বায়োজিদ বোস্তামী উজ্জ্বল \ বাংলাদেশের অতি পরিচিত ফল তরমুজ। গ্রীষ্মের তাপদাহে প্রাণ সঞ্চারে, সতেজে আর উদ্দীত্বতায় তরমুজের জুড়ি নেই। দৃশ্যত: এই ফল গ্রীষ্মকালীন উৎপাদন কিন্তু এই হীমশীতল আবহাওয়া তথা শীত মৌসুমেও তরতাজা তরমুজের উৎপাদন চোখে পড়ছে যা সত্যিকার অর্থেই বিস্ময়ের বিষয়। শীত ঋতুতে তরমুজ উৎপাদন অসম্ভব হিসেবে ক্ষেত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে অবলিলায় তরমুজ উৎপাদনে সফলতার হাসি হাসছে চাষী গোলাম রব্বানী। প্রচেষ্টা, আগ্রহ, অধ্যবসায় আর ইচ্ছাশক্তি যে কোন অসাধ্যকে আয়ত্তে আনা সম্ভব। আর এমনই উদ্ভাবনী এবং সৃষ্টিসুখের উলাসে রত গোলাম রব্বানী। সাতক্ষীরার দেবহাটার পারুলিয়া ইউনিয়নের সাপমারা খালের অববাহিকা বরসায় তিনি গড়ে তুলেছেন তরমুজ বাগান। চোষে মুখে খুশির ঝিলিক আর স্বীয় সৃষ্টির উদ্মাদনায় উচ্ছ্বাসিত চাষী গোলাম রব্বানীকে এই চাষে অতিরিক্ত কোন ভূমির প্রয়োজন পড়েনি, ব্যক্ত করেন। চিংড়ী ঘেরের ভেড়িবাঁধে তিনি ফলিয়েছেন সোনার ফসল। পরিচর্যা খরচও বেশি নয়। অন্যদিকে বীজ সরবরাহ করেছে দেবহাটা কৃষি দপ্তর। বিনামূল্যের বীজ এবং উন্নতমানের বীজই তরমুজের ফলনকে ত্বরান্বীত করেছে। তিনি জানান আর কয়েকদিন পরেই বাজারজাত করবেন। ততোক্ষণে প্রতিটি তরমুজ ৪/৫ কেজিতে পরিণত হবে। খরচ অপেক্ষা লাভ কয়েক গুণ বেশি। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারি হারে ৮০/৯০ টাকা, তিনি আরও জানান বর্তমান বাজারজাত করণের উপযোগি হওয়া এই ফলের বীজ তিনি গত ৪০/৪৫ দিন পূর্বে রোপন করেছেন। বৈজ্ঞানিক নাম (আর্লি ড্রাগন) এমনটি জানালেন দেবহাটা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান। সামান্য ভেড়িবাঁধ (দশ বারবিঘা জমির) এ পাঁচশত পিচ তরমুজের তরতাজা অবস্থান প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা হতে দর্শনার্থীরা আসছে। তরমুজ দেখছেন, তরমুজের সাথে ছবি তুলছেন এবং গোলাম রব্বানীর এই অপরুপ উৎপাদনের সাথে নিজেদেরকে একাকার করতে চাইছেন অনেকে। তার দেখাদেশি ইতিমধ্যে বিভিন্ন জন (আর্লি ড্রাগন) তরমুজ চাষে ঝুঁকছে। বিনা খরচে বাড়তি কোন জমি ব্যতিত ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ অর্থনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। অলসের হাত কর্মীর হাতে পরিণত হচ্ছে। গোলাম রব্বানীর পথে হাটাদের অনেকে বেকার যুবক আবার অনেকে ঘেরে কেবলমাত্র মাছ চাষ করতেন তারাও তরমুজ চাষে সফলতা আর আর্থিক লাভবানের পথ খুজছেন। গোলাম রব্বানী জানান আমি বিশেষভাবে স্মরণ করছি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি কৃষি দপ্তরে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের যারা প্রতিনিয়ত খোজ যেনন এবং আমার তরমুজ বাগান পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে চলেছেন। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান তরমুজ চাষের এবং অতি উৎপাদন মুখিতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন চাষাবাদের বিকল্প নেই, আগ্রহ এবং কর্মতৎপরতা আমাদের উৎপাদনকে আরও এগিয়ে নেবে। তিনি কৃষকদের জন্য আগামীতে আরও অধিকতর সফলতা বয়ে আনুক এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।