মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন

দক্ষিণ খুলনার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তর মোকাম আশাশুনির বড়দল বাজার নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২

এম এম নুর আলম \ দক্ষিণ খুলনার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তর মোকাম আশাশুনি উপজেলার বড়দল বাজার নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা নানাবিধ এসব সমস্যা বুকে ধারণ করে কষ্টকর পরিবেশে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে পুরতান ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। তথ্য অনুসন্ধানে জানাগেছে, বাজারটি ও বাজার সংলগ্ন এলাকায় প্রায় সাড়ে ৪ শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, বীমা অফিস, কলেজ, স্কুল, মাদরাসা এবং ধনী শ্রেণি মানুষের বসবাস। বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খর¯্রােতা কপোতাক্ষ ও মরিচ্চাপ নদী এখন নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে এলাকার সকল বাজারের ব্যবাসায়ীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখন এখানে সহজে ভিড়তে পারছেনা। তবে সড়ক পথে যতটুকু সম্ভব ব্যবসায়ীদের যাতায়াত অটুট রয়েছে। প্রতিদিন ও বিশেষ করে সাপ্তাহিক হাটের দিনে এখানে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে। অনেকগুলো দুঃখের মধ্যে অন্যতম দুঃখ বাজারটিতে কোন ব্যাংকের শাখা না থাকা। বড়দল, কাদাকাটি, খাজরা, আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও দরগাহপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এলাকায় কোন ব্যাংকের শাখা না থাকায় অর্থ লেনদেন নিয়ে খুবই সমস্যায় রয়েছেন। এসব এলাকার মানুষকে দুরবর্তী আশাশুনি, গুনাকরকাটি বা বুধহাটা বাজারে অবস্থিত ব্যাংকে লেনদেন করতে হয়। যা অসম্ভব বললেও ভুল হবেনা। অনেকে ঝক্কি-ঝামেলা মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়ে ঐসব ব্যাংকে লেনদেন করে থাকেন। বাজারের ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের শাখার অভাবে ব্যবসায়িক টাকা লেনেদেনে চরম বিপাকে রয়েছেন। এলাকার মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে না পেরে বিপদ সংকুল জীবন যাপন করছেন। এনিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখলেখি, বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। এমনকি বাজারে কৃষি ব্যাংকের শাখা স্থাপনের দাবীতে বড়দল মেইন সড়কে তিন বছর আগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। যে মানবন্ধনে সে সময় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। এলাকাবাসীসহ সকল প্রতিষ্ঠানের মানুষের প্রাণের দাবী অবিলম্বে বড়দল বাজারে কৃষি ব্যাংকের একটি শাখা স্থাপনের মাধ্যমে এলাকাবাসীর দুঃখ ও দুর্গতি লাঘবে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এদিকে, বাজারের চাদনী সেটের ছাউনি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি ও রোদ্রে ব্যবসা বন্দ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। চাদনী সেটের পাশে মাছ ও মাংসের পট্টি এবং কাপড় পট্টি বেশী বৃষ্টিপাত হলে পানিতে তলিয়ে থাকায় হাটু পানি ও কাদামাটিতে কষ্টকর পরিবেশে ক্রেতারা বাজারে যেতে বাধ্য হন। মনোহরী ও কাচামাল পট্টি বিভিন্ন সময়ে বৃষ্টি বা নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার দোকান বসিয়ে থাকেন খুটির উপর গোলপাতার ছাউনি দিয়ে। আধা-পাকা কিংবা পাকা ঘর নির্মান করতে গেলেই চাঁদাবাজী ও সরকারি বিধিনিষেধের কারণে হয়ে ওঠে না। ফলে বাজারটি এখন ছোবড়া ঘরের বাজারে পরিণত হতে চলেছে। পয়ঃ নিস্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় পুরা বাজারটি পানি ও কাদামাটিতে চরম বিপদাপন্ন হয়ে উঠেছে। চাঁদনী সেট, অভ্যান্তরিন সড়ক নির্মান, পয়ঃ নিস্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা, ওয়াপদা বাঁধে পাইপের মাধ্যমে পাট সম্বলিত কালভার্ট নির্মান করা এবং নদীগুলো পুনঃ খনন না করায় নৌপথ রুদ্ধসহ নানাবিধ সমস্যা দীর্ঘকালের। এসব সমস্যা নিরসনে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com