দৃষ্টিপাত ডেস্ক॥ অবশেষে গাজায় যুদ্ধ বিরতি পাশ হলো। আন্তর্জাতিক সর্ববৃহৎ সংস্থা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে এই যুদ্ধ বিরতি পাশ হয়েছে। সংস্থাটির ভেটো প্রদানের অধিকারী বা ক্ষমতা প্রাপ্ত স্থায়ী সদস্য পাঁচটি দেশের কেউ ভেটো না দেওয়ায় যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব পাশের ক্ষেত্রে সামান্যতম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হইনি। উল্লেখ্য ইসরাইলের মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে অর্থাৎ কোন ধরনের ভেটো প্রদান করেনি। সেকারনে স্থায়ী পাঁচটি ও অস্থায়ী দশটি দেশের বৈঠক শেষে জাতিসংঘের মুখপাত্র বিশ্ববাসিকে এই বলে জানান দিয়েছে যে গাজায় ইসরাইল এক তরফা ভাবে গত ছয় মাস যাবৎ যে ভাবে বিমান হামলাও বোমাহামলা চালিয়ে নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদেরকে হত্যা করছে এই যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পাশের ফলে ইসরাইল এবং হামাস উভয়ই পাশ হওয়া প্রস্তাবকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবে বিধায় ধারনা করা যায় যে বিশ্বের সর্বোচ্চ সংস্থা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পাশের ফলে হামলা বন্ধ হবে, যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব পাশের পাশাপাশি হামাসের হাতে ইসরাইলি বন্দীদের মুক্ত করার বিষয়েও প্রস্তাব পাশ হয়। নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবটি পাশ হওয়ায় বিশেষ ভাবে যুদ্ধ হয়েছে ইসরাইল কারন ইসরাইল গত পাঁচমাসের অধিক সময় যাবৎ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে আসছে। হামাস এবং ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছাতে একাধিকবার মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও মিশর উভয় পক্ষকে নিয়ে বসলেও আলোচনার শেষ ওঠে না এবং ফলাফল শুন্যের কোঠাতেই থাকে। গতকাল কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা বলেছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বারবার বলে আসছিল যে গাজায় যুদ্ধ বন্দ হবে না, আমরা কেবল তখনই গাজা যুদ্ধ বন্ধ করবো যখন আমরা এই যুদ্ধে জয় লাভ করবো বা সাফল্য পাবো। ইতিপূর্বে গাজা যুদ্ধ বন্ধ একাধিক বার নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা এবং সর্বশেষ ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের কারন হেতু গাজায় যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব পাশ হইনি যে কারনে গাজার সর্বত্র দখলদার বাহিনী বিমান হামলা ও বোমা হামলা পরিচালনা করে আসছিল। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজা যুদ্ধ বন্ধের ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাশের ক্ষেত্রে ইসরাইলের দীর্ঘ দিনের বন্ধু কেবল বন্ধু নয় প্রকৃত ও প্রতিষ্ঠিত বন্ধুরাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের স্বার্থরক্ষা না করে, ইসরাইলের ইচ্ছা ও মতামতকে উপেক্ষা করে যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহন করে। যা বিশ্ব রাজনীতিতে বড় ধরনের চমক এবং বিস্ময় হিসেবে দেখছেন বিশ্ববাসি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যখন ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধ অর্থাৎ গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পাশ হচ্ছিল তখন ইসরাইলের একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পথে ছিল। যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব প্রস্তাব পাশ হওয়ার সাথে সাথে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুখিতার দেশের প্রতিনিধিদলকে তেল আবিবে ফিরে আসতে বলেন, এবং তারা তেল আবিবে ফিরে আসেন। ইসরাইল দৃশ্যতঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর যুদ্ধ বিরক্ত এবং তাজ্য যে কারনে তারা বলেছে ইসরাইল তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সর্বত্তম পন্থা গ্রহন করেছে এবং আরও করবে। এদিকে যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব হলেও ইসরাইলি বাহিনী গাজায় অবস্থান করছে এবং গতকালও বিচ্ছিন্ন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে গতকাল কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরা জানিয়েছে যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব পাশের পরের দিনই হামাস প্রদান ইসমাইল হানিয়া ইরান সফর করেছে। ধারনা করা হচ্ছে হামাসের জন্য অর্থনৈতিক ও সামরিক সুবিধা বলি নিয়ে আলোচনার জন্য এই সফর। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব পাশ করেছে এবং বিশ্ববাসি খুশি। কিন্তু দখলদার ইসরাইলি সেনারা গাজায় ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা চালিয়েছে। রাফা শহরের বিভিন্ন এলাকাতে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা ও তাদের গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে ইসরাইল হয়ত বা যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব মানবে না।