সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

তালাক দিয়ে প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ায় মা—মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১ মার্চ, ২০২৫

এফএনএস: বগুড়া সদরে গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার সাবগ্রাম দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা রামদা উদ্ধার করেছে। নিহতরা হলেন— আনোয়ারা বেগম (৫৮) ও তার মেয়ে ছকিনা বেগম (৩৫)। পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নাজমুল হক জানান, তালাক দেওয়ায় ছকিনার সাবেক স্বামী রুবেল মিয়া আক্রোশের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, দাম্পত্যকলহে বগুড়া সদর উপজেলার সাবগ্রাম দক্ষিণপাড়ার ছকিনা বেগম প্রথম স্বামী বাদশা মিয়ার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। প্রায় ছয় বছর আগে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার সঙ্গে ছকিনার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এরপর ছকিনা প্রথমপক্ষের সন্তান সাব্বির আহম্মেদকে নিয়ে বগুড়া শহরের আকাশতারা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। মাদকাসক্ত রুবেল চুরি ও অন্যান্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সংশোধন না হওয়ায় ছকিনা তাকেও তালাক দেন। এরপর থেকে ছকিনা গ্রাম থেকে মা আনোয়ারা বেগমকে এনে আলাদা বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এক বছর আগে অনুরোধের প্রেক্ষিতে ছকিনা আবারও রুবেলের সংসারে ফিরে যান। কিন্তু রুবেল মাদক সেবন, চুরি ও অন্যান্য অপরাধ ছাড়তে পারেনি। ফলে প্রায় ছয় মাস আগে আবারও তাদের মধ্যে তালাক হয়। তারা আরও জানান, ছকিনা বেগম মা আনোয়ারা বেগম সামগ্রাম দক্ষিণপাড়ায় দুই শতক জায়গা কিনে সেখানে টিনের ঘর তৈরি করেন। ছকিনা প্রায় এক মাস আগে প্রথম স্বামী সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া বাদশা মিয়াকে আবার বিয়ে করেন। বাদশা গ্রামের বাড়িতে থাকেন। এদিকে ছকিনা আবারও প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় রুবেল। ছকিনার ছেলে সাব্বির আহম্মেদ অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে রুবেল বাড়িতে এসে তার মাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। তাকে ছেড়ে দিয়ে বাদশাকে আবারো বিয়ে করা নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে রুবেল রামদা দিয়ে ছকিনাকে কোপানো শুরু করে। এ সময় তার নানি আনোয়ারা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও কোপানো হয়। এরপর রুবেল পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাত দেড়টার দিকে ছকিনা বেগম মারা যান। এ ছাড়া গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে আনোয়ারা বেগমও মারা যান। বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এ কে এম মঈন উদ্দিন ও নারুল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নাজমুল হক জানান, প্রথম স্বামীর ঘরে ফিরে যাওয়ায় দ্বিতীয় স্বামী (সাবেক) মাদকাসক্ত রুবেল মিয়ার আক্রোশের শিকার হয়েছেন ছকিনা বেগম ও তার মা আনোয়ারা বেগম। বাড়ির পাশে বাঁশঝাড় থেকে রক্তমাখা রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ দুটি উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com