তালা প্রতিনিধি \ তালা উপজেলায় কৃষি কাজে নারীর অংশগ্রহণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঘরের কাজের পাশাপাশি কৃষি কাজেও পুরুষের সাথে সমানতালে শ্রম দিচ্ছেন নারীরা। তবুও পারিশ্রমিকের দিক বিবেচনায় এখনও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারী শ্রমিকরা। কৃষি অফিস বলছে,বর্তমানে তালা উপজেলায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি—বোরো চাষাবাদ হচ্ছে। আর এসব ফসলি জমিতে পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে নারী শ্রমিকরা বেশি কাজ করছেন।ভূমিহীন পরিবারের পুরুষ শ্রমিকরা রিকশা—ভ্যান ও বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন জেলায় চলে যায়। সংসারের খরচ চালানোর জন্য নারী শ্রমিকরা শ্রম বিক্রি করছেন। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় দুই হাজার নারী শ্রমিক কৃষি কাজ করে এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। দৈনিক ২৫০টাকা থেকে ৩০০টাকা মুজরি পাচ্ছেন। পাশাপাশি এই উপজেলার নারী শ্রমিকরা বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে গরু ছাগল হাস মুরগি পালন করছে। কৃষি কাজ করে গরুর খাবার এবং কিস্তির টাকা পরিশোধ করছেন তারা। তথ্য মতে, বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রায় নারীর অবদান উল্লেখযোগ্য। কৃষির উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। আদি পেশা কৃষির সূচনা হয় নারীর হাত ধরেই। ঘরের কাজের পাশাপাশি তারা কৃষিকাজও করে আসছে বহুকাল থেকে। আগে গ্রামীণ সমাজে পুরুষরাই মাঠে কৃষিকাজ করত এবং নারীরা রান্নাবান্না আর সন্তান লালনপালন নিয়েই ব্যস্ত থাকত। বর্তমানে প্রত্যক্ষভাবে কৃষি কাজে এগিয়ে এসেছে নারীরা। তারা পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি উৎপাদন বিশেষ করে রবিশস্য উৎপাদন, গবাদি পশু ও হাঁস—মুরগি পালন, সবজি ও মৎস্যচাষ, বনায়ন এসব কাজে নারীরা পুরুষের পাশাপাশি সমান অবদান রাখছে। সূত্র মতে, পূর্বে গ্রামীণ জনপদে শুধু পুরুষরাই মাঠে কৃষি কাজ এবং নারীরা রান্নাবান্না আর সন্তান লালনপালন নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। বর্তমানে প্রত্যক্ষভাবে পুরুষের সমান মাঠে কৃষিকাজে এগিয়ে এসেছেন নারীরা। তারা পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছেন। খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি উৎপাদনে জমিতে ধানের বীজ রোপন থেকে শুরু করে আগাছা বাছাই, সার দেওয়া, ধান কাটা ও মাড়াই, রবিশস্য উৎপাদন, গবাদি পশু, হাঁস—মুরগি পালন, সবজি ও মৎস্য চাষ এবং বনায়নের কাজেও নারীরা পুরুষের পাশাপাশি সমান অবদান রাখছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ক্ষেতে ধানের বীজ রোপণ করা থেকে শুরু করে সার দেওয়া, আগাছা দমন, কীটনাশক ছিটানো, ধান কাটা ও মাড়াইর কাজ করছেন নারী শ্রমিকরা। অনেকেই আবার বাড়ির পাশে বা উঠানে অনাবাদি জায়গায় শাক—সবজি, ফল—ফলাদির আবাদ করে সংসারে বাড়তি রোজগারের পথ খুঁজে নিয়েছেন। হাঁস—মুরগি পালন থেকে শুরু করে কৃষির প্রায় সবক্ষেত্রেই নারীর অবদান বেড়ে চলেছে। তবে এসব নারী শ্রমিকদের দাবি, এখনো তারা পারিশ্রমিকসহ বিভিন্নভাবে বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন। সরকারীভাবে কৃষি উপকরণ, সারবীজ, কৃষক কার্ড ও ঋণের বেশিরভাগ সুবিধা পুরুষ কৃষক পেলেও বঞ্ছিত হচ্ছেন নারী কৃষকরা। তবে কৃষিকাজে নারীর এ অংশগ্রহণ তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুললেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পাচ্ছেন না। উপজেলার তালা ইউনিয়নের নারী শ্রমিক চামেলী রানী ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সুকদেবপুর গ্রামের হালিমা খাতুন, অভিযোগ করেন, আমরা পুরুষ শ্রমিকের ন্যায় কাজ করলেও তাদের সমান মজুরি পাই না। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাজিরা বেগম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সহযোগিতা করছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক নারী শ্রমিক কৃষি কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছে।