সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দুই জেলায় প্রাণ গেল ৭ কৃষকের

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

এফএনএস: বাংলাদেশের কৃষিজীবী জনগোষ্ঠীর জন্য মে মাস মানেই মাঠে ধান কাটার ব্যস্ত সময়। কিন্তু এ সময় প্রকৃতির অতর্কিত এক প্রলয়-বজ্রপাত-নিয়ে এলো মর্মান্তিক বিপর্যয়। গতকাল রোববার দুপুর ও বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং কিশোরগঞ্জ জেলায় বজ্রপাতের ঘটনায় সাতজন কৃষক নিহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও আখাউড়ায় বজ্রপাতে মারা গেছেন চারজন। দুপুরের পর হঠাৎ আকাশ কালো করে শুরু হয় ঝড় ও বজ্রসহ বৃষ্টি। ঠিক সে সময়ই মাঠে ধান কাটারত অবস্থায় বজ্রপাতে মারা যান নাসিরনগরের টেকানগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৩৫)। একই উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকাতেও একজনের মৃত্যু হয়, তবে তার পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। এদিকে বিকেলে আখাউড়ায় বজ্রপাতে আরও দুজন কৃষকের মৃত্যু হয়-তারা হলেন শেখ সেলিম মিয়া (৬০) ও জামির খাঁ (২২)। ওই সময় তারা মাঠে খড় গোছাচ্ছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাত তাদের প্রাণ কাড়ে। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল আলম ও আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন পৃথকভাবে এসব মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানিয়েছে, বজ্রপাতজনিত স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হবে। একই দিনে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব ও কুলিয়ারচরে বজ্রপাতে মারা গেছেন আরও তিন কৃষক। তারা হলেন ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ফারুক মিয়া (৬০), শ্রীনগরের ফয়সাল মিয়া (২৮) এবং কুলিয়ারচরের হাজারীনগরের কবির মিয়া (২৫)। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে তারা সবাই নিজ নিজ বাড়ির পাশে মাঠে কাজ করছিলেন। বজ্রপাতের আঘাতে তারা গুরুতর আহত হন এবং স্বজনরা দ্রæত ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উম্মে হাবিবা জুঁই বলেন, “বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বজ্রপাতে আহত তিনজনকে নিয়ে আসা হয়, কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় তারা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।” এ ধরনের বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা প্রতিবছরই ঘটে থাকে, কিন্তু সচেতনতা ও আগাম সতর্কতার অভাবে প্রাণহানির সংখ্যা কমছে না। কৃষকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা মাঠে কাজ করা, বজ্রপাতের সময় নিরাপদ স্থানে না যাওয়ার প্রবণতা এ ধরনের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। প্রশাসন এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, গ্রামাঞ্চলে বজ্রপাত বিষয়ে প্রচার ও আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন-এসব এখন সময়ের দাবি। একইসঙ্গে কৃষকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও অত্যন্ত জরুরি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com