ব্রহ্মরাজপুর প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরা সদরে ৩ মাসের শিশু কন্যাকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা দেখে ফেলায় মাকেও পিটিয়ে হত্যা করার দায়ে পুলিশ শান্তা আক্তার আখি (৩০) নামের এক নারীকে আটক করেছে। আটক শান্তা আক্তার আখি সাতক্ষীরা সদর ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের নুনগোলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত খোদাবাক্সর মেয়ে। নিহতদ্বয় হলেন শান্তার মেয়ে আশরাফী (৩ মাস) এবং মাতা হোসনেয়ারা বেগম (৬৫)। স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে শান্তা তার মেয়েকে চুলার আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। এসময় শান্তার মা হোসনেআরা বেগম বিষয়টি দেখে ফেলার কারণে শান্তা তার মাকেও মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই ইসমাইল ও এএসআই শিললুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে শান্তা খাতুনকে হেফাজতে নেন এবং মরদেহ দুটি উদ্ধার করেছেন বলে জানান। স্থানীয়রা আরও জানান, শান্তা আক্তার আখি স্বাভাবিক মস্তিস্কের নারী ছিলেন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী এলাকার জনৈক আজহারুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। বুধবার স্বামীর সাথে মেয়ে আশরাফীকে নিয়ে নুনগোলা গ্রামের পিতার বাড়িতে বেড়াতে আসছিলেন শান্তা খাতুন। বৃহস্পতিবার সকালে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে চলে যান শান্তার স্বামী আজহারুল ইসলাম। এরপর দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। তবে ঠিক কী কারণে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে শান্তার ভাবি মহাসিনের স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন এবং প্রতিবেশি করুনা খাতুন ও ছখিনা খাতুনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান— শান্তার শ্বশুর বাড়িতে শ্বাশুড়ি ও ননদসহ অন্যান্যদের সাথে সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনমালিন্য চলছিল। সে কারণে রাগ ক্ষোভ থেকে এ ঘটনাটি ঘটতে পারে। এছাড়া সম্প্রতি সে মাঝে মাঝে বেশ অস্বাভাবিক আচরণ করতো। এব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শামিনুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান— ২০/০২/২৫ তাং দুপুর অনুমান ২টার সময় সাতক্ষীরা থানাধীন নুনগোলা গ্রামের মৃত খোদাবক্স মেম্বার এর বসত বাড়ির শয়ন কক্ষে তার মেয়ে আসামি (মানসিক ভারসাম্যহীন) শান্তা (৩০) তার ২ মাস বয়সের মেয়ে শিশু সন্তান আশরাফিকে চুলোর মধ্যে ফেলে পুড়িয়ে হত্যা করে। তখন তার মা হোসনেআরা বাধা দিলে তাকেও হত্যা করে পাশের বাড়িতে গিয়ে আসামি শান্তা বলেন তার মেয়ে ও মাকে মেরে ফেলেছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে ঘাতক শান্তা আক্তার আখিকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ মরদেহ দুটির সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।