তালা প্রতিনিধি \ তালা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ হালদার ও খুলনা স্টেশান রোড এর মেসার্স এম এম ব্রাদার্সের ঠিকাদার মাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে! প্রত্যেকটি নির্মাণ কাজ শেষ না করেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ হালদারকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে শতভাগ বিল উত্তোলন করছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, তালা উপজেলায় চঊউচ—৪ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ৪টি বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল সহ গেট নির্মাণে সরকারি প্রকল্পিত ৫৮,১৬,৪২২.৭৩১ চুক্তি মূল্যে খুলনা স্টেশান রোড এর প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম এম ব্রাদার্সের ঠিকাদার মাজেদুল ইসলাম কাজটি পায়। যার স্বারক নম্বর ৪৬.০২.৮৭৯০.০০০.১৪.০৬৮.২০ —৩৭৫ প্যাকেজ নম্বর চঊউচ—৪/ঝশজ/ঞঅখ/২০১৯—২০২০/ড১৪.০৫০৪ টেন্ডার আইডি নম্বর ৪৩৫৭১৫ এবং ২০১৯/২০ অর্থ বছরের ০৩/০৬/২০ তারিখে কাজটি শুরু হয়। তালা উপজেলার ১৬৫নং মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬০নং মহান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৮৮নং পাঁচপাড়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৭২নং শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী ওয়ালসহ গেট নির্মাণ। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২৪/০৯/২০২০ সালে এই ৪টি বিদ্যালয়ের কাজ সমাপ্তির সময়সীমা থাকলেও দীর্ঘ ৪ বছরেও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। কোন রকম লোহার রড ইট পাথরের খোয়া দিয়ে প্রথম ধাপের নির্মাণ কাজ শুরু করেই পাঁচপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্পুর্ন বিল উত্তোলন। একই সাথে মহান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আংশিক নির্মাণ কাজ করেই তালা উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ হালদারকে মোটা অংকের ম্যানেজ করে সরকারি বরাদ্দকৃত চুক্তি মূল্যের সম্পুর্ন টাকা উত্তোলন করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর মাজেদুল ইসলাম। ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলীর গাফিলতিতে একদিকে কোমলমতি ছাত্র—ছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে অন্যদিকে প্রতিনিয়ত ছোট বড় চুরির ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় প্রতিনিয়ত শিক্ষক কর্মচারীরাও মাশুল গুনছে। ওয়াল ও গেট নির্মাণ এর বিষয় ৬০নং মহান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওয়াল সহ গেট নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। আমি এখানে যোগদান করার পূর্বে একটি চুরির সংগঠিত হয়। আমি এলজিইডি অফিসে গেছিলাম অফিসারকে জানিয়েছি। কিন্তু তিনি এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ৭২নং শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আখতারুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ কাজের বিষয়ে জানাইছি। মাঝে একদিন আইছিল এসে নামেই মাত্র কাজ করে চলে গেছে। তালার এলজিইডি প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ স্যার কে অনেকবার বলেছি, বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। ১৬৫নং মদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী দাশ এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, আমার স্কুলে এখনও কাজ শেষ হয়নি। আমি তালা অফিসে যখন যায় তখনিই এলজিইডি অফিসার কে বলি। কিন্তু কেন যে নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে না এটা আমার জানা নেই। ১৮৮নং পাঁচপাড়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী খাতুন এর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রথম এসে কিছু নির্মাণ কাজ করেই ঠিকাদার আর আসেনা। আমার এখানে প্রতিনিয়তই লোহার রডসহ গ্রিল কেটে মাদকসেবির আড্ডা তৈরি করেছে। আমি এলজিইডি প্রকৌশলীকে জানাইছি কিন্তু তারপরও তিনি দেখেনা। এ ঘটনায় খুলনা স্টেশান রোডের মেসার্স এম এম ব্রাদার্সের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর মাজেদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে আলাপের চেষ্টা কালে তিনি আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তালা উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ হালদার এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, আমি এখন হাসপাতালে অফিস টাইমে অফিসে আসেন এ বিষয় কথা হবে। তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মোঃ রাসেল এর সাথে আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আংশিক নির্মাণ কাজ করে সম্পূর্ণ বিল নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি তারপরে জানাবো।