মোঃ সেলিম খন ডুমুরিয়া থেকে \ বিজ্ঞানীরা বলছেন, গরুর দুধের পুষ্টি এবং সজনে পাতার পুষ্টি অলমোস্ট কাছাকাছি। আমরা উপমহাদেশে বা বাংলাদেশে গরুর দুধ খাই, ক্যালসিয়ামের জন্য, প্রোটিনের জন্য, আমিষের জন্য। গরুর দুধ খেয়ে আমরা বলি, এটা একটা সুষম খাবার। গরুর দুধ এবং সজনে পাতার মধ্যে পুষ্টিগত কোনো পার্থক্য নাই। গরুর দুধে যা আছে, সজনে পাতাতেও তা আছে। ঔষধি গুণ, সজনে পাতার কিছু ঔষধি গুণ আছে এবং ঔষধি গুণের কারণে আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে এটি দারুণ কার্যকর। ইতোমধ্যেই আমরা এক্সপেরিমেন্ট করেছি। যাদের হাঁটু ব্যথা আছে, সজনে পাতার জুস খান। সজনে পাতার ভর্তা খান অথবা গুঁড়া খান। ছয় মাস খান। দেখেন আপনার আর্থ্রাইটিসের কী অবস্থা হয়। শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে সজনে পাতা। আমরা জানি যে, আমাদের শরীরে ৭০ থেকে ১০০ ট্রিলিয়ন সেল বা কোষ আছে। প্রত্যেকটা কোষের ভেতরে লক্ষাধিক রিঅ্যাকশন হয় প্রত্যেক দিন; প্রতি মুহূর্তে এবং এই লক্ষাধিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, বিক্রিয়া হতে গিয়ে ভয়াবহ কিছু টক্সিন, কিছু বিষাণু, কিছু ক্ষতিকর পদার্থ সেলের ভেতরে তৈরি হয়। এগুলোকে আমরা বলি বর্জ্য পদার্থ, টক্সিন, ফ্রি রেডিক্যাল। এগুলো যদি সেলের ভেতরে থেকে যায়, আপনি কোনো দিন সুস্থ থাকতে পারবেন না। কেউ আপনাকে সুস্থ করতে পারবেন না। এই বর্জ্য পদার্থকে বের করার জন্য আপনি সজনে পাতা খেতে পারেন। এটা দারুণ একটা ডিটক্স হিসেবে কাজ করতে পারে। আপনার শরীরকে ডিটক্সিফাই করবে এবং আপনারা এখন জানেন, আমরা সবাই জানি, বিশ্বব্যাপী এই ডিটক্স প্রোগ্রামগুলো দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সাত দিন, ১৫ দিন আপনি একটা বিশেষ প্রোগ্রাম ফলো করবেন, বিশেষ খাবার খাবেন, আপনার শরীরে জমানো বর্জ্য পদার্থগুলো বেরিয়ে যাবে। তো সজনে পাতা সেই কাজটা করতে আপনাকে সাহায্য করবে। আপনার ভেতরের বর্জ্য পদার্থগুলো বের করে দেবে। সজনে পাতা কীভাবে খাবেন, আমরা মনে করি যে, ফুল সিজনে সবচেয়ে উত্তম উপায় হচ্ছে এটিকে আপনি জুস করে খাবেন। কিছু সজনে পাতা নিন। ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়ে এটাকে ব্লেন্ডারে নিন। কিছু পানি যোগ করে টেস্টের জন্য কিছু আদা, কিছু জিরা, একটু বিট লবণ দিতে পারেন। ভালো করে ব্লেন্ড করেন। এরপর ছেঁকে নিন। ছেঁকে নিয়ে খাওয়ার সময় একটু মধু দিয়ে খেয়ে নিন। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জুসটি আপনার খাওয়া হয়ে গেল। যদি আপনার জুস বানাতে ঝামেলা হয় অথবা সব দিন যদি জুস খেতে না পারেন, ভর্তা খান, তবে এটা কাঁচা হলে বেস্ট। যখন আপনি সিদ্ধ করলেন, এই যে নানাবিধ যে উপাদানগুলো আছে, এটি নষ্ট হয়ে যেতে থাকবে। সে জন্য কাঁচা পাতা ভালো করে বেটে নিয়ে এটাকে টেস্টি করার জন্য যা যা লাগেৃসেখানে আপনি রসুন দেন, আদা দেন, মরিচ দেন, পেঁয়াজ দেন, যা যা দিলে টেস্টি হয়, দেন। তারপর আপনি খান। সিজনে। অফ সিজনে গুঁড়া। সজনে পাতাকে আপনি সিজনে ভালো করে রোদে শুকান। শুকানোর পর এটাকে ক্রাশ করে ফেলেন। ছয় মাস এটা চমৎকার থাকবে এবং এক থেকে দুই চা চামচ সজনে পাতা যথেষ্ট আপনার পুষ্টির জন্য। তাই আমরা বলব যে, নিজের দেশের এই অ্যাভেইলেবল এই পাতাটিকে অবহেলা করবেন না। আজ না হলে কাল থেকে শুরু করুন। অফ সিজনে আপনি গুঁড়ো সংগ্রহ করুন। প্রতিদিন এক চামচ সকালে, এক চামচ রাত্রে। ছয় মাস পর আপনি আপনার স্ট্রেংথ, আপনার কর্মক্ষমতা দেখে নিজেই বিস্মিত হবেন।