মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন

পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, ঝুঁকিতে ৩০ লাখ শিশু

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

এফএনএস বিদেশ: স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান। দেশটির এক-তৃতীয়াংশ পানিতে ডুবে আছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণের প্রভাব সারা দেশে ১১৬টি জেলার ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। যার মধ্যে ৬৬টি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদপত্র দ্য ডন, এএনআই। পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) তথ্যানুসারে, গত জুন থেকে কয়েক দফা বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১১শ’র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩৮০টি শিশু রয়েছে। জন আহত হয়েছে আরও ১৬শ মানুষ। প্রায় ৩ লাখের বেশি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং সাড়ে ৬ লাখ বাড়িঘর আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে। এছাড়াও রাস্তা, সেতু, স্কুল, হাসপাতাল এবং জনস্বাস্থ্য সুবিধা সহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বুধবার খাইবার পাখতুনখোয়ায় বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় দুর্যোগ-কবলিত এলাকায় পুনর্বাসনের জন্য ১০০ কোটি রুপির তহবিল ঘোষণা করেছেন তিনি। কালাম এবং সোয়াতের অন্যান্য অংশে তার সফরের সময়, প্রধানমন্ত্রী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে দেখা করেন এবং কালাম ও কাঞ্জুতে একটি সমাবেশে ভাষণ দেন যেখানে তিনি সংকট কাটিয়ে উঠতে ফেডারেল সরকারের সর্বাত্মক সাহায্যের প্রতিশ্র“তি দেন। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেডারেল সরকার ইতোমধ্যে ২৮ বিলিয়ন রুপি বরাদ্দ করেছে যা এনডিএমএ এবং বেনজির ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি আরও যোগ করেছেন, প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার রুপি এবং বন্যায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতিটি পরিবারকে ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। এদিকে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভয়াবহ বন্যার কারণে পাকিস্তানে ১ কোটি ৬০ লাখ শিশুসহ প্রায় ৩ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সা¤প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কারণে ত্রিশ লাখেরও বেশি শিশু মানবিক সহায়তার প্রয়োজন এবং পানি-বাহিত রোগ এবং অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউনিসেফ আরও বলেছে, বন্যায় প্রভাবিত এলাকায় ৩০ শতাংশ খাবার পানির ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে এবং ডায়রিয়া এবং জলবাহিত রোগ, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের পাশাপাশি চর্মরোগের ঘটনা ইতিমধ্যেই রিপোর্ট করা হয়েছে। এছাড়াও পানি-বাহিত এবং ভাইরাস-বাহিত রোগের পাশাপাশি অন্যান্য সংক্রামক রোগ যেমন করোনা ভাইরাসের এর ঝুঁকি বেড়েছে। আগামী দিনগুলিতে বন্যা আরও খারাপ হবে এমন অনুমান সহ, আরও বেশি মানবিক ও জনস্বাস্থ্যের প্রভাব সহ, জাতিসংঘ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচওর তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকারগুলি হল বন্যা-আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলির অ্যাক্সেস দ্রুত স¤প্রসারিত করা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইউনিসেফ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় শিশু ও পরিবারের জরুরি প্রয়োজনে সাড়া দিতে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com