## অপরাধীদেও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ # ভয়ংকর অনিয়মে সরকারের গচ্চা প্রায় ৪ কোটি টাকা
জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে \ মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্স এর ইলেকট্রনিক স্কোর বোর্ডটি পদ্ধতিগত সমস্যার কারণে লাগানোর পর থেকেই অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। এটি বসানোর আগে যথাযথ যাচাই-বাছাই হয়নি। এ কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির ভাষ্যনুযায়ী ‘জন্ম থেকে জ¦লচ্ছি’ স্কোর বোর্ডটির অবস্থা এখন তাই। এ নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে একটি প্রতিবেদন দেয়া হলেও সেটি অনেকটা দায়সারা গোছের। এ নিয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি আবদুলাহ আল ইসলাম জ্যাকবের মন্তব্য পেতে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোল কলটি রিসিভ না করায় নিউজে ওনার মন্তব্য সংযোজন করা যায়নি। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির ২৪তম সভা সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি আব্দুলাহ আল ইসলাম জ্যাকব। কমিটির সদস্য মাহবুব আরা বেগম গিনি, আব্দুস সালাম মূর্শেদী, এ. এম. নাঈমুর রহমান এবং জাকিয়া তাবাসসুম অংশ নেন। এ ছাড়া বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন সংস্থা প্রধানগণসহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের সার্বিক কার্যক্রম; জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক ক্রয়কৃত মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সে স্থাপিত ইলেকট্রনিক স্কোর বোর্ডটি ক্রয়ের পর থেকেই অকেজো থাকার কারণ ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সুইমিং ফেডারেশন কর্তৃক স্কোর বোর্ডটি ব্যবহারে কি ধরণের সমস্যা হয় সে সম্পর্কে সুইমিং ফেডারেশনের মতামত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ক্রীড়া কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকাস্থ মিরপুর সৈয়দ নজরুল ইসলাম জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে অটো টাইমিং স্কোরিং ম্যানেজমেন্ট সিষ্টেম সরবরাহ ও স্থাপন এবং ১০জন প্যাসেঞ্জার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন লিটফ বসানোর জন্য ইজিপি পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করা হয়। কাজটি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড-ডব্লিউইজিএ-ডিইউএল (জেভি)। প্রকল্পটির প্রথম বরাদ্দ ধরা হয় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ব্যয় ও সময় বাড়িয়ে এ প্রকল্পের অর্থ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্থ বরাদ্দ বাড়লেও বাড়েনি কাজের মান। এতো মূল্যেও ই-স্কোর বোর্ডটিতে ভয়ংকর ত্র“টি রেখে স্থাপন করে বিল বকেয়া পরিরশোধ হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ই- স্কোর বোর্ডটি বসানোর প্রথম থেকেই সঠিক ফলাফল আসলেও একেক সময় একেক লেন-এ ডিসপ্লেতে প্রদর্শিত হয়নি। কোন কোন ক্ষেত্রে বেশ কিছু সময় পর পর ডিসপ্লেতে ফলাফল প্রদর্শিত হয়েছে। এতে করে কোন প্রতিযোগিতা সঠিকভাবে নিরুপণ হয়নি। পরবর্তীতে পরীক্ষান্তে কর্তৃপক্ষ দেখতে পায় অটো টাইমিং স্কোরিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমটি সঠিক আছে; এ প্রতিবেদন দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করে দেয়া হয়। কিন্তু এর পেছনে কতিপয় ব্যক্তির যোগসাজস আছে বলে সংসদীয় কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছেছ, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক ক্রয়কৃত মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সে স্থাপিত ইলেকট্রনিক স্কোর বোর্ডটি অকার্যকর অবস্থায় যারা বুঝে নিয়েছে এবং বিল পরিশোধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটি কর্তৃক সুপারিশ করা হয়। অথচ বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমস এর সময় জাপানী সুইমিং কোচের মাধ্যমে জানা যায়, ই-স্কোর বোর্ডের টার্চ প্যাডটি ওই স্থানে ৫০ মিটারের জন্য কার্যকর ছিল না। স্থান ও মেজরমেন্ট অনুযায়ী টার্চ প্যাড বসানোর দরকার ছিল ২৫ মিটারের। কিন্তু ভয়ংকর অনিয়ম করে বসানো হয় ৫০ মিটার প্যাড সংবলিত স্কোর বোর্ড, যা গুরুতর প্রতারণা। এ পদ্ধতিগত ও অনিয়মতান্ত্রিক কাজের জন্য শুরু থেকেই অকার্যকর কয়েক কোটি টাকা মূল্যেও সুইমিং কমপ্লেক্সেও ই-স্কোর বোর্ডটি। এদিকে সভার সিদ্ধান্ত, সুপারিশ ও বাস্তবায়ন অগ্রগতিতে দেখা গেছে, শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইন্সটিটিউট এর বিভিন্ন কোর্সসমূহ চালু ও ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাস সম্প্রসারণের সুপারিশ ছিল সংসদীয় কমিটির। নথির তথ্যমতে, ইতিমধ্যে সাভার এর ছাত্র হোস্টেলের নীচ তলা, ছাত্রী হোস্টেলের ১ম ও ২য় তলা এবং আবাসিক ভবনের ১০টি ইউনিট (নীলকণ্ঠ) সংস্কার করা হয়েছে। প্রশিক্ষণার্থীদের আবাসনের জন্য আগের ১২০ জন থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৬০ জনের আবাসন। এর ফলে প্রতিমাসে ৩টির স্থলে ১২টি কোর্সে ৩৬০ জন প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন। এছাড়া ২০তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক কম-একাডেমিক ভবন, ১৫তলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস ও ১৫তলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস নির্মাণের লক্ষ্যে চূড়ান্ত পথনকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে এটির ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।