এফএনএস স্পোর্টস: সল্টলেকের যুব ভারতী স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইটের টাওয়ার নেই। বিমানবন্দর পাশেই। নিরাপত্তার কারণে এখানে আধুনিক লাইট স্থাপন করা হয়েছে। যেটি ভারতের আর কোনো স্টেডিয়ামে নেই বলে তাদের দাবি। চমৎকার আলো। লাইটের দিকে তাকালে চোখে লাগবে না। এই মাঠে ট্রাফ স্থাপন করা হয়েছিল। সেটি অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের সময় তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন ঘাসের মাঠে ফিরেছে খেলা। অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক স্থাপন করা হলেও ফুটবল খেলার সময় ডাগআউটের সামনের অংশ সবুজ কার্পেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। যেন ট্র্যাকের ক্ষতি না হয়। যেটি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দেখা যায় না। সল্টলেকের অ্যাথলেটিক ট্র্যাক যতœ করে ব্যবহার করা হচ্ছে। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্যালারির চেয়ার। ডুরান্ড কাপ ফুটবলে গ্রæপ পর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পাঞ্জাব এফসির ম্যাচ। ৬৫ হাজার দর্শকের চেয়ার এই স্টেডিয়ামে। দর্শক খুব বেশি হলে হাতেগোনা কয়েক জন। মাঠে লড়াই করছে পাঞ্জাব এফসি এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ফুটবল দল। তাদের গলার আওয়াজ প্রেসবক্স থেকে শোনা যাচ্ছিল। প্রেসবক্সেও সাংবাদিকের সংখ্যা নেই। এক দুই জন ছাড়া। ইস্ট বেঙ্গল, মোহন বাগান, এধরনের দল হলে সাংবাদিকরা আসেন, কথাটা জানালেন দায়িত্বে থাকা লোকজন। চারদিকে নিরাপত্তার ছিল নিñিদ্র। গত বৃহস্পতিবার গ্রæপে নিজেদের শেষ লড়াইয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পাঞ্জাবের মতো দলের বিপক্ষে গোল শূন্য ড্র করে মাঠে ছাড়ে। এর আগে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করা সেই ম্যাচের ইতিহাসের পর আরও একটি চমক দেখাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। জিততে দেয়নি পাঞ্জাবকে। কৌঁসুলি ফুটবল খেলে আক্রমণের চেষ্টা করেছে ঠিক তেমনি প্রতিপক্ষের আক্রমণও ঠেকিয়েছে। তিন খেলায় এক হার দুই ড্র। সেনাবাহিনীর পারফরম্যান্স প্রশংসা কুড়িয়েছে। যারা প্রথম ম্যাচ দেখে বিচার করেছিল তাদেরকে জবাব দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন কোচ আবদুর রাজ্জাক এবং সহকারী কোচ কবির আহমেদ। ভালো জবাব দিয়েছেন মাঠের পারফরম্যান্সে। ১৩২তম ডুরান্ড কাপ ফুটবলে আমন্ত্রণ পেয়ে খেলতে এসেছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আশা ছিল না। ভালো খেলবে সেটাই লক্ষ্য ছিল। কারণ গ্রæপে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব, মোহন বাগান সুপার জায়ান্ট এবং পাঞ্জাব এফসির মতো বড় দলগুলোর সঙ্গে পেরে উঠারও কথা ছিল না। কিন্তু মাঠে লড়াই করতে নেমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যা পারফরম্যান্স করেছে তা এক কথায় অসাধারণ। ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের মতো দলের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে ২-২ গোলে ড্র করেছে। এ শুধু বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর দেশের ফুটবলের জন্য বড় উপহার। প্রথম ম্যাচে মোহন বাগানের বিপক্ষে ৫-০ গোলে হেরেছিল। মোহন বাগানের মতো বড় দলের বিপক্ষে নামার আগে কতটা প্রস্তুতি নিতে হয় সেটা ছিল না তা খেলা দেখেই বুঝা গেছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ম্যাচেই চমক দেখিয়েছে কোচ আবদুর রাজ্জাক এবং কবির আহমেদের দল সেনাবাহিনী। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পাঞ্জাব এফসি এবার আইএসএলে খেলবে। তারা চিন্তা করছে সেই টুর্নামেন্ট নিয়ে। আর সে কারণে বিদেশি ফুটবলার এনে শক্তি বাড়িয়েছে। সেনাবাহিনী খেলেছে তাদের নিজেদের ফুটবলারদের নিয়ে। আর পাঞ্জাব খেলেছে ¯েøাভেনিয়া, স্পেনের ফুটবলার নিয়ে। স্প্যানিশ ফুটবলার হুয়ান গঞ্জালো শুরু থেকেই ছিলেন। বিরতির পর নামেন ¯েøাভেনিয়ান ফুটবলার। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ আর পাঞ্জাব ম্যাচ হয়েছে অনেকটাই সমান সমান। এর মধ্যে পাঞ্জাব খুব একটা কাঁপিয়ে তুলতে পারেনি। এক দুই বার শট এলেও সেটি গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়েছেন। ভাগ্য খারাপ সেনাবাহিনীর। রক্ষণের কামরুল ইসলাম বাম পায়ে প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে দারুণ শট করেছিলেন। ভাগ্য ভালো পাঞ্জাবের। তাদের গোলকিপার রাভি কুপার আগেই সতর্ক চোখ রেখেছিলেন। তা না হলে গোলেই ঢুকে যেত। কোনো রকমে কর্নার করে বাঁচিয়েছেন। পাঞ্জাবের গ্রিসের কোচ স্টাইকস তুরুপের তাস নামালেন ¯েøাভেনিয়ার ফুটবলার লুকাকে। তার তেজ সামাল দিয়েছে সেনাবাহিনী। একটা শটও নিতে দেওয়নি সেনাবাহিনী। গোল করতে পারেনি পাঞ্জাব। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক কথায় সফলতা দেখিয়েছে ডুরান্ড কাপ ফুটবলে।