত্যু

ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি-ছিনতাই-প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩

এফএনএস : গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, ছিনতাই, প্রতারণার ঘটনা বেড়েই চলেছে। এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই ডিবি পরিচয়ে অপরাধ রোধে পরিবর্তন আনা হয়েছে পোশকে। সেই সঙ্গে সঠিক পরিচয় নিশ্চিতে জ্যাকেটে রয়েছে কিউআর কোড। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। প্রতারকরা পুরোনো নকল জ্যাকেট ব্যবহার করে ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতারণা। জানা যায়, গত বছরের ১ আগস্ট ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের জ্যাকেটে যুক্ত হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ‘কুইক রেসপন্স কোড’ বা ‘কিউআর কোড’। এ জ্যাকেটের কিউআর কোডে কর্মকর্তাদের তথ্য আগে থেকেই জমা থাকে ডিবির নিজস্ব সার্ভারে। মোবাইল অ্যাপ দিয়ে সদস্যের কিউআর কোড স্ক্যান করলেই তাদের পরিচয় দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো ভুয়া ডিবির পোশাকের কোড স্ক্যান করা হয় তাহলে ‘ইনভ্যালিড কিউআর কোড’ নামে একটি বার্তা দেখা যাবে। নতুন এই জ্যাকেটেও মিলছে না সমাধান। প্রতারকরা পুরোনো জ্যাকেট পরেই চালাচ্ছেন প্রতারণা। কিউআর কোড প্রযুক্তিসম্পন্ন জ্যাকেট দেওয়ার পরেও বেশকিছু অভিযানে ভুয়া ডিবি গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, তাদের পুরোনো জ্যাকেট বাতিল করে সাত মাস আগে কিউআর কোড সম্বলিত নতুন প্রযুক্তির জ্যাকেট দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতারকরা আগের জ্যাকেটেই তাদের প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। ডিবি বলে পরিচয় দিলেই ডিবির লোক ভেবে কোনো গাড়িতে কিংবা নির্জন স্থানে যাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, আমাদের ডিবির নাম ব্যবহার করে অনেককেই তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তারা ডিবির কথা বলে তুলে নিয়ে যায়। কেউ ডিবি পুলিশ বললেই গাড়িতে উঠে যাবেন না। আপনারা এ ক্ষেত্রে ভুয়া ডিবি পুলিশ কি না তা যাচাই করবেন। প্রয়োজনে ৯৯৯ তে কল দিয়ে নিশ্চিত হবেন। হারুন অর রশীদ বলেন, আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আসতে চান না। আপনারা আমাদের কাছে আসলে আমরা তার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। যারা অভিযোগ করেছেন, আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যাদের গ্রেপ্তার করেছি আমরা তাদের রিমান্ডে আনছি, যাতে এদের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত তা শনাক্ত করা যায়। পোশাক পরিবর্তনের পরও প্রতারণা থামছে না -এ বিষয়ে তিনি বলেন, ডিবির জ্যাকেটে যুক্ত হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কিউআর কোডের তথ্য আগে থেকেই জমা থাকে ডিবির নিজস্ব সার্ভারে। মোবাইল অ্যাপ দিয়ে সদস্যের কিউআর কোড স্ক্যান করলেই তাদের পরিচয় দেখা যায়। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু চক্র ডিবির পুরোনো জ্যাকেট পরেই প্রতারণা কিংবা অপহরণের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে, যা আমাদের দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, কেউ যদি ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই-অপহরণ করতে যায় তাহলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে আমাদের খবর দিলে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আসামিদের গ্রেপ্তার ও ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করবে। তিনি বলেন, ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনা এখন একটি আতঙ্ক। এভাবে কাউকে অপহরণ করা হয়। আবার কারও কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয় সব। কখনো কখনো ভুক্তভোগীদের খোঁজ মেলে, কখনো মেলে না। এসব ভুয়া ডিবি পুলিশের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ডিবি পুলিশ সব সময় বা সব জায়গায় চেকপোস্ট বসায় না উল্লেখ করে ডিবি প্রধান বলেন, পুলিশ/ডিবি পরিচয়ে কেউ সবকিছু নিতে চাইলে যাচাই করুন, আশপাশে পোশাকে অন ডিউটিতে থাকা অন্য পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হোন। ভুয়া ডিবি পুলিশের অপতৎপরতা রোধে সবারই সচেতন হওয়া দরকার। গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কিংবা যে কেউ যদি মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেন তাহলে পুলিশকে জানান, পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে মানিস্কট সেবা নিন। মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনে গলিপথ এড়িয়ে চলুন, যেখানে সিসি ক্যামেরা আছে সেখানে বসে লেনদেন করুন। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, বুথ বা ব্যাংকের সামনে, যেখানে মোটা অঙ্কের লেনদেন হয় সেখানে প্রতারকদের সোর্স থাকে। আবার গার্মেন্টসে বেতন দেওয়ার সময় গাড়িতে করে টাকা আনা হয়। সেখানেও অপরাধীরা সোর্সের মাধ্যমে নজরদারি করে ডাকাতির চেষ্টা করে। দীর্ঘদিন ধরে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। এসব ঘটনায় কখনো আসামি ধরা পড়লেও কিছুকিছু ক্ষেত্রে ধরা পড়ে না। কেউ কেউ আবার এসব অপরাধে কারাগার থেকে বেরিয়ে ফের একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, রাজধানীসহ সারাদেশে অনেকগুলো চক্র ডিবি পুলিশ সেজে প্রতারণা করছে। অনেক সময় তারা গাড়িতে ডিবি পুলিশ লিখে জোরপূর্বক ও ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়িতে তুলে টার্গেট ব্যক্তিদের কাছ থেকে লুটে নিচ্ছে সবকিছু। এদের মধ্যে কয়েকজন বিভিন্ন অপরাধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্য। ডিবির জ্যাকেট গায়ে দিয়ে কোমরে অস্ত্র আর হাতে ওয়াকিটকি- হ্যান্ডকাফ নিয়ে থাকা ব্যক্তিদের প্রথমে দেখে যে কেউ মনে করতে পারেন গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও সন্দেহ হবে না। ছদ্মবেশে নির্জন সড়কে ভুয়া চেকপোস্ট বসিয়ে হচ্ছে ছিনতাই ও ডাকাতি। কালো গøাসের মাইক্রোবাস ব্যবহার করেও ডিবি পরিচয়ে চলছে অপহরণ। বিভিন্ন ছদ্মবেশে, বিভিন্ন কৌশলে একের পর এক অপরাধ করে চলেছে কিছু চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী পদক্ষেপের পরও থেমে নেই তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com