এফএনএস স্পোর্টস: ঘর সামলে পাল্টা আক্রমণে ওঠার কৌশলে অনেকটা সময় প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখল আতলেতিকো মাদ্রিদ। তবে প্রবল চাপের মুখে একটা সময় ঠিকই ভেঙে গেল সেই দেয়াল। কেভিন ডে ব্র“ইনের দারুণ গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে ওঠার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল ম্যানচেস্টার সিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে গত মঙ্গলবার রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছে পেপ গুয়ার্দিওলার দল। অপ্রত্যাশিত কোনো কিছু নয়, দুই দল তাদের চেনা কৌশলেই শুরু করে। প্রথম মিনিট থেকে আক্রমণে ওঠায় মনোযোগ দেয় সিটি। আতলেতিকো বরাবরের মতো রক্ষণদুর্গ মজবুত রেখে লম্বা পাসে সুযোগ খুঁজতে থাকে। প্রতিপক্ষের টানা আক্রমণ সামলে নিজেদের সীমানা থেকে বের হতেই পারছিল না সফরকারীরা। অবশ্য সিটিও পারছিল না উলেখযোগ্য কিছু করতে। অনেকটা সময় পুরো দল নিয়ে রক্ষণ সামলানোর পর ২২তম মিনিটে একবার প্রতি-আক্রমণে ওঠে আতলেতিকো। প্রথমার্ধের শেষ ১০ মিনিটে তাদের মধ্যে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার কিছুটা প্রবণতা দেখা যায়। তবে উলেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি কোনো পক্ষই। উত্তেজনাহীন প্রথমার্ধের পর ৪৭তম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ পায় সিটি। তবে ইলকাই গিনদোয়ানের শট বাইরে পাঠান ডিফেন্ডার স্তেফান সাবিচ। কর্নারের উড়ে আসা বল প্রতিপক্ষের পায়ে যাওয়ার আগে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একছুট দেন অঁতোয়ান গ্রিজমান। দারুণ কিছু হতে পারত, কিন্তু পেছনে ছুটে আসা গিনদোয়ানের চ্যালেঞ্জের মুখে সতীর্থকে পাস দিতে গিয়ে সুযোগটি নষ্ট করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। গত শনিবার প্রিমিয়ার লিগে বার্নলির বিপক্ষে জালের দেখা পাওয়া ডে ব্র“ইনে ৫৫তম মিনিটে গোল পেতে পারতেন। তবে তার নিচু ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকান ইয়ান ওবলাক। প্রবল চাপ ধরে রাখার সুফল ৭০তম মিনিটে পায় সিটি। খানিক আগে রিয়াদ মাহরেজের বদলি নামা ফিল ফোডেন প্রতিপক্ষের তিন জনের মধ্যে থেকে দারুণ এক পাস বাড়ান ডি-বক্সে। বল ধরে কোনাকুনি শটে দলকে উচ্ছ¡াসে ভাসান বেলজিয়ান তারকা ডে ব্র“ইনে। ৮০তম মিনিটে আবারও সুযোগ পান তিনি। তবে ডি-বক্সের মধ্যে তার শট রক্ষণে প্রতিহত হয়। দুই মিনিট পর সাইডলাইনের কাছে জ্যাক গ্রিলিশকে আতলেতিকোর ডিফেন্ডার সিমে ভারসালিকো ফাউল করেন। সিটি মিডফিল্ডার পড়ে থাকা অবস্থায় তার শরীরের কাছে থাকা বলে আনহেল কোররেয়া শট নিলে দুই দলের মাঝে উত্তেজনা ছড়ায়। ছুটে এসে দুই পক্ষকেই শান্ত করেন গুয়ার্দিওলা। কোররেয়াকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। শেষ দিকে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল বাঁধতে যাচ্ছিল। দ্রুত ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি ঠান্ডা করেন রেফারি। ভারসালিকো ও সিটি গোলরক্ষককে এদেরসন দেখেন হলুদ কার্ড। এরপরই বাজে শেষের বাঁশি। আক্রমণের বিচারে ৯০ মিনিটের লড়াইটা কেমন ছিল, তা একটি পরিসংখ্যানেই পরিষ্কার। প্রায় ৭০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে সিটি ১৫টি শট নিয়ে দুটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। জবাবে আতলেতিকো গোলের জন্য কোনো শটই নিতে পারেনি। গুয়ার্দিওলা ও দিয়েগো সিমেওনের কৌশলের হাড্ডাহাডি লড়াইয়ে এ যাত্রায় জয়ের হাসি প্রথম জনের মুখে। সাফল্য ধরে রাখতে ফিরতি লেগে সিটিকে দিতে হবে আরও বড় পরীক্ষা। লড়াইটা যে হবে এবার প্রতিপক্ষের মাঠে। মাদ্রিদের ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় আগামী বুধবার হবে ফিরতি লেগ।