ডুমুরিয়া প্রতিনিধি \ দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতার কারণে বৃহত্তম বিল ডাকাতিয়ায় বোরো ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিল অভ্যন্তরে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর মৌসুমি আবাদযোগ্য জমির ৭০ শতাংশ ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি কৃষকদের। ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে হতাশায় রয়েছেন এলাকার হাজার হাজার কৃষিজীবী সাধারণ মানুষ। দক্ষিণ জনপদের ডুমুরিয়া ও ফুলতলা দুই উপজেলার বৃহত্তম বিল ডাকাতিয়া। রংপুর, রঘুনাথপুর, ধামালিয়া ও জামিরাসহ ৪টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামের জমির মালিক এবং বর্গাচাষীরা এ বিলে বোরো ধান চাষাবাদ করে। স্থানীয় সূত্র এবং সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, এলাকার পানি শলুয়া নদী হয়ে শোলমারি স্লুইস গেইট দিয়ে বের হয়ে কাজিবাছা নদীতে পড়ে। কিন্তু নদীতে পলি জমে ভরাট হয়ে জোয়ার ভাটা বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে অতি বৃষ্টির পানি নিস্কাশনে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে পানিতে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকার বিল—খাল, বসত বাড়িঘর, গ্রাম্য রাস্তাঘাটা, স্কুল—কলেজ, খেলার মাঠ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিলের ভিতর আবাদী জমিতে বর্তমান ৪—৭ ফুট জলাবদ্ধ রয়েছে। আর পানিতে জন্মেছে কচুরিপনা, লতা—পাতা, ঘাস। এতে বর্তমান বোরোধান চাষাবাদ ব্যহত হবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকার কৃষক। এ বিল অভ্যন্তরে রংপুর, ধামালিয়া, রঘুনাথপুর, ফুলতলার জামিরা, হামকুড়া, কাটেঙ্গা, গাড়াখোলা, মোশলী, বরুনপাড়া, আটরা গিলাতলা, ভুলোপোতা, টোলনা, মুজোরখুটো, কৃষ্ণনগর, বারানদী, বাটবেড়া, সাড়াভিটা, থুকড়াসহ ৪০ গ্রামের কৃষকের জমি রয়েছে। তারা বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় কৃষক কেশব মন্ডল, সহাদেব মন্ডল, খোকন মন্ডল, শিবপদ সরদার, নারায়ন মন্ডল, রতন সরকার, কোমল সরকার, নিবাশ সরকার, প্রভাষ সরকার, নাগর সরদার, পঞ্চানন সরকার, মধুসূদন মহলদার, বিনয় মহলদার, কাত্তির্ক সরদার, অজয় মহলদারসহ এলাকাবাসী জানান পানি নিস্কাশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে রূপ নেয়। সে কারণে মোট আবাদযোগ্য সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে হতে ৩০ শতাংশ অর্থাৎ দুই হাজার হেক্টর জমি বোরোধান চাষাবাদ করা সম্ভব হবে। রংপুর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সমারেশ চন্দ্র মন্ডল বলেন দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা থাকার কারণে লক্ষ্যমাত্রা জমিতে মৌসুমি বোরো ধান চাষাবাদ করা সম্ভব নয়। এখনও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে বিলের সিংহভাগ আবাদি জমি। আর উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তা ইবনে ইনসাদ আমিন তুহিন বলেন বিল ডাকাতিয়ায় মোট ৬,৩৮৫ হেক্টর আবাদী জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৫,৫৩৫ হেক্টর জমিতে মৌসুমি বোরোধান চাষাবাদ করা সম্ভব হবে বলে তিনি দাবি করেছেন।