এস এম শাহাদাত দক্ষিণ শ্রীপুর কালিগঞ্জ প্রতিনিধি \ মাশরুম চাষে ভাগ্যবদল করেছেন টোনা গ্রামের চন্দন সরকার। তিনি কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের টোনা গ্রামের মৃত গোবিন্দ চন্দ্র সরকারের ছেলে। গত দুই বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম ও মাশরুম চাষ করে প্রায় আড়াই লাখ টাকার বেশি আয় করেছেন চন্দন সরকার। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেক তরুণ বেকার মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, করোনা কালীন সময়ে চন্দনের চাকরি চলে গেলে ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে আসেন। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে ভিডিও দেখে ও উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় মাশরুম চাষে উদ্বুদ্ধ হন। পরে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১১ হাজার টাকা খরচে মাগুরার ড্রিম মাশরুম প্রশিক্ষণ সেন্টার থেকে মাশরুম চাষের ওপর ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। এর পর নিজ বসতবাড়ির পাশে সাড়ে তিন শতক জায়গায় মাশরুম চাষ শুরু করেন। এতে দেখেন সফলতার মুখ।ওই বছর আয় করেন ৬৩ হাজার টাকা। এরপর -২২ সালে (৬৩) হাজার টাকা খরচ করে -২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনি আড়াই লক্ষ টাকার বেশি আয় করেন। এখনো মাশরুম যা রয়েছে তাতে আরও ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। শুরুতে ঢাকা ও মাগুরা থেকে ওয়েস্টার প্রজাতির মাশরুম বীজ সংগ্রহ করেন চন্দন সরকার। প্রথম দিকে ৪০ প্যাকেট দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার প্যাকেট। এক মাস পর থেকে ফলন দেওয়া শুরু হয়। প্রতি প্যাকেট থেকে এক মাস অনবরত ফলন পাওয়া যায়। তিনি প্রতিদিন ৩০-৩৫ কেজি করে মাশরুম পান। প্রতি কেজি মাশরুম ২০০ টাকা ধরে পাইকারি বিক্রি হয়, আর খুচরো ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। তার উৎপাদিত মাশরুম ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ও বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। চন্দন সরকার জানান, তিনি আরও বড় পরিসরে মাশরুম চাষ করতে চান। শিগগিরই বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়াও শুরু করবেন। তিনি সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে তার খামারের পরিধি বড় করতে সহজ হবে বলে মনে করেন। তার উদ্যোগ দেখে স্থানীয় অনেক বেকার তরুণ মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ ব্যাপারে দক্ষিণ শ্রীপুর কৃষি অফিসার শেখ আবু লতিফ শামসুজ্জামান জানান, মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ঔষধি গুণ সম্পন্ন খাবার। স্বল্প পুঁজি ও শ্রম ব্যয় করে অধিক আয় করা সম্ভব বলে ইতোমধ্যে এটি সারা দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তারই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের টোনা গ্রামে পরিচিত হয়ে উঠছে মাশরুম চাষ।