পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি: তালার জেঠুয়া জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে অনিয়ম ও দূর্ণীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন সেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষক মোঃ হাফিজুর রহমান। সরকারী নীতিমালার কোনো তোয়াক্কা করেন না তিনি। নিজের খেয়ালখুশি মতো আইন তৈরী করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে চলেছেন।সরেজমিন পরিদর্শন ও এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারী পরিপত্র অনুযায়ী কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গেটে দোকান রাখা না গেলেও তিনি বিদ্যালয়ের গেটে দোকান বসিয়ে উন্নয়নের নামে মাসিক ভাড়া আদায় করছেন। এই ভাড়ার টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজে না লাগিয়ে নিজের ভাগ্য উন্নয়নে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রকৃত জমিদাতাদের কোনো নাম বিদ্যালয়ের কমিটিতে নাই বা তাদের নাম প্রতিষ্ঠানের কোথাও রাখা হয়নি। অথচ পরে যিনি বিলের জমি প্রতিষ্ঠানের নামে দান করেছেন তাকে প্রতিষ্ঠাতা করা হয়েছে এবং তাদেরকেই করেছেন দাতা সদস্য। দীর্ঘদিন তাদেরকে সভাপতি বানিয়ে বীরদর্পে অনিয়ম ও দূর্ণীতি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, তালা-কলারোয়ার সাংসদ সদস্য বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন।সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এই টাকা কিভাবে কোন কাজে খরচ করেছেন তার কোনো সঠিক তথ্য নেই। কাজের জন্য কমিটির কোনো রেজুলেশনও করা হয়নি। এই ভাবে বিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান।মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড বিদ্যালয়ের কমিটি ভেঙে অধ্যক্ষ রামপ্রশাদ দাসকে আহবায়ক কমিটির সভাপতি করে পরিপত্র জারি করে। সে মোতাবেক গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। পরিপত্র অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব পরিচালনার জন্য নতুন সভাপতির স্বাক্ষরে আর্থিক লেনদেনের কথা থাকলেও তিনি তা না করে সরকারী নীতিমালার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পূর্বের সভাপতির স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছেন। এর আগে তিনি দূর্ণীতি, অনিয়ম ও অনৈতিক কাজের জন্য এস এস সি পরীক্ষার হল সুপারের পদ থেকে বহিস্কার হয়েছিলেন।বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি অধ্যক্ষ রামপ্রশাদ দাস বলেন, প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান ও সাবেক সভাপতি যোগসাজসে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতি করেছেন। আমি বিগত অর্থবছরের হিসাব চাইলে দিতে পারেননি। এমনকি প্রধান শিক্ষক আর্থিক লেনদেনের কোনো হিসাব দেখাতে পারছেন না। হিসাব চাইলে বিভিন্ন তালবাহানায় সময় ক্ষেপন করছেন তিনি। দূর্ণীতির খতিয়ান বেরিয়ে আসার ভয়ে ব্যাংক হিসাব পরিচালনার জন্য সাবেক সভাপতির স্বাক্ষরও পরিবর্তন করলেও আমার স্বাক্ষরে কোনো আর্থিক লেনদেন হয় না। প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের কোনো আয়ব্যয়ের হিসাব দেখাতে পারছেন না এমনকি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন মূলক কাজের কোনো তথ্য উপাত্ত সংরক্ষিত নেই।মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান বলেন, সরকারী পরিপত্র অনুযায়ী কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গেটের কাছে দোকান রাখা যাবে না। নতুন কমিটি হলে পুরাতন কমিটি এমনি এমনি বাতিল হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে নতুন সভাপতি নির্বাচিত’র পরের দিনই ব্যাংক হিসাব পরিচালনার জন্য তাকেই সংযুক্ত করতে হবে। পূর্বের সভাপতি কোনো ভাবেই আর্থিক লেনদেনের সাথে যুক্ত হতে পারবেন না। জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা আমার জানানেই। এমন হয়ে থাকলে কোনো অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান বলেন, আমি কোনো অনিয়ম করিনি। সরকারী পরিপত্র অনুযায়ী সকল কাজ করা হয়। নতুন সভাপতিকে বাদ দিয়ে পুরাতন সভাপতির স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালনা কেন করা হয় এমন প্রশ্নের তিনি সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেনি।