এফএনএস: গত শুক্রবারও দেশের তিনটি নদীর পাঁচ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপরে অবস্থান করছিল। সেই পরিস্থিতি আরও অবনতি হয় গতকাল শনিবার। এদিন দেশের ১১ নদীর ১৭ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার উপরে ওঠে। এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের শঙ্কা, উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সুরমা ব্যতীত দেশের সকল প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি স্থানে মাঝারি থেকে ভারী কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ সকল প্রধান নদ নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। আর এর ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপৎসীমার কাছাকাছি অথবা উপরে অবস্থান করতে পারে। এসময়ে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিরও অবনতি হতে পারে। কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ধরলা, দুধকুমার, সুরমা, কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, খোয়াই, পুরতন সুরমা, সোমেশ্বরী ও কংস নদীর ১৭ পয়েন্টের পানি এখন বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা আছে দুই পয়েন্টের পানি। পুরাতন সুরমার দেরাই পয়েন্টের পানি এবং কংস নদীর জারিয়াঞ্জাইল পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণবাগে ২২৬ মিলিমিটার। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার ও ভৈরববাজারে ১৭৫ মিলিমিটার, সিলেটের জকিগঞ্জে ১৫০ ও মনু রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে ১৪৫, সিলেট পয়েন্টে ১৪৩, হবিগঞ্জে ১৪৮ এবং সিলেটের শেরপুরে ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভারতের আগরতলায় সর্বোচ্চ ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া চেরাপুঞ্জিতে ১২০ এবং ত্রিপুরার কৈলাশহরে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।