বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কলারোয়ায় এতিমখানায় কম্বল বিতরণ কলারোয়ার খোরদোয় যুবদলের কর্মী সমাবেশ কুশোডাঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে সাবেক এমপিকে ফুলেল শুভেচ্ছা কলারোয়ায় বিএনপির সাংগঠনিক আলোচনা সভায় -সাবেক এমপি হাবিব তারুণ্য নির্ভর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিতে হবে দেবহাটায় যুব বিভাগের ইয়ুথ লিডারশীপ ট্রেনিং প্রোগ্রাম দেবহাটায় বাংলাদেশ স্কাউটস’র ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল সাতক্ষীরায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ শ্যামনগরে এইচডি ব্রিক্স ও এমবি ব্রিক্সকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা নিসচা’ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার এক জরুরি সভা শ্যামনগরে সুন্দরবন এ্যাপোলো হসপিটাল ও সেবা ক্লিনিক বন্ধ ঘোষণা

পতিত জমিতে পানি সিঙ্গাড়া চাষে আশার আলো দেখছে সাতক্ষীরার চাষিরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার \ সাতক্ষীরায় পতিত জমিতে শোভা পাচ্ছে পানিফল। যেসব জমি বছরের পর বছর জলাবদ্ধ থাকত সেই সব জলাশয়ে এখন সবুজের সমারোহ। অধিক লাভ হওয়ায় প্রতিবছর এর পরিধিও বাড়ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য নারী ও পুরুষের। তবে সময় মত বৃষ্টিপাত না হওয়াতে এবছর মটরের সাহায্যে পানি তুলে পানি ফল চাষ করতে হয়েছে। ফলে অন্য বারের তুলনায় এবার বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ন্যার্য মূল্য না পেলে পানি ফল চাষে এবার ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষীরা। তবে গত কয়েক বছর ধরে পানিফল চাষ করে সফলতা পেয়েছে এখানকার অনেক চাষি। ফলে চীনের খাদ্যতালিকার জনপ্রিয় এই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্যপণ্যটি এখন সাতক্ষীরায় বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে। সুস্বাদু এ ফলটি এখন জেলার কালীগঞ্জ, দেবহাটা, সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়াসহ বিভিন্ন উপজেলায় চাষ হচ্ছে জোরে সোরে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা কলারোয়া সড়কের দুধারে উপজেলার খাল- বিল জলাশয় জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের গাছ। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত ফলটি এখন জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। চাষিরা অক্লান্ত পরিশ্রম আর গবেষণা করে জলাবদ্ধ জায়গা সোনার ফসলে রূপ দিয়েছে। তাদের প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে জেলা কৃষি খামার বাড়ি। অতি পরিচিত পানিফলটি শুধু গ্রামেই নয় শহরের ফুটপাতের ফলের দোকানে স্থান করে নিয়েছে। সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়কের সখিপুর, ডেল্টা মোড়, কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, সাতক্ষীরা শহরের খুলনা রোড মোড়, পাকাপোল ব্রিজ, বড় বাজার সহ, সাতক্ষীরা কলারোয়া সড়কের দুধারে, সহ জেলার সব খানে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে পানিফল। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পানিফল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২৫শ টাকায়। তবে পানিফল চাষে সফলতা আসায় জলাবদ্ধ যুক্ত সাতক্ষীরা জেলায় বাণিজ্যিক ভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে আরো কয়েক বছর আগে থেকেই। পানি ফল দেখতে অনেকটা সিঙ্গাড়ার মতো বলে সাতক্ষীরার মানুষ একে ডাকে সিঙ্গারা ফল নামে। কাঁচা অবস্থায় এ ফল খাওয়ার প্রবণতা বেশি। আবার সিদ্ধ করে, রান্না করে কিংবা প্রক্রিায়াজাত করেও অনেকে খেয়ে থাকে। দেবহাটা উপজেলার কামটা গ্রামের শাহিনুর রহমান। তিনি পানি ফলের পাইকারি ব্যবসায়ী। তিনি জানান, পানি ফল চাষের মৌসুম আসার আগেই অর্ধ শতাধিক চাষিকে আমি বিনিয়োগ করেছি। ফলন আসার পর সেই চাষিদের নিকট থেকেই আমি ফল সংগ্রহ করছি। কলারোয়ার গোপিনাথপুর গ্রামের ইয়াকুব্বর আলী চলতি মৌসুমে সাত বিঘা জমিতে পানি ফলের চাষ করেছেন। তিনি জানান, কয়েক বছর ধরে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হত। কোন ফসল হতো না। যার কারণে গত কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধ জমিতে পানিফল চাষ শুরু করেছি। এতে বাড়তি লাভ হচ্ছে। খরচ কম আবার উৎপাদন ও বিক্রি বেশি। এ বছর তিনি আড়াই লাখ টাকারও বেশি পানিফল বিক্রি করতে পারবে বলে তার আশা। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা জানান, পানিফল যেমন শরীরের জন্য বেশ উপকারি। খেতেও সুস্বাদু। এই ফল শরীরের পুষ্টির অভাব দূর করে, ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। পানি সিঙ্গারা চাষীরা জানান, সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ঋণ সহায়তা পেলে আরো অনেক মানুষ পানিফল চাষ করবে। এতে একদিকে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হতে পারে তেমনি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অবদান রাখা সম্ভব হবে। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ১২০ হেক্টর জমিতে পানিফলের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২১ হেক্টর, কলারোয়া উপজেলায় ২১ হেক্টর, তালা উপজেলায় দুই হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ২৩ হেক্টর, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৫০ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় দুই হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় এক হেক্টর জমিতে। জেলায় ১৬শ জন কৃষক পানি ফলের চাষাবাদ করেছেন বলে সূত্র জানায়। পানিফলের শুধু খাদ্যগুণই নয় রয়েছে ঔষধি গুণও।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com