বিশেষ প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গত শুক্রবার বাদ মাগরিব হতে নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদে ও পাক রওজা শরীফে পবিত্র শবে বরাত উদযাপন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথমে বাদ আছর পীর আম্মা, পীরজাদা, প্রয়াত খাদেম আলহাজ্জ মৌ. আনছার উদ্দীন আহমদ’র মাজার জেয়ারত, মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থান জেয়ারত করা হয়। বাদ মাগরিব আলহাজ্জ হাফেজ মোঃ শামছুল হুদার পরিচালনায় পীর-এ কামেল সুলতানুল আউলিয়া কুতুবুল আকতাব গওছে জামান আরেফ বিলাহ হজরত শাহ্ ছুফী আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহ্ছানউলা (রঃ) এঁর পাক রওজা শরীফ জেয়ারত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। বাদ এশা মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান জেয়ারত শেষে নলতা শরীফ জামে মসজিদে মিলাদ-মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এশার নামাজের পর নলতা পাক রওজা শরীফের খাদেম আলহাজ্জ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক’র সভাপতিতে ও মিশনের সহ-সভাপতি আলহাজ্জ মোঃ সাইদুর রহমান’র সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন, শানপুকুর জামে মসজিদের ইমাম মৌঃ মোঃ আব্দুল হাকিম। মিলাদ শরীফ পরিচালনা করেন, নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদের মুয়াজ্জিনমৌঃ মোঃ খানজাহান আলী। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন, আহছানিয়া মিশন হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রধান হাফেজ মোঃ হাবিবুর রহমান, নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদের ছানি ইমাম আলহাজ্জ হাফেজ মোঃ শামছুল হুদা, আহ্ছানিয়া মিশন দ্বীনিয়া মাদ্রসার শিক্ষক মাওলানা মোঃ রহমত আলী, মিশনের কার্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ্জ আবুল ফজল। গজল পরিবেশন করেন, কার্যনির্বাহী সদস্য, নলতা কেন্দ্রীয় আহ্্ছানিয়া মিশন মোঃ আশরাফুল ইসলাম, মোঃ রবিউল ইসলাম, মোঃ আনিছুর রহমান, তাওলাদ শরীফ পাঠ করেন, মৌঃ মোঃ খানজাহান আলী, কেয়াম পরিবেশন করেন মোঃ কামরুজ্জামান। মোনাজাত পরিচালনা করেন, আলহাজ্জ মাওলানা মোঃ আবু সাঈদ। অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, ইসলামের সর্বাধিক ফজিলতপ‚র্ণ ও বরকতময় রজনীগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, আলাহ তাআলা এ রাতে বান্দাদের এক বড় অংশের গুনাহ মাফ করে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। তাই এ রাতকে লাইলাতুল বারাত বলা হয়। পবিত্র শবে বরাত ভাগ্য নির্ধরণের রাত। এ রাতে আলাহ পরবর্তী বছরের জন্য মানবজাতির রিজিক ও ভাগ্য নির্ধারণ করেন এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সব পাপ ক্ষমা করে দেন। এ রাতেই যারা পরবর্তী বছরে জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করবে, তাদের তালিকা করা হয়। এই রাতে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে পরিশুদ্ধ জীবনযাপনের জন্য আলাহর অনুগ্রহ লাভ করা যায়। পাপ-পঙ্কিলতায় জর্জরিত কোনো ব্যক্তির জন্য খাঁটি তওবা করে আলাহর নৈকট্য লাভের অপ‚র্ব সুযোগ এনে দেয় এ মহিমান্বিত রজনী। যারা রিজিক অনুসন্ধানকারী, তারা প্রার্থনা করবে রিজিকের জন্য। বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করবে বিপদগ্রস্ত মানুষ। এই রাতে আলাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন রহমত ও দয়ার ভান্ডার। তাই মুসলিম স¤প্রদায়ের কাছে এটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। আলোচনা সভার শেষে মসজিদে পবিত্র শবে বরাতের নফল নামাজ, অজিফা, তেলাওয়াত, দোয়া-দুরুদ ও তাহাজ্জদ নামাজ ও এবাদত বন্দেগী করা হয়। রাত সাড়ে ৫ টায় পাক রওজা শরীফে মিলাদ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও নলতার উত্তর মাঘুরালী জামে মসজিদে বৃহস্পতিবার বাদ যোহর পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। উত্তর মাঘুরালী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির আয়োজনে এবং কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান বিশ্বাস’র এর সভাপতিত্বে পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে আলোচনা, মিলাদ শরীফ ও শেষে মিলাদদাতা ও সকল কবরবাসীর রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. ফারুক হোসেন। কেয়াম পরিবেশন করেন মো. কামরুল ইসলাম।