দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ আর মাত্র কয়েকদিন তারপর দূর্গোৎসবের মহা আয়োজনে, দেশজুড়ে চলছে প্রস্তুতি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দূর্গপুজা। সময়ের ব্যবধানে দৃশ্যতঃ দূর্গোৎসব বাঙ্গালী উৎসবে পরিনত হয়েছে আর তাই সর্বত্র উচ্চারিত হয় এবং হচ্ছে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ, সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্যরে লীলাভূমি সাতক্ষীরা। মহালয়ার মধ্যমে আগামী শুক্রবার শুরু হচ্ছে দূর্গোৎসব। সাতক্ষীরার মন্ডবে মন্ডবে চলছে শষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। ৬০৫ টি পূজামন্ডবে আনন্দ আয়োজনে উদযাপিত হবে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১১, আশাশুনি উপজেলা ১০৮, দেবহাটা উপজেলায় ২১, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৫১, শ্যামনগর উপজেলায় ৭০, কলারোয়া উপজেলায় ৪৮, তালা ও পাটকেলঘাটায় ১৯৬ টি পূজা মন্ডবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কাঙ্খিত এবং সফল করতে মন্ডবে মন্ডবে চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। এই প্রতিনিধি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পূজা মন্ডব পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষ করেছেন কোন কোন মন্ডবে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ, কোন কোন মন্ডবে পুরোদমে চলছে প্রতিমা তৈরীর কর্মযজ্ঞ তবে অধিকাংশ মন্ডবে তৈরী করা প্রতিমায় শিল্পীরা রং তুলির মাধ্যমে অনন্য সুন্দর করার প্রানন্তকর চেস্টায় রত। শিল্পীদের সুনিপুন ছোয়া আর অঙ্কনে প্রান ব্যস্ত হয়ে উঠছে প্রতিমা গুলো। রংতুলির আঁচড় আর বহুবিধ রংয়ের ব্যবহার প্রতিমাগুলোকে আকর্ষনীয় করে তোলার চেষ্টার সামান্যতম ঘাটতি নেই। মন্ডব গুলোতে চলছে আলোকসজ্জা রং বেরং এর আলপনা, ডেকরেশন, সুরম্য, সৌন্দর্যমন্ডিত গেট, কোন কোন মন্ডবে আলোকসজ্জা শুরু হয়েছে, দূর্গপূজা উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা ও তাদের পরসা সাজিয়ে ব্যবসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশ সার্বক্ষনিক তাদরকি করছেন। প্রশাসনের বার্তা শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্প্রীতির সেতু বন্ধনে দূর্গোৎসব উদযাপিত হবে আর এ লক্ষে কাজ করছে। পূজা মন্ডবের নেতৃবৃন্দ, পুরোহীত, মন্দির কমিটি নেতৃবৃন্দদের সাথে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন মত বিনিময় করেছেন। সব ধরনের সহযোগিতা করছেন। জেলার উপজেলার গুলোতেও উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ মন্ডব গুলোর নিরপত্তা নিশ্চিত করা সহ প্রতিটি পূজা মন্ডবে পুলিশ এবং আনছার বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করেছেন একই সাথে মন্ডব কর্তৃপক্ষ নিজেদের তত্তাবধানে স্বেচ্ছ্বাসেবক নিয়োজিত করছেন যা পুলিশ প্রশাসন এর সাথে সমন্বয় করে চলেছেন। একদিকে মন্ডবে মন্ডবে চলছে শিল্পীর রংতুলির আচড় এবং পূজা মন্ডব কেন্দ্রীক বর্ণাঢ্য আয়োজন অন্যদিকে পূজা উপলক্ষে পূজা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কেনা কাটা বেড়েই চলেছে। নতুন পোশাক, স্বর্ণ, ইমিটেশন, প্রসাধনী, ফর্ণিচার, আসবাব পত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ব্যাপক ভাবে বিক্রি হচ্ছে। সাতক্ষীরা শহরের বিপনী বিতান গুলোতে কেনাকাটা জমজাট থেমে নেই উপজেলা পর্যায়ের দোকান পাট গুলোতে। সাতক্ষীরায় বর্তমান সময়ে সর্বত্র চলছে দূর্গাপুজার আবহ। চারিদিকে উৎসব, উচ্ছাস আর আনন্দ আয়োজন। দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা গত ১৪ অক্টোবর মহলয়ার পর শুরু হয়েছে। দুর্গাপূজার ক্ষন গননা, বাংলা পঞ্জিকা মতে গত দুই বছর অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও এবারে রয়েছে ভিন্নতা। আগামী ২০ অক্টোবর শক্রবার পালিত হবে মহাষষ্ঠী ২১ অক্টোবর শনিবার পালিত হবে। মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর রোববার পালিত হবে মহা অষ্টমী, মহানবমী পালিত হবে ২৩ অক্টোবর, সোমবার ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে শারদীয় দূর্গোৎসব। উল্লেখ্য গতকাল সাতক্ষীরা সদর কাটিয়া সার্বজনীন পূজা মন্ডবে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক সাবেক প্রধান শিক্ষক সমরেশ কুমার দাশ, সদস্য সচিব মনোরঞ্জন কর্মকার, মন্দির কমিটির সভাপতি গৌর দত্ত, সহ-সভাপতি শংকর রায় ও কোষাধ্যক্ষ প্রশান্ত গাইন।