এফএনএস স্পোর্টস: প্রথমার্ধের মলিনতা কাটিয়ে অসাধারণ এক গোলে লড়াই জমিয়ে তোলার আভাস দিলেন লাউতারো মার্তিনেস। কিন্তু পরক্ষণে আলেক্সিস সানচেস বহিষ্কার হওয়ায় আর কোনো নাটকীয়তার জন্ম দিতে পারল না ইন্টার মিলান। নিজ আঙিনায় হেরেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে মঙ্গলবার রাতে শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে ১-০ গোলে জিতেছে ইটালিয়ান ক্লাবটি। তবে প্রথম লেগে ২-০ গোলে জেতায় দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে পরের ধাপে উঠেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। শুরুর অনেকটা সময় লিভারপুলের খেলায় তেমন মরিয়া ভাব ছিল না। বল দখলে রাখাতেই ছিল তাদের মনোযোগ। ব্যবধান ঘোচাতে ইন্টারের প্রয়োজন ছিল নিখুঁত ফুটবল খেলার, তার ধারে কাছেও যেতে পারেনি তারা। স্বাগতিকদের তিনটি প্রচেষ্টা পোস্ট ও ক্রসবারে লাগে। তা না হলে ‘হাইভোল্টেজ ম্যাচটির’ রোমাঞ্চ অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। আত্মবিশ্বাসী লিভারপুল প্রথম মিনিটেই আক্রমণ শাণায়। পাঁচ মিনিট পর লক্ষ্যে প্রথম শট নেয় ইন্টার। কোনোটিই অবশ্য প্রতিপক্ষকে ভাবানোর মতো কিছু ছিল না। এভাবেই দুই দলের অগোছালো ফুটবলে অনেকটা সময় কেটে যাওয়ার পর ৩০তম মিনিটে প্রথম ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয় লিভারপুল। বাঁ দিক থেকে ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের ফ্রি কিকে জোয়েল মাতিপের হেড ক্রসবারে বাধা পায়। ৪১তম মিনিটে একটা ভালো সুযোগ পেয়েছিল ইন্টার। তবে ডি-বক্সে ডান দিকের দাগের ঠিক বাইরে থেকে হাকান কালহানোগ্লুর নিচু ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আলিসন। দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে আবারও দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় লিভারপুলের পথে। দিয়োগো জটার ডি-বক্সে উঁচু করে বাড়ানো বল এগিয়ে গিয়ে ক্লিয়ার করতে পারেননি ইন্টার গোলরক্ষক, বল ফাঁকায় পেয়ে যান মোহামেদ সালাহ। কিন্তু তার নিচু কোনাকুনি শট পোস্টে লাগে। প্রথমার্ধে বিবর্ণ হয়ে থাকা মার্তিনেস ৬০তম মিনিটে প্রথম ভালো একটি সুযোগ পান। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশ করেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। পরের মিনিটেই অসাধারণ নৈপুণ্যে লড়াই জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দেন মার্তিনেস। সানচেসের পাস ধরে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। বহুল কাক্সিক্ষত গোল পেয়ে ইন্টার শিবিরে লড়াইয়ে ফেরার যে উচ্ছ¡াস যোগ হয়, গোল উদযাপন শেষে খেলা শুরু হতেই তা মিলিয়ে যায়। থিয়াগো আলকানতারাকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সানচেস। প্রতিপক্ষে একজন কমে যাওয়ার সুযোগে আরও চাপ বাড়ায় লিভারপুল। কিন্তু এদিন দুর্ভাগ্য যেন আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরেছিল তাদের। ৭৭তম মিনিটে সালাহর আরেকটি শট পোস্টে লেগে ফেরে। পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল লিভারপুল। লুইস দিয়াসের শট গোলরক্ষককে এড়িয়ে লক্ষ্যেই ছিল, শেষ মুহূর্তে ছুটে এসে স্লাইড করে ফেরান আর্তুরো ভিদাল। এতগুলো সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও গোল না পাওয়া এবং ঘরের মাঠে হারের হতাশা থাকলেও ম্যাচ শেষে হাসিমুখেই মাঠ ছাড়ে ক্লপ ও তার শিষ্যরা। আরেক ম্যাচে রবের্ত লেভানদোভস্কির হ্যাটট্রিকে সালসবুর্ককে ৭-১ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৮-২ ব্যবধানে এগিয়ে শেষ আটে ওঠে বায়ার্ন মিউনিখ।