ধুলিহর প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বরখাস্ত করার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শিক্ষাঙ্গন। ৩য় দিনের মত মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহাবুবর রহমানের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় ধুলিহর ইউনিয়নসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক মানুষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সভাপতি মাহাবুবর রহমানের কুশপুত্তলীকা দাহ করে ঝাটাঁ মিছিল করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে স্বপদে বহাল ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহাবুবুর রহমানের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। আর নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অনিদিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন করে চলবেন বলে জানান। গত ২০ আগস্ট সকালে বিদ্যালয়ের ভেতরেই প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন বিদ্যালয়ের সভাপতি। শিক্ষককে লাঞ্চিত ও বরখাস্ত করার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবে না বলে জানান। এ ব্যাপারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, শিক্ষার্থীদের কাছে বই বিক্রিসহ স্কুল ফান্ডের টাকা উত্তোলনের মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামকে বরখাস্ত করেন। এ কারনে আমরা ৩য় দিনের মত আমাদের কর্মসূচি অব্যহত রেখেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত রাখবেন বলেও জানান তারা। বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোন দূর্নীতি করেননি। পূর্ব শত্রুতার কারনে প্রধান শিক্ষককে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করতে থাকেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। একারনে প্রধান শিক্ষককে স্বপদে বহাল রেখে স্কুল কমিটির সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে আমাদের সন্তানেরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। সন্তানদের কর্মসূচিতে নিজেদের সমর্থন আছে জানিয়ে অভিভাবকেরা আরও বলেন, পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মাহাবুবর রহমানের কাছে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা জিম্মী। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আসু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মামুনুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদকে জানান, আমি গতকাল সকালে স্কুলে গিয়ে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের সাথে আমার কথা হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষককে বরখস্ত করা এটা নিয়ম অনুযায়ী হয়নি। প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত ও তার বিরুদ্ধে তদন্ত করার ম্যানেজিং কমিটি একতিয়ার নেই। এব্যাপারে যশোর শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে বিস্তারিত জানিয়েছি। আগামী ১/২ দিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে ইনশালাহ। শিক্ষার্থীরা জানান আমাদের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত থাকবে।