এফএনএস স্পোর্টস: ফাইনালের মঞ্চে উঠতে ড্র যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল জয়রথে থাকার। পিয়াস আহমেদের গোলে সে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল দল, কিন্তু নেপাল ঘুরে দাঁড়ানো জয়ের চাওয়া পূরণ হয়নি। কিন্তু ঠিকই সমীকরণ মিলিয়ে নিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ। ভুবনেশ্বরের কালিংগা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাউন্ড রবিন লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে নেপালের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে বাংলাদেশ। তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে রাউন্ড রবিন লিগের সেরা দল হিসেবে ফাইনালের মঞ্চে উঠেছে পল থমাস স্মলির দল। আগের তিন ম্যাচে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কাকে ১-০, ভারতকে ২-১ ও মালদ্বীপকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ৬ করে পয়েন্ট নেপাল ও ভারতের। রাউন্ড রবিন লিগে শেষ ম্যাচে মঙ্গলবারই মুখোমুখি হবে ভারত ও মালদ্বীপ। এ ম্যাচের ফলের উপর নির্ভর করবে ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে কোন দল। নেপালের জন্য এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না। তাই আগের ম্যাচে ভারতের কাছে আট গোল হজম করা দলটি বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নেমে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলে। রক্ষণ অটুট রেখে পাল্টা আক্রমণের ছকে ছিল বাংলাদেশ। নবম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো পাসে রফিকুল ইসলাম নাগাল পাওয়ার আগেই ছুটে এসে গ্লাভসে নেন নেপাল গোলরক্ষক। ত্রয়োদশ মিনিটে সুমিত শ্রেষ্ঠার ভুল হেড পাসে খেলার ধারার বিপরীতে সুযোগ পেয়েছিলেন রফিকুল, কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন মালদ্বীপ ম্যাচে এক গোল করা এই ফরোয়ার্ড। বাংলাদেশের অর্ধে সিংহভাগ সময় খেলা হলেও পোস্টের নিচে বিশ্বস্ত দেয়াল হয়ে ছিলেন মোহাম্মদ আসিফ। পঞ্চদশ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে আইয়ুশ গালানের শট গ্লাভসের টোকায় কর্নার দিয়ে বের করে দেন এই গোলরক্ষক। ৩৩তম মিনিটে বক্সের একটু উপর থেকে দিপেশ গুরংয়ের বাঁকানো ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকে আবারও বাংলাদেশের ত্রাতা আসিফ। বিরতির আগে বাংলাদেশ জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দশ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তানভীর আহমেদের ট্যাকলে পড়ে যান কৃতিশ রেইনা। এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে বেঁধে যায় ধাক্কাধাক্কি। রেফারি শাহিদুল ইসলামকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেন, তানভিরকেও হলুদ কার্ড দেখান তিনি। নেপালের দিপেশকেও দেখান লালকার্ড। বেঞ্চে থাকা ২০ নম্বরকেও লালকার্ড পান। ৬৩তম মিনিটে সতীর্থের কাট ব্যাকে নিখুঁত প্লেসিং শটে পিয়াস আহমেদ নোভা লক্ষ্যভেদ করেন, এগিয়ে যাওয়ার উচ্ছ¡াসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ। এ গোলে ছিল প্রতিপক্ষের ভুলের অবদান। নেপালের এক ডিফেন্ডার ভুল পাসে বল তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক খেলোয়াড়ের পায়ে। সেই আক্রমণ থেকেই লক্ষ্যভেদ করেন ভারত ম্যাচে জোড়া গোল করা পিয়াস। ৬৭তম মিনিটে বদলি নিরঞ্জন মালা বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে সমতা ফেরান। তিন ডিফেন্ডার তার সামনে থাকলেও কেউই প্রতিরোধের চেষ্টা করেননি! শেষ দিকে পিয়াসের ক্রস ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। ৮৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণের সুবর্ণ সুযোগও নষ্ট করেন এই ফরোয়ার্ড। একক প্রচেষ্টায় আক্রমণে ওঠা পিয়াস গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল তার গায়ে মেরে বসেন। তারপরও লক্ষ্য পূরণের উচ্ছ¡াস নিয়ে মাঠ ছাড়ে দল।