এফএনএস বিদেশ: পাকিস্তানে বন্যার কারণে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিবিসি জানিয়েছে, বন্যার কারণে পাকিস্তানে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। গত শুক্রবার পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছরের জুন মাস থেকে ৯০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। তাদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ গেছে ৩৪ জনের। পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের সিন্ধু প্রদেশের শুক্কুর এলাকার রাস্তায় বন্যার্তদের জীর্ণ তাঁবুর লাইন দেখা গেছে। সেখানকারবাসিন্দারা আশ্রয়ের খোঁজে ঘুরছে। অনেকেই রাস্তায় শুধু বিছানা পেতে বসে আছে। তাদের অন্যসব জিনিসপত্র বানের পানিতে ভেসে গেছে। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে এবং পয়ঃনিষ্কাশন পাইপ থেকে দিয়ে বেরিয়ে এসেছে প্লাস্টিক বর্জ্য। পানিতে ব্যাপকহারে ময়লা আবর্জনা রয়েছে। সে কারণে পানি নিষ্কাশনের গতি কমে গেছে। পানিবাহিত রোগের শঙ্কায় দিন পার করছেন বাসিন্দারা। সিন্ধু প্রদেশে সপ্তাহজুড়েই বৃষ্টি হচ্ছে। সে কারণে দ্রুত বাড়ি ফেরার আশাও দেখছে না সাধারণ লোকজন। শুধু সিন্ধু প্রদেশেই বন্যায় ৩০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে। আরো বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যেখানেই উঁচু জায়গা দেখছে, সেখানেই তাঁবু টাঙিয়ে থাকার ব্যবস্থা করছে বিপদে পড়া লোকজন। গত শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা পাকিস্তানের জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ। আন্তর্জাতিক আরো সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে পাকিস্তান।শেহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠকও করেছেন। তিনি বলেছেন, এবারের বন্যার কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা ২০১০-১১ সালের বন্যায় ক্ষতির মতো। এর আগে পাকিস্তানের জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী শেরি রেহমান জানিয়েছেন, সে দেশে সাধারণত তিন থেকে চার চক্রে বৃষ্টি হয়। তবে এবার মৌসুমি আট চক্রের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্ম ঋতু শুরু হওয়ার পর থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে পাকিস্তানে। এর জেরে দেশব্যাপী প্রায় চার লাখের বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের দুর্যোগ ত্রাণ সংস্থা ওসিএইচএ (অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স) গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, পাকিস্তানে অন্তত এক লাখ ৮৪ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে ত্রাণ শিবিরে এসেছে। সূত্র: বিবিসি।