এফএনএস স্পোর্টস: বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দলবদল করেছেন। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে নাম লেখালেও সাকিবের দেশে ফিরে খেলা নিয়ে রয়েছে অনেক অনিশ্চয়তা। তাঁর দেশে ফিরে খেলার জন্য রাজনৈতিক এবং ক্রিকেটীয় বাধা দুইই রয়েছে।
গত জুলাই—আগস্টে সাকিব যখন দেশে ফেরার পরিকল্পনা করেন, তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয় এবং তিনি বেশ কিছু মামলার শিকার হন। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর দেশে ফিরে আসা ছিল অনিশ্চিত। এর পর, বিপিএলে চিটাগং কিংস তাঁকে দলে নেয়, কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি দেশে ফিরে খেলতে পারেননি।
বিশ^ ক্রিকেটের অন্যতম বড় নাম সাকিবের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে গত বছর দুটি পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন, যার ফলে তিনি এখন বোলিংয়ে নিষিদ্ধ। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি বোলিং করতে পারছেন। এমন অবস্থায়, রূপগঞ্জ তাকে দলে নিয়েছে, কিন্তু দেশের ক্রিকেটে আবারও তার খেলতে পারা নিশ্চিত নয়।
রূপগঞ্জের মালিক লুৎফর রহমান বাদল সাকিবের ব্যাপারে আশাবাদী, এবং জানান, “আমরা শতভাগ আশাবাদী। সেই জন্যই তাকে দলে নিয়েছি, না হলে আমরা নিতাম না।” তিনি আরও বলেন, সাকিব তার বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষায় পাস করলে বাংলাদেশে খেলা নিয়ে কোনও বাধা থাকবে না।
তবে, সাকিবের দেশে ফেরার বিষয়টি আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অন্যদিকে বোলিং অ্যাকশনের সমস্যা। ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছা থাকলেও দেশে ফিরে আসতে পারেননি সাকিব, যার ফলে তার ক্যারিয়ার এখন একেবারে অনিশ্চয়তার দিকেই যাচ্ছে।
এদিকে, সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা, এবং বিদেশে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলা তার ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত দেয়। তবে, দেশে ফেরার পর যদি সাকিব আবারও জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারেন, সে বিষয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
রূপগঞ্জের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা সাকিবকে দলের অন্যতম বড় তারকা হিসেবে দেখছেন এবং আশা করছেন তিনি মার্চের প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তাদের হয়ে খেলবেন। সাকিবের দেশের ফিরতে পারা না পারার বিষয়টি লিগের প্রস্তুতির জন্য একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অতীতে সাকিব আল হাসান দেশের ক্রিকেটে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় অলরাউন্ডার হিসেবে তাঁর অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বোলিং অ্যাকশন বিষয়ক বাধার কারণে তাঁর ক্যারিয়ার এখন বিপদসংকুল হয়ে উঠেছে।
সাকিব এখন ৩৭ বছর বয়সে পৌঁছেছেন এবং দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে তার নাম সোনালী অক্ষরে লেখা রয়েছে। তবে, বর্তমানে ক্রিকেটীয় বাধা এবং দেশের পরিস্থিতির কারণে সাকিবের ভবিষ্যত এক দুশ্চিন্তার জায়গায় পৌঁছেছে। জাতীয় দলে তাঁর অন্তভুর্ক্তি, আবারও বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষা এবং দেশে ফিরে খেলতে পারার বিষয়টি সময়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, এবং তা যেন তার ক্যারিয়ারের পরবর্তী অধ্যায় হতে পারে, এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
এখন সবাই অপেক্ষায়, রূপগঞ্জের হয়ে সাকিব মাঠে নামবেন কি না, এবং তিনি কি তার ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায় বাংলাদেশেই কাটাবেন?