মোস্তাফিজুর রহমান/ইয়াছিন আরাফাত \ দীর্ঘ দিন থেকে সরকারের চলমান উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আশাশুনি উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত বৃহৎ বানিজ্যিক কেন্দ্র বুধহাটা বাজার। এ বাজার উপজেলার সর্বচ্চ রাজস্ব দাতা বাজার হিসেবে ধরা হলেও উন্নয়নের কোন ছোঁয়া দেখা যায়নি বাজারটির মধ্যের বিভিন্ন গলির রাস্তাসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার। প্রায়ই পাশ্ববর্তী নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে বাজারের মাছ বাজার, কাঁচা বাজার ও পশুর হাট তলিয়ে থাকতে দেখা যায়। এ বাজার থেকে আশাশুনি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ও পাশ্ববর্তী সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের প্রয়োজনীয় নিত্য পন্য কেনাকাটা করে থাকে। বুধহাটা বাজারটি নদীর পাশ ঘেঁষে অবস্থিত হওয়ায় বেশ কয়েক বছর পূর্বে দক্ষিণ বঙ্গের মানুষ নদী পথেই বুধহাটা বাজার থেকে নিত্য পন্যসহ বিভিন্ন মালামাল পাইকারী ও খুচরা কেনাকাটা করতে দেখা যেত। নদীর গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় বর্তামানে সড়ক পথে মালামাল বহন হয়ে থাকে। নদী পথে মালামাল বহন বন্ধ হয়ে যাওয়ার বাজারটি তার পুরানো ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বাজারটি মধ্যে অধিকাংশ স্থানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এবং কিছু কিছু সড়কের পাশে ড্রেনেজ গুলো কাদা মাটিতে ভর্তি হওয়ায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হয়ে হাটু পানিতে পরিনত হয় বাজারের মধ্যের একাধিক রাস্তা। আর এর ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বাজারে আগত ক্রেতা সাধারণের। এছাড়া বাজারে প্রবেশের কয়েকটি পয়েন্টের সড়ক এখনও কাঁচা। বাজারের পাশ্ববর্তী বুড়ো পীরের দরগাহ থেকে সরকারী কবরস্থানগামী সড়কটি মাটির রাস্তা হওয়ায় কাদাপানি ঠেলে বাজারে আসতে হয় সাধারণ মানুষের। পাশ্ববর্তী বেতনা নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় প্রায়ই নদীর জোয়ারের পানি ওভার ফ্লু হয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে থাকে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এদিকে মামলার জটিলতার কারণে এ বৃহৎ বাজারের নেই কোন স্থায়ী পশুর হাট। চান্নি গুলো ভগ্নাদশায় ক্রেতা সাধারণের জন্য পরিনত হয়েছে ঝুঁকিতে। যা বর্তমানে চায়ের দোকানীদের দখলে। বাজারের মধ্যে চাউলের গলি ও মসলা গলির রাস্তা নিচু হওয়ায় হালকা বৃষ্টিতে কাঁদা-পানিতে পরিনত হয় সড়কটি। এ বাজারটি থেকে সরকার প্রতি বছর টেন্ডারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী আদায়কৃত রাজস্ব এর হিংস ভাগ অর্থ উক্ত বাজার উন্নয়নে বরাদ্ধ দেওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন বাজারের উন্নয়নের কোন দৃশ্য চোখে পড়েনি ব্যবসায়ীদের। বাজারটির নিরাপত্তার স্বার্থে বাজার বণিক সমিতি নামের একটি সংগঠন রাতে বাজারের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে বলে জানায় ব্যবসায়ীরা। তবে সংশ্লিষ্ট কোন প্রশাসন বুধহাটা বাজার উন্নয়নে কোন অনুদান বা বরাদ্ধ বণিক সমিতির কাছে দেননি বলে জানান সাধারণ সম্পাদক ফারুক ঢালী। তবে বণিক সমিতির উদ্যোগে কয়েকটি উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়েছে বলে জানান তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ডাবলু বলেন, বুধহাটা বাজার থেকে সরকার প্রতি বছর প্রায় ২০লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। কিন্তু বাজারটি উন্নয়নের জন্য উপজেলা বা জেলা প্রশাসনের নিকট থেকে আজ পর্যন্ত আমরা কোন সহযোগীতা পাইনি। তিনি বাজারের সার্বিক উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ানুর রহমান বলেন, বাজার থেকে আদায়কৃত রাজস্ব সরকারী ফান্ডে জমা দেওয়া হয়। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বাজারের সংস্কারের বিষয়ে যদি কোন আবেদন আসে তবে আমরা অবশ্যই বিষয়টি আমলে নেবো। এমতাবস্থায় ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র বুধহাটা বাজারের সার্বিক উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন ও সাতক্ষীরা ০৩ আসনের সংসদ সদস্যের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।