দেবহাটা অফিস \ দুই বছর পাঁচ মাসের শিশু আল আমিন আরিয়ান হত্যাকারী ঘাতক মা সোনালী আক্তার লিজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিশু পিতা আ: রহিম বাদী হয়ে সোনালী আক্তার লিজা ও তার পরকীয়া প্রেমিক আল আমিন ওরফে আরিয়ানকে আসামী করে দেবহাটা থানায় মামলা করেছে। দেবহাটা থানা ওসি হযরত আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সোমবার রাতে গ্রেফতার করে সোনালী আক্তার লিজাকে। অন্যদিকে পরকীয়া প্রেমিক আল আমিন ওরফে আরিয়ান পলাতক আছে। পুলিঃ জানায় তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গতকাল ঘাতক লিজাকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিঃশ এবং সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সহিদুল হাসানের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে ঘাতক সোনালী আক্তার লিজা। পরকীয়া প্রেমিক এর সরবরাহ করা ফোরাডন নামক বিশ নিজ শিশু পুত্র আল আমিন আরিয়ানকে পানির সাথে মিশিয়ে পান করিয়ে হত্যা করেছে। ঘাতককে আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। শিশু আরিয়ান হত্যা দেবহাটা সহ আশপাশের জনমানুষকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে। শোকাহত হতবিহ্বল এলাকাবাসি। এই মৃত্যু কেউ মানতে পারছে না। গতকাল পারুলিয়ার সাহাজানপুরে আরিয়ানের পিতা ভূমিতে চির নিন্দ্রায় শায়িত আরিয়ানের কবরের পাশে শত শত লোকের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জীবন শুরুর পূর্বেই জীবন হারানো শিশুর শেষ গন্তব্যে উপস্থিত হয়েছে অনেকে অশ্রম্ন বিসর্জন দিয়েছে। সকলের মুখে একটাই কথা মা কিভাবে তার সন্তানকে হত্যা করলো? কতটুকু হিংস্র, বর্বর এবং পাষাণ হলে নিজ শিশুপুত্রকে হত্যা করতে পারে। যেভাবে লিজা এবং পরকীয়া প্রেমিক আল আমিনের পরকীয়ার সূত্রপাত তা জানালেন হতভাগ্য সন্তানহারা পিতা আব্দুর রহিম। জীবন জীবিকার কারণে আব্দুর রহিম কুমিল্লার ইটভাটায় কাজ করছিল, যে কারণে বাড়ীর বাইরে অবস্থান করতে হয়। এই সুযোগে তার স্ত্রী লিজা পরকীয়া প্রেমিক আল আমিনের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। পারুলিয়া বাজারে দেখা সাক্ষাতের পাশাপাশি আমার বসতবাড়ীতে দেখা করা সহ মেলামেশা করতো। এক পর্যায়ে বিষয়টি আমি জানতে পারি এবং মোবাইল ফোন নিয়ে নিই। স্ত্রীর থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়ায় সে রাগ করে আমার বাড়ী থেকে শ্বশুর বাড়ী (তার পিতার বাড়ী) তে চলে আসে। আমি আমার শ্বশুরের ফোনের মাধ্যমে মাঝে মধ্যে স্ত্রীর সাথে কথা বলতাম আমার কলিজার টুকরা শিশু পুত্র আরমানের খোজ খবর নিতাম। গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় আমি আমার দাদী শ্বশুরড়ী মর্জিনা খাতুনের ফোনে লিজার সাথে কথা বলি এবং আমার ছেলের খোজখবর নিলে সে জানায় আমার ছেলে অসুস্ঃথ্য হয়ে পড়েছে। ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে। তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। আমার শিশু পুত্রকে সখিপুর হাসপাতালে নিলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে সেখানে নিলে খুলনায় নেওয়ার পরামর্শ দিলে খুলনায় নেওয়ার পথে আমার পুত্রের মৃত্যু হয়। ২ মার্চ আমি জানতে পারি আমার পুত্র মারা গেছে। ঐ দিনই আমি আমার শ্বশুর বাড়ী গুচ্ছগ্রামে যেয়ে আমার পুত্রের লাশ নিয়ে আসি আমার নিজ বাড়ী ভাতঃশালায় নিয়ে আসি এবং দাফন করি। দাফন শেষে আমার পুত্রের মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞাসা করলে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন একেক জন একেক ধরনের কথা বলন এক পর্যায়ে গত ৯ মার্চ বিকেলে লিজা স্বীকার করে যে তার পরকীয়া প্রেমিক আল আমিন আমার পুত্রকে হত্যা করার জন্য কাগজে মুড়ানো ফুরাডন জাতীয় বিষ দেয় এবং উক্ত বিষ পানিতে মিশিয়ে আমার ছেলেকে খাওয়ায় এবং উক্ত বিষক্রিয়ায় আমার ছেলে মৃত্যুবরণ করে যা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। এভাবেই এক শিশু পুত্র নিষ্পাপ মানব সন্তানের হত্যার নির্মম, নিষ্ঠুর উপাখ্যান সৃষ্টি করলো ঘাতক মাতা লিজা আর তার পরকীয়া প্রেমিক আল আমিন।