বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
আশাশুনি সদরে ওয়ার্ড জামায়াতের কমিটি গঠন আশাশুনি রাজস্ব সম্মেলন, জলমহল ও নিলাম কমিটির সভা কয়রায় খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবুর সুস্থতা কামনায় দোয়া বটিয়াঘাটায় স্বেচ্ছাসেবক দলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বুধহাটা বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি সাতক্ষীরা আলিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অবসর জনিত বিদায় সংবর্ধনা কেশবপুরের ধর্মপুর আলিম মাদ্রাসার অভিভাবক সদস্য নির্বাচন সম্পন্ন কেশবপুর বুড়িহাটী সরলা স্মৃতি গ্রন্থাগার ও বৈদ্যনাথ রায় স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার নগদ অর্থ সনদ বই বিতরণ অনুষ্ঠান ব্রাইট ষ্টার প্রি— ক্যাডেট স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণ

ডুমুরিয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে কচু চাষে নিউটনের সাফল্য

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি \ খুলনার দৌলতপুর বেসরকারি পাটকলে কাজ করেছেন প্রায় এক যুগ। একপর্যায়ে পাটের ধুলায় তিনি শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতায় পড়েন। পরে ওই কাজ ছেড়ে দেন। কিছু জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন ধান চাষ। লাভজনক না হওয়ায় জমির একটি অংশে স্থানীয় জাতের পানি কচুর চারা রোপণ করেন। এরপর থেকে আর তাঁকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন তাঁর প্রতিবছর আয় লাখ টাকা। পানি কচুর চাষ করে ভাগ্য বদলে যাওয়া এই কৃষকের নাম নিউটন মণ্ডল। তাঁর বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের ঘোনা মাদারডাঙ্গা গ্রামে। খুলনার দৌলতপুর—শাহপুর সড়কের ঘোনা মাদারডাঙা গ্রাম ধরে সামনের দিকে এগোতে থাকলে সড়কের পাশে চোখে পড়ে পানি কচুর খেত। এটাই নিউটনের কচুক্ষেত। নিউটন মণ্ডল বলেন, ২০০৮ সাল থেকে তিনি পানি কচু চাষ করছেন। গত বছর ২৫ শতক জমিতে কচু চাষ করে দেড় লাখ টাকার ওপর লাভ করেছেন। এ বছর লাখ টাকার ওপর কচুর লতি, ফুল ও কচু বিক্রি করেছেন। এখনো খেত থেকে ৭০—৭৫ হাজার টাকা আসবে। আবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ঘেরের পাড় থেকে দেশি জাতের কিছু পানি কচুর চারা সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ নিজস্ব পদ্ধতিতে চারা রোপণ করা হয়। মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারির মধ্যে গাছ লাগানো শেষ হয়ে যায়। সারিবদ্ধভাবে তিন ফুট দূরত্বে কচুর চারা রোপণ করা হয়। এক ফুট গভীর করে কোদাল দিয়ে চাষ দেন তিনি। চারা লাগানোর পর জৈব ও রাসায়নিক সার দেন সুষমভাবে। রোপণের ৪৫ দিনের মাথায় লতি তোলা যায়। কচুগুলো ১০ ফুটের মতো লম্বা হয়। একেকটির ওজন হয় ২০—৩২ কেজি। নিউটনের স্ত্রী স্মৃতিলতা মণ্ডল বলেন, ‘কচু চাষ করার পর থেকে আমার পরিবারের সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। টাকা জমিয়ে এবার গরুর খামার করেছি। এ বছর খামার আরও বড় করব।’ প্রতিদিন নিজস্ব ভ্যানে করে খুলনা শহরে নিয়ে কচু বিক্রি করেন নিউটন। এ জন্য মাসিক বেতনের একজন কর্মীও রয়েছে তাঁর। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেও শুরু করেছেন বিক্রয় কার্যক্রম। ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক ক্রেতা তাঁর কাছে চাহিদার কথা জানান। তাঁরা খেত থেকে কচু কিনে নিয়ে যান। এ বছর প্রতি কেজি লতি ২২—৩৮ টাকা, প্রতিটি কচু আকারভেদে ৪০—১০০ টাকা এবং প্রতিটি ফুল ১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আরও মাসখানেক কচু বিক্রি হবে। নিউটন বলেন, গত বছর এক লাখ টাকার ওপরে কচুর চারা বিক্রি করেছেন। কৃষি বিভাগের সহায়তায় চারা বিক্রি হয়েছে বরগুনার বামনা, রূপসা, যশোর ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায়। প্রতিটি চারার দাম তিন—চার টাকা। নিউটনের সাফল্য দেখে এলাকার কৃষকেরাও কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। রামকৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক ব্রজনাথ বিশ্বাস বলেন, জমিতে ধান চাষ তেমন লাভজনক নয়। নিউটনের সহযোগিতা এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শে দুই বছর ধরে জমিতে কচু চাষ করছি। গত বছর এক বিঘা জমিতে শুধু লাখ টাকার লতিই বিক্রি করেছিলাম। এ বছর আরও লাভ হবে। ডুমুরিয়া ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে নিউটন মণ্ডলের দেখাদেখি এলাকার অনেক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে কচু চাষ করছেন। তাঁদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কচু চাষে এখানকার অনেকের ভাগ্য খুলেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com