সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাজার হাজার টন চাল আমদানিতেও বাজারে প্রভাব পড়েনি বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ শীতজনিত রোগীর চাপ রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি হাসপাতালে বাড়ছে সাতক্ষীরা পৌর—মেয়রের বরখাস্তের আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট স্কুল থেকে ফেরার পথে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত মোবাইল—ইন্টারনেটে কর প্রত্যাহার না হলে এনবিআর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার মেট্রিক টন চাল টিউলিপের উচিত ক্ষমা চাওয়া: ইউনূস বিজিবি—জনগণ ‘শক্ত অবস্থান’ নেওয়ায় ভারত পিছু হটেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশে এলপি গ্যাসের তীব্র সঙ্কটের আশঙ্কা বাড়ছে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৩

এফএনএস : দেশে এলপি গ্যাসের তীব্র সঙ্কটের আশঙ্কা বাড়ছে। মূলত আমদানি জটিলতার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ এলপি গ্যাসই বেসরকারি কোম্পানিগুলো সরবরাহ করে। কিন্তু ডলার সংকটে এলপিজি অপারেটররা পণ্য আমদানির জন্য চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছে না। এলপিজি ব্যবসায়ীদের নতুন ঋণপত্র খুলতে নানা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছে অনেক কোম্পানি। দ্রুত এলপিজি আমদানি বাধা না কাটলে আগামীতে তীব্র সঙ্কটের আশঙ্কা রয়েছে। এলপিজি খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের বাজারে এলপি গ্যাসের বার্ষিক চাহিদা ১৪ লাখ টনের মতো। আর তার ৯৮ শতাংশই আমদানিনির্ভর। প্রায় ৫০ লাখ বাসাবাড়িতে পণ্যটির গ্রাহক রয়েছে। স্থানীয় ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিয়েই বেশির ভাগ এলপিজি অপারেটর ব্যবসা পরিচালনা করছে। এমন পরিস্থিতিতে পণ্য আমদানির জটিলতায় স্থানীয় বাজারে ব্যবসায় লোকসান বাড়লে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধেও ঝুঁকি তৈরির শঙ্কা থাকে। বর্তমানে দেশের বাজারে এলপিজি খাতের অন্তত ১৫টির মতো ছোট কোম্পানি রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টন এলপিজি আমদানি করা অপারেটরের সংখ্যাই বেশি। আর ওই পরিমাণ পণ্য আনার জন্য ঋণপত্র খুলতে যে অর্থের প্রয়োজন তা একটি ব্যাংকের মাধ্যমে সম্ভব হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে অন্তত দুটি ব্যাংকের সহায়তা লাগছে। তাছাড়া এলপিজি আমদানিতে এলসি খোলার জন্য কোম্পানিগুলো যে ধরনের শর্ত মেনে চলে নানা কারণে তাও এখন মানতে পারছে না। ফলে কাগজপত্রের জটিলতা কাটিয়ে পণ্য খালাস করে বাজারে আনতে ৭ থেকে ১০ দিনের মতো সময় লেগে যাচ্ছে। তাতে বাজারে পণ্য সরবরাহে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে অপারেটররা যে দাম দিয়ে ডলার কিনছে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এলসি সেটেলমেন্টে তাতে বড় ধরনের আর্থিক ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। সূত্র জানায়, দেশের বাজারে এলপি গ্যাসের ৩২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা রয়েছে। আর ২৬টি (স্যাটেলাইটসহ) অপারেটরের মাধ্যমে ওই ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয় জ¦ালানি সংকটের প্রেক্ষাপটে তুলনামূলকভাবে এলপিজি সাশ্রয়ী হওয়ায় শিল্পে ও ব্যক্তিগত গাড়িতেও এর ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু বাজার প্রসারে বিদ্যমান এ সংকট দীর্ঘায়িত হলে ছোট কোম্পানিগুলো টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। এদিকে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (লোয়াব) এলপিজি আমদানিতে ঋণপত্র খোলা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিতে লোয়াব মূলত বিনামার্জিনে যাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ঋণপত্র খুলতে পারে সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো জবাব না পাওয়ায় পুনরায় চিঠি দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে এলপিজি অপারেটরদের মতে, গত বছরের ফেব্র“য়ারি থেকে এলসি নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। তারপর কয়েক মাস তা কমলেও গত অক্টোবরের পর তা আবারো তীব্র হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হলেও ডলার সংকটে ব্যাংকগুলো থেকে সে অনুযায়ী সহায়তা মিলছে না। তাছাড়া এলপিজি আমদানি করতে গিয়ে এলসি সেটেলমেন্টে ডলার সংক্রান্ত জটিলতা বেশি হচ্ছে। তাতে এলসি দায় মেটাতে গিয়ে কোম্পানিগুলো বড় আকারে পুঁজি হারাচ্ছে। সার্বিকভাবেই তার প্রভাবে ব্যবসা সংকুচিত হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের চিফ অপারেটিং অফিসার (ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং) এমএম জসিম উদ্দিন জানান, সময় মতো এলসি খুলতে না পেরে এ খাতের অধিকাংশ কোম্পানি কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই জটিলতায় ৩০-৪০ শতাংশ ব্যবসা কমে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির কাঁচামালের সংকট নেই। দামও আগের চেয়ে সাশ্রয়ী কিন্তু ঋণপত্র জটিলতায় পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com