এফএনএস আন্তজার্তিক ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার একটি পরিত্যক্ত সোনার খনিতে কয়েক মাস ধরে আটকে থাকার পর অন্তত ১০০ জন মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভুক্তভোগীরা অনাহারে ও ডিহাইড্রেশনে মারা গেছেন। গত সোমবার খনি শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল এই তথ্য জানিয়েছে। খবর এপি ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের। প্রতিনিধিত্বকারী দলটি জানিয়েছে, এখনো খনিতে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক আটকা পড়ে আছেন। পুলিশ তাদের বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনার বিস্তারিত সম্পর্কে জানা যায়, দুই মাস আগে এই খনি ঘিরে দেশটির পুলিশ ও খনি শ্রমিকদের ঝামেলা শুরু হয়। কতৃর্পক্ষ খনিটি সেইসময় সিল করে দিয়েছিল এবং শ্রমিকদের বের করে আনার চেষ্টা চালায়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তারের ভয়ে শ্রমিকরা খনি ছেড়ে বের হতে চায়নি। এরপর থেকে সেখানেই তারা রয়ে যায়। খনি শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা মাইনিং অ্যাফেক্টেড কমিউনিটিস ইউনাইটেড ইন অ্যাকশন (ম্যাকুয়া) গোষ্ঠীর মুখপাত্র সাবেলো মঙ্গুনি জানান, উদ্ধার করা কিছু শ্রমিকের সঙ্গে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া গেছে। সেই ফোনের ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু মৃতদেহ একটি ব্যাগে মোড়ানো আবস্থায় রয়েছে। দ্বিতীয় ভিডিওতে কিছু খনি শ্রমিকের ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখা যাচ্ছে, তবে তারা এখনো জীবিত। তবে বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই ভিডিও এর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। বিবিসি বলছে, খনিতে এখনো শত শত লোক আটকে আছে। জেনারেল ইন্ডাস্ট্রিজ ওয়ার্কার্স অফ সাউথ আফ্রিকা (গিউসা) নামে একটি ট্রেড ইউনিয়ন এনিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, শার্টবিহীন অনেক পুরুষ নোংরা মেঝেতে বসে আছেন। তাদের মুখ ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে। ক্যামেরার বাইরে একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমরা ক্ষুধার্ত এবং আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, আমরা আপনাদের মাটির নিচে মারা যাওয়া লোকদের মৃতদেহ দেখাচ্ছি। আর এখানেই সব নয়… আপনারা কী দেখতে পাচ্ছেন মানুষ কীভাবে সংগ্রাম করছে? দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আরেক ভিডিওতে এক ব্যক্তি বলছেন, এখানে মানুষ ক্ষুধার কারণে মারা যাচ্ছে। তিনি ভিডিওতে মৃতের সংখ্যা ৯৬ বলে উল্লেখ করেন এবং খাবার ও জরুরি সেবা সরবরাহের আবেদন করেন। ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই ভিডিও গত শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে। উদ্ধার প্রচেষ্টার নেতৃত্বদানকারী দেশটির খনিজ সম্পদ বিভাগ বিবিসিকে জানিয়েছে, সোমবারের অভিযানে খনির মধ্যে একটি খাঁচা নামানো হয়। এরপর মানুষ বোঝাই করার পর ওপরে তোলা হয়। উদ্ধারকাজ চলছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।