এফএনএস বিদেশ : টানা বর্ষণ ও দেশটির উত্তরাঞ্চলের পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন হিমবাহ গলে সৃষ্ট ভয়াবহ এ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ এখন পানির নিচে রয়েছে। দিন যত গড়াচ্ছে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরিবর্তে তা বেশি এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে। ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকা সত্তে¡ও দেশটিতে প্রায় ১ হাজার ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে জিও নিউজ। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) শনিবার জানিয়েছে, বন্যাজনিত কারণে গত ২৪ ঘন্টায় ২৬ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে গত জুন থেকে শুরু হওয়া দেশটিতে বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ২৯০ জনে পৌঁছেছে। এই নিহতদের মধ্যে ৪শ জনের বেশি শিশু রয়েছে। এনডিএমএ জানিয়েছে, মোট আহতের সংখ্যাও ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। জিও নিউজ জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখোয়া ১৩৮ এবং বেলুচিস্তানে ১২৫ এবং সিন্ধুতে কমপক্ষে ১৮০ জন মারা গেছে। বন্যার কারণে কমপক্ষে ১৪ লাখ ৬৮ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় সাড়ে ৭ লাখ গবাদিপশু মারা গেছে। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির কারণে, বর্তমানে বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখাওয়া, সিন্ধু এবং পাঞ্জাব জুড়ে ত্রাণ শিবিরে ৫ লাখ এরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক অনুমান ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে রাখা হয়েছে, তবে এখনও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সাথে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে, পাকিস্তান সরকারী সংস্থা এবং বেসরকারি এনজিওগুলি তাদের ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে যাকে ‘মহাকাব্য অনুপাতের মানবিক বিপর্যয়’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। পাকিস্তানের ফেডারেল দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রী শাজিয়া মারি বলেছেন, এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ২৩ হাজার ৯১৯ পরিবারকে ২৫ হাজার রুপি করে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। তিনি জানান, এই খাতে এখন পর্যন্ত ১৮.২৫ বিলিয়ন রুপি বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে, সামরিক কর্মকর্তাদের সাথে জাতীয় বন্যা প্রতিক্রিয়া ও সমন্বয় কেন্দ্রে একটি সংবাদ সম্মেলনে, পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে পাকিস্তানকে আরও সমর্থন করার আহŸান জানিয়েছেন। জিও নিউজ জানিয়েছে, ফ্রান্স থেকে প্রথম মানবিক সহায়তা নিয়ে একটি ফ্লাইট শনিবার সকালে ইসলামাবাদে অবতরণ করেছে। এর আগেও বেশ কয়েকটি দেশ থেকে সাহায্য এসেছে।