শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০৬ অপরাহ্ন

নানান সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সংকটের মুখে মৃৎশিল্পীরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩

কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

এম এম নুর আলম ॥ কালের আবর্তে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে সাতক্ষীরার ঐতিহ্য মৃৎশিল্প। নানান সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে এ শিল্পীরা। জেলার আশাশুনিসহ বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে দেখা যায়, কুমোরপাড়াগুলো যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা একটি সোনালী ছবি। অসংখ্য কুটিরের নয়নাভিরাম মৃৎ শিল্পীদের যা সহজেই যে কারোর মনকে আনন্দিত করে। এক সময় জেলার এই কুমোরপাড়াগুলো মৃৎ শিল্পীর জন্য বিখ্যাত ছিল। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা প্রযুক্তির উন্নয়ন নতুন নতুন শিল্প সামগ্রীর প্রসারের কারণে এবং প্রয়োজনীয় পৃষ্টপোষকতা ও অনুকুল বাজারের অভাবে এ শিল্প আজ বিলপ্তির পথে। মৃৎ শিল্পীদের অধিকাংশ পাল সম্প্রদায়ের প্রাচীন কাল থেকে ধর্মীয় অর্থ-সামাজিক কারণে মৃৎশিল্পে শ্রেণিভুক্ত সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরে অন্য সম্প্রদায় ও মৃৎ শিল্পকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করে। বর্তমান বাজারে দস্তা, এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাষ্টিকের পত্রের চাহিদার কারণে এখন আর আগের মত মাটির জিনিসের চাহিদা কমতে চলেছে। ফলে ক্রেতারা মাটির জিনিসপত্র আগের মতো আগ্রহের সঙ্গে ক্রয় করে না। সে কারণে অনেক পুরানো শিল্পরাও পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মাটির জিনিসপত্র তার পুরানো ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে। আর এ পেশায় যারা জড়িত এবং যাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন মৃৎশিল্প, তাদের জীবন যাপন একেবারেই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিন কাটালেও জেলার মৃৎশিল্পীরা এখনো স্বপ্ন দেখেন, কোন একদিন কদর বাড়বে মাটির পণ্যের। সেদিন হয়তো আবার তাদের পরিবারে ফিরে আসবে সুখ শান্তি। এব্যাপারে আশাশুনি সদরের পালপাড়া এলাকার কয়েকজন মৃৎ শিল্পী বলেন, মাটির জিনিসের বিক্রয় একে বারে নাই বললেও চলে। এতে করে আমরা ন্যায্য মূল্যে পাই না। আগের সময় ছাড়া এখন প্রায় অর্ধেক মূল্যে বিক্রয় করতে হচ্ছে। এছাড়া জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে মিল না থাকায় প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে হচ্ছে। আমাদের প্রতিটা জিনিস তৈরি করতে যে খরচ আর আমরা যে দামে বিক্রয় করি তাতে সংসার চালানো কষ্ট সাধ্য হয়ে যায়। সচেতন মহল মনে করেন, বর্তমান সমায়ে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মৃৎশিল্পের তৈরী কৃত পণ্যের চাহিদা কম। এছাড়া বিজ্ঞান সম্মত ভাবে প্রস্তুত করা জিনিস ব্যবহার করছেন সাধারণ ক্রেতারা, তাই মৃৎশিল্প দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আর আমরা প্রাচীন সংস্কৃতিকে দিন দিন হারিয়ে ফেলছি। তাই মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রেখে বাজার সৃষ্টি করা জরুরী।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com