বিশেষ প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদে ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্যের মধ্যে দিয়ে ২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বাদ মাগরিব হতে পবিত্র আখেরী চাহার সোম্বা উপলক্ষে মিলাদ-মাহফিল, আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানের শুরুতে নলতা পাক রওজা শরীফের খাদেম আলহাজ্জ মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে পবিত্র কোরআন তেলোয়াত করেন, মসজিদের মুয়াজ্জিন মৌঃ খানজাহান আলী। মিলাদ শরীফ পরিচালনা করেন, হাফেজ মোঃ হাবিবুর রহমান। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মূল্যবান আলোচনা করেন, নলতা আহ্ছানিয়া মিশন হেফজখানার শিক্ষক হাফেজ মোঃ হাবিবুর রহমান, আহ্ছানিয়া মিশন দ্বীনিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতী মাওলানা মোঃ রহমত আলী, নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্জ মাওলানা মোঃ আবু সাইদ, মিশনের কার্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ্জ আবুল ফজল প্রমূখ। মিশনের সহ-সভাপতি আলহাজ্জ শিক্ষক সাইদুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে হামদ, নাতে-রাসুল, মুরশিদি ও কেয়াম পরিবেশন করেন, মোঃ শাহীন আলম, মোঃ রবিউল ইসলাম, মোঃ আনিছুর রহমান, মোঃ আশরাফুল ইসলাম। দোয়া পরিচালনা করেন, আলহাজ্জ মাওলানা মোঃ আবু সাইদ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আখেরী চাহার শোম্বা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পালিত অত্যন্ত মর্যাদাপ‚র্ণ দিবস। আখেরী চাহার শোম্বা আরবী ও ফার্সি শব্দ শব্দ-যুগল; এর আরবী অংশ আখেরী, যার অর্থ “শেষ” এবং ফার্সি অংশ চাহার শোম্বা, যার অর্থ “চতুর্থ বুধবার”। সফর মাসের শেষ বুধবার মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) দীর্ঘ রোগ ভোগের পর সুস্থ বোধ করেন। আলাহর প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এই পৃথিবীতে ৬৩ বছর হায়াত পেয়েছিলেন। এর মধ্যে কখনোই তিনি বড় ধরনের কোনো রোগ ব্যাধির কবলে পড়েননি। কাফের মুশরিকদের শত অত্যাচার ও নির্যাতনের মাঝেও তিনি ছিলেন অবিচল। শেষ পর্যন্ত আলাহ তায়ালা মুহাম্মদ (সঃ) কে পৃথিবী থেকে উঠিয়ে নেবেন তার আগে রোগে আক্রান্ত হলেন। ক্রমেই তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ২৮ সফর বুধবার মহানবী (সঃ) সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার। মহানবী (সঃ) এঁর সুস্থতার খবরে সাহবীগণ উচ্ছাসিত হয়ে উঠেন। তারা আনন্দিত চিত্তে আলাহ্র দরবারে শুকরিয়া স্বরুপ হাজার হাজার দিনার সদকা-খয়রাত এবং বহু সংখ্যক উট-দুম্বা কুরবানি করেন। রাসুলুলাহ (সঃ) জীবনে শেষবারের মতো রোগমুক্তি লাভ করেন বলে দিনটিকে মুসলমানেরা প্রতিবছর ‘শুকরিয়া দিবস’ হিসেবে পালন করেন। তাঁরা নফল ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে দিবসটি অতিবাহিত করেন। তাই উম্মতে মুহাম্মদীর আধ্যাত্মিক জীবনে আখেরি চাহার শোম্বার গুরুত্ব ও মহিমা অপরিসীম। সাহাবিদের অনুসরণে এ দিনে দান-খয়রাত করেন। অনেক মসজিদে মিলাদ-মাহফিলের আয়োজন করা হয়।