এফএনএস বিদেশ : দক্ষিণ আমেরিকার দেশ প্যারাগুয়ে এক নিম্নপদস্থ চীনা কূটনীতিকের ভিসা বাতিল করে তাকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই কূটনীতিক তাইওয়ানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার জন্য আইনপ্রণেতাদের প্ররোচিত করার চেষ্টা করেছেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন চীনা কূটনীতিক শু ওয়েই। অন্যদিকে, প্যারাগুয়েতে তাইওয়ান দূতাবাস অভিযোগ করেছে, তিনি প্যারাগুয়েতে অনুপ্রবেশ করে চীন-তাইওয়ান সম্পর্ক দুর্বল করার চেষ্টা করেছেন। অবশ্য শু ওয়েইর হস্তক্ষেপমূলক কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি মন্ত্রণালয়। তবে তিনি ইউনেস্কোর একটি বৈঠকে চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্যারাগুয়েতে এসে ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। দেশ ছাড়ার জন্য তাকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্যারাগুয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক ও কারিগরি বিষয়ক উপমন্ত্রী হুয়ান বাইয়ার্ডি বলেন, চীনের দূত অন্য একটি অ্যাজেন্ডা নিয়ে এসেছিলেন। তিনি এমন অভ্যন্তরীণ রাজনীতি করতে এসেছিলেন, যা যথাযথ ছিল না। প্যারাগুয়ের কংগ্রেসে রেকর্ড করা শু ওয়েইর একটি বক্তব্য পেয়েছে রয়টার্স। ওই রেকর্ডের ভিত্তিতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাইওয়ানের বদলে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আহ্বান জানান তিনি। শু ওয়েই বলেছেন, চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করলে আয় বাড়বে, ব্যয় কমবে, ফলে সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে। আমার এই সফরের উদ্দেশ্য হলো প্যারাগুয়ের মানচিত্রে একটি বিশাল ফাঁকা স্থান পূরণ করা। সেই ফাঁকা স্থান হলো পিপল’স রিপাবলিক অব চায়না। তিনি আরও বলেন, চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে বাছাই করার কোনও সুযোগ নেই। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তাইওয়ানের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক মিত্র প্যারাগুয়ে। ফলে দেশ থেকে চীনে শস্য রফতানিতে তারা বাধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। প্যারাগুয়ে হলো দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দেশ, যেটি তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে। চীন গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে তার নিজের অঞ্চল বলে দাবি করে। অন্যদিকে, তাইপে বেইজিংয়ের এই সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে। কেবল জনগণই এই দ্বীপদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার রাখে বলে দাবি করে থাকে সরকার। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বর্তমানে আরেক মিত্র দেশ পালাউ সফরে আছেন। তিনি প্যারাগুয়ের সরকার ও জনগণের গণতন্ত্রের প্রতি দৃড় অবস্থানের প্রশংসা করে বলেছেন, চীনের হুমকি ও প্রলোভন কোনও নতুন বিষয় নয়।