রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
নলতা কালী মন্দিরে পদাবলী কীর্তণ অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় তীব্র তাপপ্রবাহে বেড়েছে শিশু রোগ ; সতর্ক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের আনুলিয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন আশাশুনিতে ইস্তেস্কার নামাজ আদায় বুধহাটায় আট দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের তৃতীয় খেলা অনুষ্ঠিত বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ঈদ পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আজ আলীপুর ইউপি নির্বাচন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন চেয়ারম্যান পদে ৩ সহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৪ প্রার্থী রাজনগর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়াং ষ্টারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সাতক্ষীরা সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে সাহিত্য সম্মেলন সহ দিনব্যাপী আলোকিত আয়োজন দেবহাটার টাউনশ্রীপুর আন্তর্জাতিক নজরুল সম্মেলনের সমাপনী আয়োজন

তালার শাহী জামে মসজিদ সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩

মোঃ ইব্রাহীম মোল্ল্যা, তালা থেকে ॥ তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ। কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে তেঁতুলিয়া ‘মিয়ার মসজিদ’ নামে পরিচিতি। মসজিদটি ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে দৃষ্টি পাতকে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মসজিদটি যদি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ না করা হয়, তা হলে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদটি কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন। ‘মোগল মুমেন্টস অব বাংলাদেশ’ নামক গ্রন্থ দ্বারা প্রকাশিত হয় মৌলভী কাজী সালামতউল্লাহ খান বাহাদুর তেঁতুলিয়ার একজন জমিদার ছিলেন। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনামলের ডেপুটি কালেকটর এবং ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। জমিদার কাজী সালামতউল্লাহ আঠারো শতকের দিকে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তথ্যমতে, মসজিদটির সঙ্গে ১৮৪০-৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতার শাহজানী বেগম মসজিদ এবং ১৮৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতার ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। মসজিদটির নকশা ও কারুকাজের প্রধান দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশের বিহারের এক বাসিন্দা। তবে নির্দিষ্ট সাল নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। ১৮১৮, ১৮২৫ কিংবা ১৮৫৮-৫৯ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয় বলে বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে। মসজিদের খুব কাছে ‘সালাম মঞ্জিল’টিও সমসাময়িক কালে কাজী সাহেব প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটিতে রয়েছে ৭টি দরজা। প্রতিটি দরজার উচ্চতা ৯ ফুট এবং প্রস্থ ৪ ফুট। ১০ বর্গফুট বেড়বিশিষ্ট ১২টি পিলারের ওপর মসজিদের ছাদ নির্মিত। চুনসুরকি ও চিটাগুড়ের গাঁথুনিতে নির্মিত মসজিদটিতে ১৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ৬টি বড় গম্বুজ এবং ৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ১৪টি মিনার রয়েছে। এছাড়া ২৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট চার কোণে ৪টি মিনার রয়েছে। ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর তাদের আয়ত্তে নিয়ে এরশাদ সরকারের সময় সর্ব সংস্কারের আলোর মুখ দেখে এই মসজিদটি। তার পর থেকে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে মসজিদটি। সূত্র মতে, মসজিদটিতে একজন খতিব, একজন ওয়াক্তি ইমাম, একজন মুয়াজিন, একজন খাদেম রয়েছে। সীমিত সম্মানী দেয়া হয় তাদেরকে। স্থানীয়দের দাবী, প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণ ও সংস্কারের নামে সরকার প্রতি বছর যে বিপুল পরিমাণে বরাদ্দ দেয় তা যায় কোথায়। শুধু তালা তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদের নামে বিগত ১০ বছরে সরকারের বরাদ্দের ১০ লক্ষ টাকার কোন হদিস নেই। সংস্কার করতে না দেওয়ায় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে মসজিদটি। স্থানীয় মুসাল্লি মোঃ নুর ইসলাম বলেন, মসজিদটি কত সালে নির্মিত হয়েছে তার সঠিক কোন তথ্য আমাদের জানা নেই। তবে বর্তমানে অযত্ন আর অবহেলায় ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটির সৌন্দর্য নষ্ট হতে বসেছে। ৭টি মিনার ভেঙে পড়ার উপক্রম। মসজিদের বাউন্ডারি এলাকায় বহু অজানা ব্যক্তির কবরের চিহ্ন থাকলেও সেগুলো অরক্ষিত। মসজিদটির ফ্লোরে ও পশ্চিম পাশের দেয়ালের উপরের অংশে ফাটল ধরেছে। সরকারিভাবে মসজিদটি পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে মুসল্লিদের দান খয়রাতের উপর চলছে ইমাম মুয়াজিনের বেতন ।তিনি আরও জানান, মসজিদটির সামনে একটি দিঘী রয়েছে। এই দিঘী থেকে কখনও পানি শুকাতো না। কিন্তু এখন পানি শুকিয়ে যায়। এই মসজিদটিতে গভীর রাতে জিনদের পদচারণা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com