এফএনএস স্পোর্টস: ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটের খেলা চলছিল। বিরতির পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো ক্রোয়েশিয়ার জয় তখন কেবলই সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ফুটবলে শেষ বাঁশি বাজার আগ পর্যন্ত তো শেষ বলে কিছু নেই! নাটকীয়ভাবে সমতা টেনে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিল নেদারল্যান্ডস। পরে অবশ্য আর তেমন কিছু করে দেখাতে পারল না ডাচরা। দুর্দান্ত জয়ে উয়েফা নেশন্স লিগের তৃতীয় আসরের ফাইনালে উঠল ক্রোয়াটরা। নেদারল্যান্ডসের রটারডামে বুধবার রাতে প্রথম সেমি-ফাইনালে ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে ৪-২ গোলে জিতেছে ক্রোয়েশিয়া। নির্ধারিত সময়ে ২-২ ছিল স্কোরলাইন। দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হবে স্পেন ও ইতালি। জয়ী দলের বিপক্ষে রোববার শিরোপা লড়াইয়ে নামবে ক্রোয়েশিয়া। শুরু থেকে বল দখলে ক্রোয়েশিয়া কিছুটা এগিয়ে থাকলেও প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারছিল না কেউ। সেভাবে পরিষ্কার সুযোগও তৈরি করতে পারছিল না দুই দল। ৩৪তম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগে ‘ডেডলক’ ভাঙে নেদারল্যান্ডস। ডি-বক্সে সতীর্থের পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন ২৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ডোনিয়েল মালেন। প্রথমার্ধে লক্ষ্যে একমাত্র শট এটিই! দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে নিজেদের বক্সে কোডি হাকপো ক্রোয়েশিয়ার লুকা মদ্রিচকে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ঠাÐা মাথার স্পট-কিকে সমতা টানেন আন্দ্রেই ক্রামারিচ। ৬৯তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন হাকপো। এর দুই মিনিট পরই স্বাগতিক দর্শকদের স্তব্ধ করে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে প্রথম স্পর্শে বাঁ পায়ের শটে জালে পাঠান মারিও পাসালিচ। সমতা টানতে মরিয়া নেদারল্যান্ডস শেষ দিকে চাপ বাড়ায় ক্রোয়েশিয়ার ওপর। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ভালো একটি সুযোগও এসে যায়, কিন্তু বক্সের ভেতর থেকে বাইরে মেরে হতাশ করেন হাকপো। এরপরই শেষ মুহূর্তে তাদের ওই সমতা ফেরানো গোল। একটি থ্রো-ইনের পর বক্সে জটলার ভেতর বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় ক্রোয়েশিয়া। ১০ গজ দূর থেকে হাফ-ভলিতে বল জালে পাঠিয়ে সমর্থকদের উল্লাসে ভাসান নোয়া লাং। অতিরিক্ত সময়ের লড়াইয়ে ম্যাচের ৯৮তম মিনিটে চমৎকার এক গোলে ক্রোয়েশিয়াকে আবার এগিয়ে নেন ব্রæনো পেতকোভিচ। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে বদলি নামা এই ফরোয়ার্ড ২৫ গজ দূর থেকে জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন। ১১০তম মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ হারায় নেদারল্যান্ডস। প্রথমে স্টিভেন বেরহাসের শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। আলগা বল পেয়ে পাশের জালে মারেন লাং। পাঁচ মিনিট পর বক্সে গোলরক্ষককে কাটিয়ে পাসালিচের শট ক্রসবারে লাগে। পরের মিনিটেই সফল স্পট কিকে ব্যবধান বাড়িয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন অধিনায়ক মদ্রিচ। পেতকোভিচ ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। একেবারে শেষ মুহূর্তে আবার নেদারল্যান্ডসের জালে বল পাঠান পেতকোভিচ, তবে অফসাইডের কারণে এ যাত্রায় গোল মেলেনি। এতে যদিও ক্রোয়াটদের জয়ের আনন্দ ভাঁটা পড়েনি।