বিষ্ণুপুর প্রতিনিধি \ স্বপ্নে পাওয়া চিকিৎসায় মিলছে কঠিন রোগ থেকে মুক্তি’— এমন প্রচারণা ও বিশ্বাসে পারুলগাছা গ্রামে জমে উঠেছে আহাম্মদ আলী গাজী (৫৫) নামে এক কথিত কবিরাজের স্বপ্নে পাওয়া গাছরা পাতার রস খাবার জমজমাট উপসে পড়া ভিড়। কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের পারুলগাছা গ্ৰাম এলাকার মৃত ছোদর আলী গাজীর ছেলে আহাম্মদ আলী গাজীর বাড়িতে ছুটছেন হাজার হাজার নারী পুরুষ। সপ্তাহে তিন দিন বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার বিকাল থেকে মুসলিম ও সনাতন ধর্মের সাধারণ সহজসরল প্রকৃতির মানুষের অন্ধ বিশ্বাস এখন স্বপ্নে পাওয়া গাছড়া ঔষধে। গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কোন এক রাতে স্বপ্নে দেখতে পান এবং একটি ছোট লতা গাছের পাতা বেটে রস বাহির করে খাইলে মরণব্যাধি ক্যান্সার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, এবং যে কোন একটি রোগের নাম করে এই ঔষধ সেবন করতে হবে, এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সপ্তাহে তিন দিন ৪/৫ হাজার মুসলিম ও সনাতন ধর্মের অসংখ্য নারী—পুরুষ এই স্বপ্নে পাওয়া গাছড়া ঔষধ খাইতে তাহার বাড়িতে আসেন এবং সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। এদিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে ইজিবাইক, মটর ভ্যান, মোটরসাইকেল যোগে আসা মানুষের ভিড় ঠেকাতে হিমশিম খাওয়া বাড়ির সামনে দেয়া হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক ও গ্রাম পুলিশ, এলাকার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে ছুটছেন মানুষ। যে যেভাবে পাচ্ছে সেভাবে ভিড় করছে ওই আহাম্মদ গাজীর কবিরাজের বাড়িতে। শনিবার সরেজমিনে গেলে দেখা যায় আহাম্মদ গাজীর বাড়িতে দূর—দূরান্ত থেকে বিভিন্ন সমস্যায় আসা নারী—পুরুষসহ উৎসুক মানুষের ভিড়। কৃষ্ণনগর থেকে স্বপ্নে পাওয়া গাছড়া ঔষধ সেবন করতে আসা মরিয়ম বেগম (৫৫) তিনি বলেন মানুষের মুখে মুখে শুনেছি এখান থেকে তিন দিন ওষুধ খাইলে যে কোন একটি রোগ থেকে মুক্তি পায়। এজন্য আমরাও এসেছি। একইভাবে উপজেলা মথুরেশপুর থেকে বুকের ব্যথা নিয়ে আসা লাভলী বেগম (৪৫) বলেন, আমার বাড়ির পাশে এক ভাবীর কাছে শুনে আহাম্মদ কবিরাজের বাড়িতে এসেছি। স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, জাহিদুর ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম সহ অনেকেই বলেন, আমরা এই স্বপ্নে পাওয়া গাছরা ঔষধ সেবন করে আমাদের রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি এবং আমাদের আত্মীয়—স্বজন যারা আছে তাদেরকে এ বিষয়টি বলা হয়েছে। এবং বিনা মূল্যে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিছেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ বলতাছে এই ঔষধ সেবন করে এখন ভালো আছি । বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আফসার উদ্দিন বলেন আমার জানামতে এখানে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকের কাছে শুনেছি এবং আমি নিজেই একটি রোগের কথা স্মরণ করে এই গাছড়া ঔষধ সেবন করেছিলাম এখন ইনশাল্লাহ আমি ভালো আছি। পরে কথা হয় কথিত কবিরাজ আহাম্মদ গাজীর সাথে। তিনি দাবি করেন, আমি একজন দিনমজুর। এবং আমার বাড়িতে ঝুড়ি, অটল, পাটার কাজ করি। গত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কোন এক রাতে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে দেখতে পাই এবং একটি ছোট লতা গাছের পাতা বেটে রস বের করে খাইলে মরণব্যাধি ক্যান্সার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, ওই খবর এলাকায় জানাজানি হয়ে পড়লে মানুষের মাঝে আগ্রহ বাড়ে। এভাবেই আমার এখানে মানুষ আসতে থাকে। আমি তাহাদের ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছি এবং কোন টাকা পয়সা নিচ্ছি না।