এফএনএস: আইসিডিডিআরবিতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এজন্য ওয়াসার পানি অনেক বড় কারণ হলেও তারা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মানুষকে পানি ফুটিয়ে খেতে বলে রসিকতা করছে। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ডায়রিয়া সংকট মোকাবিলা ও সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। বারসিক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে। এসময় পানিবাহিত রোগ থেকে নগরের মানুষকে রক্ষার জন্য নিয়মিত পানির মান পরীক্ষা করে জনগণকে জানানো এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করার সুপারিশ জানায় সচেতন নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনরা। নাগরিক সংলাপে বিশিষ্টজনরা আরও কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন; নগরের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে; এ বছর ডায়রিয়া কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব কেন বেশি তা পরীক্ষা করে জনগণকে দ্রুত সচেতন করতে হবে; যে এলাকা থেকে ডায়রিয়া রোগী বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে সেখানকার পানি পরীক্ষা করে কারণ রেব করে তা স্থানীয় মানুষকে জানাতে হবে। ওয়াসা এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের দ্রুত সেখানে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে হবে; ডায়রিয়া ও কলেরা আক্রান্ত রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় তাদের ক্ষেত্রবিশেষে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে; নগরে ওয়াসার পানি সরবরাহকৃত লাইন থেকে যখন কোনো আবাসিক ভবনে প্রবেশ করবে, সেখানকার পানির মান নিয়ন্ত্রণের জন্য ওয়াসা এবং স্থানীয় সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে ও খোলা রাস্তায় এবং ছোট দোকানে খাবার বিক্রেতাদের পানি বিশুদ্ধ রাখার জন্য নজরদারি বাড়াতে হবে। পবা’র সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশবিদ প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, নিরাপদ পানির অধিকার সাংবিধানিক কিন্তু রাষ্ট্র সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। যার কারণে ডায়রিয়াসহ নানা সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ওয়াসার এমডি হাসতে হাসতে বলেন পানি ফুটিয়ে খেতে, এটা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বক্তব্য। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে অধিকাংশ প্রকল্প গ্রহণ হয় বাস্তবিক সমীক্ষা ছাড়াই। তাই তো বিশাল প্রকল্প নেওয়া হয়, কোটি কোটি টাকা খরচ হয় কিন্তু তার সুফল মানুষ পায় না। নাগরিক সংলাপে বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, আইসিডিডিআরবিতে আসন নেই এটা একটা ভয়াবহ ব্যাপার। ওয়াসার উদাসীনতা আমাদের ব্যথিত করে। ওয়াসা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দিচ্ছে না, যে কারণে তারা পানি ফুটিয়ে খাবেন আর আমাদের ল্যাবে কিছু পাওয়া যায়নি বলে দায় সাড়ছেন। কিন্তু অন্যান্য জায়গায় নানান জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের নীতি-নির্ধারণী জায়গাগুলো থেকে নাগরিক অধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে। মানুষকে মর্যাদা দিচ্ছে না। সবাইকে পানির পরিমিত ব্যবহারে আরও সচেতন হওয়ারও আহŸান জানিয়ে পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, সরকারের সবচেয়ে বেশি ট্যাক্স প্রদান করেন নিম্ন আয়ের মানুষ কিন্তু তারাই নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সরকারকে নিম্ন আয়ের মানুষদের সমস্যাগুলো আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। নাগরিক সংলাপে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী বাস্তুহারা লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন রাশেদ হাওলাদার, নগর গবেষক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বারসিকের সমন্বয়ক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভাপ্রধান হোসনে আরা বেগম রাফেজা প্রমুখ।