এফএনএস: নৌ ও বিমানবাহিনীতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস, সততা, পেশাগত দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গতকাল রোববার ‘নৌ এবং বিমানবাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ-২০২২’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী সদর দপ্তরে সংযুক্ত হন। আইএসপিআর জানায়, প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলি, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের ওপর গুরুত্ব আরোপের নির্দেশনা দেন। এই পর্ষদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে তাদের সুযোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে বিমানবাহিনীকে দেশমাতৃকার সেবায় আরও ভালোভাবে সম্পৃক্ত করবেন বলে শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী সদর দপ্তরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে ক্যাপ্টেন থেকে কমডোর, কমান্ডার থেকে ক্যাপ্টেন এবং লে. কমান্ডার থেকে কমান্ডার পদবিতে কর্মকর্তাদের পদোন্নতির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদ, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা নির্বাচন করবে। অন্যদিকে বিমানবাহিনীর ক্ষেত্রে এয়ার কমডোর, গ্র“প ক্যাপ্টেন এবং উইং কমান্ডার পদে যোগ্য প্রার্থীদের পদোন্নতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদের মাধ্যমে বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য মেধাবী, যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তারা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পদোন্নতি পাবেন। নির্বাচনী পর্ষদ-২০২২ আগামী বুধবার সমাপ্ত হবে। শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠনে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর প্রিয় মাতৃভ‚মির সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একটি অত্যাধুনিক, প্রশিক্ষিত ও শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বর্তমান সরকার প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন যুগোপযোগী সামরিক বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। বিভিন্ন দুযোর্গে নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুহূর্তে বিশেষত স¤প্রতি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা মোকাবেলায় নৌবাহনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসন ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আর্তমানবতার সেবা করেছেন। এর আগে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল নৌবাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদে এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান বিমানবাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। সশস্ত্র বাহিনীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা ও দিকনির্দেশনা সকল নৌ সদস্যদের কর্মস্পৃহা ও মনোবল বৃদ্ধি করেছে বলে নৌবাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। প্রধানমন্ত্রীর মূল্যবান দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ দক্ষ, সৎ ও উন্নত গুনাবলীর নেতৃত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নৌপ্রধান। বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, বিমানবাহিনী নির্বাচনী পর্ষদের কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হবে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের মেধা, মাঠ পর্যায়ে উলেখযোগ্য অবদান এবং বাস্তবসম্মত পেশাদারিত্বের পাশাপাশি দেশপ্রেমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।