মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ০৯:১২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শান্তি আলোচনার পর ইউক্রেনে বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া সিরিয়ায় পুনরায় কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মন্তব্য, ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গ্রেফতার সৌদি আরবে অবৈধদের ধরতে অভিযান, গ্রেফতার ১৫ হাজার হায়দরাবাদের চারমিনারের কাছে ভবনে আগুন, শিশুসহ নিহত ১৭ যে কারণে ব্যর্থ হলো ভারতের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ভারতের জন্য আকাশসীমা আরও এক মাস বন্ধ রাখবে পাকিস্তান: রিপোর্ট ইরানে শিয়া মাজারে হামলার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ—মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ টর্নেডোয় ২৭ জনের প্রাণহানি যে কারণে পেনাল্টি নেননি হালান্ড

ঢাকা—খুলনা রুটে নতুন ট্রেন চলাচল শুরু, উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

এফএনএস: পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা—খুলনা রুটে যাত্রা শুরু করলো ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয় ট্রেনটি। শিডিউল অনুযায়ী সকাল পৌনে ১০টায় ট্রেনটি ঢাকা পেঁৗছাবে। এই ট্রেনে আসনসংখ্যা ৭৬৮টি এবং বগি রয়েছে ১২টি। ট্রেনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন। এরপর বেলা পৌনে ১১টায় ট্রেনটি ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ নামে বেনাপোলের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে। যশোর জংশন হয়ে দুপুর আড়াইটায় ট্রেনটি বেনাপোলে পেঁৗছায়। ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ বিকাল সাড়ে ৩টায় বেনাপোল থেকে যাত্রা করে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পেঁৗছায়। এরপর ট্রেনটি ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ নাম নিয়ে ঢাকা থেকে রাত ৮টায় যাত্রা করে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনায় পেঁৗছাবে। পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রুটে সময় লাগছে মাত্র পৌনে ৪ ঘণ্টা। দূরত্ব, যাতায়াতের সময় ও ভাড়া কম হওয়ায় রেলওয়ের এই উদ্যোগে খুশী যাত্রীরা। নতুন এই রুটের যাত্রী রূপসার বাসিন্দা কাজী আশরাফুল বারী বলেন, এ রুটে টিকিটের মূল্য কম, ৪৪৫ টাকায় টিকিট কিনেছি। খুব ভালো লাগছে খুলনা থেকে নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে স্বল্প সময়ে ঢাকা যেতে পারছি, ইনশাআল্লাহ। নগরীর টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা সানাউল হক বাচ্চু বলেন, কম সময়ে খুলনা থেকে ঢাকা যেতে পারবো। যা শরীরের জন্য আরামদায়ক হবে এবং ভাড়াও কম। ট্রেনযাত্রী ওলি আহমেদ বলেন, খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়েছে। আগে আমাদের অনেক পথ ঘুরে যেতে হতো। এখন সময় অনেক কম লাগবে এবং তুলনামূলক সাশ্রয়ীও হলো। এজন্য আমরা সবাই বেশ খুশি। আরেক যাত্রী মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, ট্রেনটি আরও আগে প্রয়োজন ছিল। অনেক দেরি হয়ে গেছে। এই ট্রেনে খুবই সুবিধা। এতে খুলনা থেকে গিয়ে ঢাকায় অফিস শেষ করে আবার খুলনায় ফেরা সম্ভব। ট্রেনের সাব—লোকোমাস্টার (চালক) ইসহাক মল্লিক বলেন, ট্রেনটি স্বল্প সময়ে খুলনা থেকে ঢাকা যাওয়া—আসা করবে। এ ছাড়া ট্রেন ভ্রমণ নিরাপদ, আল্লাহর রহমতে যাত্রীরা নিরাপদেই যেতে পারবে। খুলনা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। প্রথম দিন খুলনা থেকে ৫৫৩ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খুলনা থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় যান। তবে খুলনা প্রান্তে ছিল না কোনও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। গত সোমবার ছাড়া সপ্তাহের ৬ দিন ট্রেনটি চলাচল করবে। ট্রেনটি যাওয়া—আসার পথে যশোরের নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। খুলনা রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার আশিক আহমেদ জানান, ট্রেনটিতে ১২টি বগি রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি যাত্রীবাহী ও ১টি পণ্যবাহী। ১১টি বগিতে আসনসংখ্যা ৭৬৮টি। ঢাকা—খুলনা রুটে শোভন চেয়ার ভাড়া (ভ্যাট ছাড়া) ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা ভাড়া ৭৪০ টাকা, এসি আসন ভাড়া ৮৮৫ টাকা এবং এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১ হাজার ৩৩০ টাকা। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, বিদেশ থেকে ট্রেনের নতুন ইঞ্জিন ও বগি আনা হচ্ছে। ৬ মাস পর এই রুটে নতুন আরও ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা—খুলনা রুটে তিনটি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে দুটি আন্তনগর ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ও ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’। আর একটি ‘নকশিকাঁথা’ কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। নতুন করে যুক্ত হচ্ছে ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। এর মধ্যে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী—কুষ্টিয়া হয়ে খুলনায় যাচ্ছে। এতে প্রায় ৮ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। অন্যদিকে চিত্রা এক্সপ্রেস বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু হয়েই চলাচল করছে। এই ট্রেনের সময় লাগে সাড়ে ৯ ঘণ্টা। এর বাইরে বেনাপোল এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া হয়ে যশোরের বেনাপোলে যায়। এতে সময় লাগছে সাড়ে ৭ ঘণ্টা। এ ছাড়া ঢাকা—খুলনা রুটে কমিউটার নকশিকাঁথা ট্রেন চলাচল করছে। এটি খুলনা থেকে রাত ১১টায় ছেড়ে যশোর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ভাঙা হয়ে ঢাকায় পেঁৗছায় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে। এতে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। ফলে নতুন ট্রেন সময় সাশ্রয় হবে অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। এ ছাড়া সুন্দরবন ও চিত্রা ট্রেনের চেয়ে ভাড়াও কম লাগছে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনে। এতে খুশি যাত্রী ও রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা। রেলের দেওয়া সময়সূচি অনুসারে, জাহানাবাদ এক্সপ্রেস সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৬টায় খুলনা থেকে ছেড়ে নোয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী, ভাঙ্গা জংশন হয়ে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় পেঁৗছাবে। আর ঢাকা থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনা পেঁৗছাবে। অন্যদিকে, একই ট্রেন ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ নামে সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া প্রতিদিন ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে বেনাপোল পেঁৗছাবে দুপুর আড়াইটায়। আর বিকাল সাড়ে ৩টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে যশোর, নড়াইল, কাশিয়ানী ও ভাঙ্গা জংশন হয়ে ঢাকায় পেঁৗছাবে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে। উভয় ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধ গত সোমবার। রেলওয়ের ডিভিশনাল ম্যানেজার শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, জাহানাবাদ ট্রেনটি খুলনা থেকে কাশিয়ানি নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করবে। ঢাকা থেকে আবার একইভাবে রাতে খুলনায় পৌছাবে। খুলনা থেকে ঢাকা রুটের অন্য ট্রেনের চেয়ে এতে সময় কম লাগবে। মাত্র সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় ঢাকায় পেঁৗছাবে। যা খুলনাবাসীর জন্য একটি বড় সুযোগ। একইসঙ্গে রেলওয়েও গর্বিত যে খুলনাবাসীকে এই সুবিধা আমরা দিতে পারছি। এর মাধ্যমে খুলনাবাসী স্বল্প সময়ে, স্বল্প দূরত্বে এবং স্বল্প খরচে তাদের গন্তব্য ঢাকায় পেঁৗছাতে পারছেন। এই ট্রেনে ১১টি যাত্রীবাহী কোচ এবং একটি লাগেজ ভ্যান রয়েছে। এই লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে খুলনা এবং আশপাশের জেলার বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য বা মালামাল ঢাকায় নিতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com