এফএনএস স্পোর্টস: এমনটা হয়তো ভাবেনি বিশ্বজোড়া কোন ক্রিকেটভক্তই। এমনকি ভাবেনি হয়তো খোদ নামিবিয়ার সমর্থকরাও। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ৫৫ রানে হারিয়ে দিলো আইসিসির সহযোগী সদস্য নামিবিয়া। তাসমান পাড়ের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে প্রথম পর্ব থেকে সুপার টুয়েলভে যাওয়ার লড়াইয়ে নামিবিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলো সদ্য এশিয়া কাপ জিতে আসা দাসুন শানাকার শ্রীলঙ্কা। জিলংয়ের কার্ডিনিয়া পার্কে টস জিতে নামিবিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলো শ্রীলঙ্কা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে নামিবিয়া। ১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে এশিয়ার চ্যাম্পিয়নরা ১৯ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় ১০৮ রানে। লঙ্কানদের ৫৫ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই অঘটনের জন্ম দিলো গেরহার্ড এরাসমাসের দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশ্বকাপের গত আসরের প্রথম পর্বেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। সেই ম্যাচে নামিবিয়াকে মাত্র ৯৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছিলো শ্রীলঙ্কা। সেই হারের প্রতিশোধই যেন নিয়ে নিলো নামিবিয়া। কার্ডিনিয়া পার্কে টস জিতে নামিবিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট হারালেও শেষের দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আইসিসির সহযোগী দেশটি। ছোট তবে কার্যকরী কয়েকটি ইনিংসেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৬৩ রানের সংগ্রহ পায় নামিবিয়া। ইনিংসের শুরুতে ১৬ রানেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে নামিবিয়াকে চাপে ফেলে দেয় লঙ্কান বোলাররা। তৃতীয় উইকেটে স্টিফান বার্ডকে নিয়ে ৪১ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেন অধিনায়ক ইরাসমাস। দলীয় ৭৬ রানে ইরাসমাসকে ফেরান হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। অধিনায়কের বিদায়ের পরপরই বিদায় নেন স্টিফান বার্ডও। এরপর জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক আর জেজে স্মিট মিলে ৭০ রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায় নামিবিয়াকে। শেষের দিকে এই দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়েছেন লঙ্কান বোলাররা। ফ্রাইলিঙ্কের ২৮ বলে ৪৪ রানের ইনিংসের সঙ্গে স্মিটের ১৬ বলে ৩১ রানেই ১৬৩ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে নামিবিয়া। লঙ্কানদের হয়ে দুই উইকেট নেন প্রমোদ মাধুশান। ১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই কুশল মেন্ডিসকে ফেরান ডেভিড উইস। এক ওভার বাদে বেন শিকোঙ্গোর করা ইনিংসের ৪র্থ ওভারেই পরপর দুই উইকেট হারিয়ে আরো বেশি চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। প্রতিরোধের চেষ্টা করেও ফিরে যান ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও। ৪০ রানেই ৪ উইকেট পড়ে গেলে হারের শঙ্কায় পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। পঞ্চম উইকেটে আরো একবার প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন ভানুকা রাজাপাকসে আর অধিনায়ক দাসুন শানাকা মিলে। তবে ৩৪ রানের জুটি গড়ার পরই রাজাপাকসেকে ফেরান স্কল্টজ। এক ওভার বাদে হাসারাঙ্গা ডি সিলভাকেও সাজঘরে পাঠান স্কল্টজ। লঙ্কানদের শেষ আশা হয়ে ক্রিজে ছিলেন অধিনায়ক শানাকা। তবে দলকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি তিনিও। ২৩ বলে ২৯ রান করে ফেরেন শানাকা। ৮৮ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। দুই বল পরেই প্রমোদ মাধুশান ফিরে যান শূন্য হাতেই। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে চামিকা করুণারতœ আউট হয়ে গেলে ৯২ রানেই ৯ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। সেশ উইকেট জুটিতে দুশমন্থ চামিরা আর ম অহেশ থিকসানা মিলে ১৬ রান যোগ করলে সেটাতে কমেছে শুধু হারের ব্যবধানই। ১৯তম ওভারের শেষ বলে চামিরাকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের অলআউট করেন ডেভিড উইজ। শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের ইনিংস থামে ১০৮ রানে। এশিয়ার চ্যাম্পিয়নদের ৫৫ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের শুভ সূচনা করলো আইসিসির সহযোগী দেশটি। নামিবিয়াদের হয়ে দুইটি করে উইকেট নেন ডেভিড উইজ, বার্নার্ড স্কল্টজ আর বেন শিকোঙ্গো। সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড: নামিবিয়া: ২০ওভারে ১৬৩/৭ (বার্ড ২৬, ফ্রাইলিঙ্ক ৪৪, স্মিট ৩১*; থিকসানা ৪-০-২৩-১, মাধুশান ৪-০-৩৭-২)। শ্রীলঙ্কা: ১৯ ওভারে ১০৮ (রাজাপাকসে ২০, শানাকা ২৯; উইজ ৪-০-১৬-২, শিকোঙ্গো ৩-১-২২-২, স্কল্টজ ৪-০-১৮-২)। ফলাফল: নামিবিয়া ৫৫ রানে জয়ী।