শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারতের ভিসা প্রতিবন্ধকতা দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীদের আস্থা \ বিদেশমুখি রোগীরা দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছে \ প্রাণবন্ত দেশের হাসপাতালগুলো শিক্ষার্থীদের তিনটি নতুন বই দিয়ে শিক্ষাবর্ষ শুরু করার পরিকল্পনা এনসিটিবি’র কর্মে তীব্র মৃত্যুঝুঁকি সত্ত্বেও খুবই স্বল্প ঝুঁকিভাতা পায় ফায়ার সার্ভিস কমীর্র কিছু মানুষ ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন: মির্জা ফখরুল বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক হাসপাতালে ভর্তি জাতীয় কবিতা উৎসব ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি টিউলিপের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকির অভিযোগ মেঘনায় দুই স্পিডবোটের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৩ গোপালগঞ্জে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ২৫ সুশাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ায় টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে: গভর্নর

নিরাপদ মনে না করা পর্যন্ত পল্টন এলাকায় চলাচল বন্ধ -ডিএমপি

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২

এফএনএস: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এই এলাকা (পল্টন) আমরা পরিপূর্ণ নিরাপদ মনে না করবো, ততক্ষণ এই এলাকায় যান চলাচল, জনসাধারণের চলাচল বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে আটকাচ্ছি না। তবে এখানে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কোনো অবকাশ নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে পল্টন থানার সামনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, বিএনপির দলীয় কার্যালয়কে আমরা এখন আইনের ভাষায় বলছি, প্লেস অব অকারেন্স (পিও)। যে কারণে আমরা বিএনপির দলীয় কার্যালয় কর্ডন করে রেখেছি। বিশেষজ্ঞ ও ক্রাইমসিনের লোকজন ছাড়া কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত পুলিশের কাজ শেষ না হচ্ছে, ততক্ষণ এখানে কোনো কিছুই হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরা (পুলিশ) (গত বুধবার) সতর্কতামূলক অবস্থানে ছিলাম। কাউকে মারধর, হামলা করার উদ্দেশ্য পুলিশের ছিল না। কিন্তু একপর্যায়ে যখন বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তা ব্লক করে অবস্থান নেয়, জনসাধারণের চলাচল বিঘœ সৃষ্টি করে, তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু একপর্যায়ে ডিসি মতিঝিলসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা হয়। যখন পুলিশের ওপর হামলা হয় তখন জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে, বাধ্য হয়েছি অভিযান পরিচালনার জন্য। পুলিশের ওপরে হামলা হয়েছে, ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে, নাশকতার চেষ্টা হয়েছে, নাশকতার সব ধরনের উপকরণ এখানে আনা হয়েছিল বলেও আমরা জানতে পারি। পরিচালিত অভিযানে নাশকতার যাবতীয় উপাদান আমরা এখান থেকে জব্দ করেছি। বিপ্লব কুমার সরকার আরও বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে একটি রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয়ে নাশকতার উপাদান পাওয়া যায়, ককটেল পাওয়া যায়। এটা খুবই দুঃখজনক। ককটেল রাখার জায়গা হিসেবেই আমরা এখন বিএনপি কার্যালয়কে ট্রিট করছি। আমাদের ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপাতত এই এলাকায় যান চলাচল এবং জনসাধারণের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যে রাস্তা ব্লক হওয়ার কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের আপনারা সরিয়ে দিয়েছেন, সে রাস্তাটি পুলিশ বন্ধ করেছে, কেন? এটি কখন খুলে দেয়া হবে? জানতে চাইলে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এটি একটি মারাত্মক বড় ঘটনাস্থল। এখানে অনেক ককটেল পাওয়া গেছে, এখানে আরও ককটেল থাকতে পারে। আমাদের কাছে বেশ কিছু ইন্টেলিজেন্স তথ্য রয়েছে। তার ভিত্তিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত এই এলাকাটি আমরা পরিপূর্ণ নিরাপদ মনে না করবো ততক্ষণ পর্যন্ত এই এলাকায় যান চলাচল, জনসাধারণের চলাচল বন্ধ থাকবে। আমরা কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে আটকাচ্ছি না। একান্ত জরুরি সেবার মানুষ, বিদেশগামী, অফিসগামী, গ্রামের মানুষদের ছেড়ে দিচ্ছি। এখানে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কোনো অবকাশ নেই। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে, ডিএমপির পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, রাজনৈতিক কার্যালয় ছাড়াও এখানে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, বাসা রয়েছে। তাদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য স্থাপন করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। তাদের নিরাপত্তা বিধান করা পুলিশের পবিত্র দায়িত্ব। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য যা যা প্রয়োজন, পুলিশের পক্ষ থেকে করা হবে। গত বুধবার থেকে তিন-চারশ লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে উলে­খ করে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, এখনো গোনা হয় নাই। আজ বা কাল, গ্রেপ্তারের বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া। তবে জোর দিয়ে বলছি, যে বা যারাই নাশকতার চেষ্টা করবে, জনসাধারণকে হুমকির মুখে ফেলবে, সাধারণ মানুষের শান্তি বিঘিœত করার প্রচেষ্টা চালাবে, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। সমাবেশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, এটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। যারা সমাবেশের আয়োজন করেছেন তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। জনসাধারণের চলাচল বিঘিœত হয় এমন কোনো স্থানে সমাবেশের অনুমতি দেবে না ডিএমপি। মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেকগুলো মামলার প্রক্রিয়া চলছে, বিস্ফোরক, নাশকতার চেষ্টা, পুলিশের ওপর হামলাসহ অনেকগুলো ধারায় মামলা হচ্ছে। এদিকে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে শটগান হাতে এক ব্যক্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার পরিচয় কি- তা নিয়ে চলছে আলোচনা। তবে তাকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। ওই ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কি না জানতে চাইলে বিপ্লব কুমার বলেন, গতকালের (গত বুধবার) ঘটনার পরে জননিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের সবাই ব্যস্ত রয়েছে। জার্সি পরা ওই ব্যক্তিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে পরে জানানো হবে। গত বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন অনেকে। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল, পানি, খিচুড়ি ও নগদ টাকা পাওয়া যায় বলে জানায় পুলিশ। অভিযান চলাকালে নয়াপল্টন থেকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহŸায়ক আমানউল­াহ আমান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তবে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে দলটিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়। পরে বিকল্প হিসেবে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ বা পূর্বাচলে বিএনপিকে সমাবেশ করতে বলা হয়। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া ঢাকার ভেতরে সমাবেশের বিকল্প ভেন্যু পেলে বিএনপি বিবেচনা করবে বলে এরইমধ্যে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com